বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
![img_img-1736543470](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678506381_AD-1.jpg)
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কক্সবাজারে চলমান লক্ষ-কোটি টাকার মেঘা প্রকল্পের অধীনে হুকুম দখলকৃত জমি মালিকদের ক্ষতিপূরণের জন্যে বরাদ্দ দেয়া প্রায় হাজার-কোটি টাকা প্রদানে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এসব টাকা জমি মালিকদের প্রদানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ টাকা ভুমি হুকুম দখল অফিসের দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেড অনুযায়ী ঘুষ দিতে হয়। ঘুষ না দিলে ভূমি মালিকদেরকে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মাসের পর মাস তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করতে হয়। ভূমি মালিকরা দালাল চক্রের মাধ্যমে ঘুষ দিয়ে টাকা উত্তোলন করে থাকেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন লোক দেখানো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও বাস্তবমুখী কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় অবশেষে র্যাব-১৫ গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বুধবার অভিযান চালিয়ে এলও অফিসের এক সার্ভেয়ারসহ ঘুষের কোটি টাকা উদ্ধার করেছে। এ সময় গ্রেফতার করা হয় ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোহাম্মদ ওয়াসিমকে।
র্যাব সূত্রে জানা য়ায়, কক্সবাজার শহরের বাহারছরা বাজার ও তারাবনিয়ারছরা এলাকার দু’টি বাসায় অভিযানকালে একজনকে আটক করা গেলেও অপর দুই সার্ভেয়ার পালিয়েছে। এ সময় টাকা ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংকের একাধিক চেক ও সরকারি নথিপত্র জব্দ করেছে অভিযানকারিরা। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি, বুধবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া ও তারাবনিয়ারছড়া এলাকায় এ অভিযান চালানো হয় বলে জানান র্যাব-১৫ রামুর কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান। আটক মোহাম্মদ ওয়াসিম কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। অভিযানে পালিয়ে যাওয়া অপর দুই সার্ভেয়ার হলেন মোহাম্মদ ফরিদ ও মোহাম্মদ ফেরদৌস।
মেজর মেহেদী বলেন, কক্সবাজারে সরকারের অর্ধ শতাধিক মেগা-প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এসব উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য সরকারের ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমও চলমান। এ ভূমি অধিগ্রহণকে ঘিরে সংঘবদ্ধ একটি চক্র জমি মালিকদের নানাভাবে জিম্মি করে বড় অংকের টাকা কমিশন হিসেবে আদায়ের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এর সূত্র ধরে ভূক্তভোগী বেশ কয়েকজন জমি মালিক র্যাবসহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল গত বুধবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে ঘুষের ৯৩ লাখের বেশি টাকাসহ একজনকে আটক করা সম্ভব হলেও অন্য ২ জন পালিয়ে যায়। এ সময় বিভিন্ন ব্যাংকের অনুক‚লে বেশ কয়েকটি চেক ও নথিপত্রও উদ্ধার করা হয়।
মেহেদী বলেন, এর মধ্যে কক্সবাজার শহরের তারাবনিয়ারছড়া এলাকার একটি বাসা থেকে নগদ ১৬ লাখ টাকাসহ জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার মোহাম্মদ ওয়াসিমকে আটক করা হয়। এছাড়া বাহারছড়া বাজার এলাকায় লালু সওদাগরের বিল্ডিংয়ে সার্ভেয়ার মোহাম্মদ ফরিদের বাসা থেকে নগদ ৬০ লাখ টাকার বেশি এবং মোহাম্মদ ফেরদৌসের বাসা থেকে ১৭ লাখ টাকার বেশি উদ্ধার করা সম্ভব হলেও র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। ভুক্তভোগীদের মতে, শুধু এরা নয়, এলএ অফিসের সিংহভাগ সার্ভেয়ার, কর্মকর্তা-কর্মচারি ও অফিসাররা নানা কায়দায় জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যার একটি অংশ এলআর ফান্ডেও যায় বলে জেলার শীর্ষ কর্মকর্তাগণের কাছেও কোন প্রতিকার মিলে না। বাধ্য হয়ে দালাল ও সার্ভেয়ারের দারস্থ হতে হয় ভূমি মালিকদের। ফলে ৩০ শতাংশ থেকে ক্ষেত্র বিশেষে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন ছেড়েই দিতে হয় জমির নিরীহ মালিকদের। অনেক ক্ষেত্রে দালালদের সাথে চিহ্নিত কয়েকজন ‘সাংবাদিক’ও এসব কমিশন বাণিজ্যে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
এদিকে, মেগা-প্রকল্প চালুর পর ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ প্রমান হয়ে সাবেক ডিসি রুহুল আমিন, এডিসি জাফর আলমসহ বেশ কয়েকজন সার্ভেয়ার কারাভোগ করেছেন। নিকট অতীতেও বর্তমান ডিসিসহ বেশ কয়েকজনের নামে দূর্নীতির অভিযোগে আদালতে মামলা ফাইল করেছিলেন মহেশখালীর জনৈক ব্যক্তি। অবশ্য সন্ধ্যার দিকে আদালত তা আবার খারিজও করেন। এর অল্পদিন না যেতেই বুধবার র্যাব অভিযানে ঘুষের নগদ প্রায় কোটি টাকাসহ সার্ভেয়ার আটকের ঘটনা ঘটলো।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী জমি মালিকরা বর্তমান জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট অফিসের দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম ও দূর্নীতি তদন্তে একটি শক্তিশালী তদন্তটিম গঠন করার জন্যে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।