Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির বছর পূর্তিতে নিহতদের স্মরণ ক্ষতিপূরণের দাবিতে গণস্বাক্ষর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০৬ এএম

রাজধানীর পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টা ট্রাজেডির এক বছর পূর্তি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গতকাল সকালে ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে নিহতদের স্বজন ও স্থানীয়রা ক্ষতিপূরণের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছেন। এছাড়া যোহরের নামাজের পর ওয়াহেদ ম্যানশনে কোরআন খতম করা হয়।

এদিকে, গতকাল ঢাকা দক্ষিণ নগর ভবনে ক্ষতিগ্রস্ত ও নিহত স্বজনদের চাকরি, আর্থিক সহায়তা, পুনর্বাসন উপলক্ষে ক্ষতিগ্রস্ত নিহতদের স্বজনদের নিয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। এ সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের মাঝে চাকরির নিয়োগপত্র, দোকান বরাদ্দের কাগজ ও অর্থ প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, দুর্ঘটনার পর আমরা ৩১টি পরিবার থেকে আবেদন পেয়েছিলাম। তাদের ভেতর থেকে ২১ জনকে চাকরি দিচ্ছি। অনেকে আছেন যারা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল, তারা চাকরি করতে চাননি। এমন দুই জনকে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আর চারজনের প্রত্যেককে দুই লাখ করে টাকা দিয়েছি। এছাড়া উচ্চশিক্ষিত আরও চারজনকে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হবে।

বিগত এক বছরে কেন এ সহায়তা দেওয়া হয়নি ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সিটি করপোরেশন কেন উদাসীন ছিল স্থানীয়দের এমন অভিযোগের কারণ সম্পর্কে সাঈদ খোকন বলেন, আপনারা জানেন, আমি চাইলেই একজনকে সরকারি চাকরি দিতে পারি না। যদিও সবাইকেই সিটি করপোরেশনে চাকরি দেওয়া হয়েছে। তবে এ চাকরি দিতেও আমাকে অনেক জায়গা থেকে অনুমতি নিতে হয়েছে। আর অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর আমাদের অভিযান ও মনিটরিং শেষে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েই আমরা সেখান থেকে এসেছি। এরপরেও যারা আমাদের কাছে সাহায্যের জন্য এসেছেন, আমরা আমাদের সাধ্যমতো করেছি। আগামীতেও কেউ এলে করবো।

অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ ইমদাদুল হক, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, গতকাল সকালে ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে ক্ষতিপূরণের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করা হয়। এছাড়াও অগ্নিকন্ডেে নিহতের আত্মীয়, স্বজন ও পরিবারের সদস্যরা এসেও সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় তারাও গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে অংশ নেন এবং ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিকের বিচারও দাবি করেন অনেকেই।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এক বছর হয়ে গেলেও তারা কোনো ধরনের সরকারি ও বেসরকারি সাহায্য এখনো পাননি। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর অনুদানের ৩০ কোটি টাকাও তারা পাননি। নিহত জুম্মানের ছেলে রাশেদ হাসান, নিহত আব্দুর রহিমের ছোট ভাই এছাহাক আলী, নিহত সিদ্দিক উল্লাহর ছেলে আহসান উল্লাহসহ স্বজন হারানো অনেকেই গণস্বাক্ষরে কর্মসূচিতে স্বাক্ষর করেন।

উল্লেখ্য, গত বছর ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর চকবাজারে চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানসনের অবৈধ কেমিক্যাল গোডাউন আগুনের সূত্রপাত হয়। এ ঘটনায় চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াহেদ ম্যানসনের মালিক মো. হাসান ও সোহেলকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর গত বছর ১৬ এপ্রিল দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত ওই মামলার চার্জশীট দাখিল করতে পারেনি পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কবীর হোসেন জানান, ৬৭ জনের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন গত বুধবার রাতে তিনি পেয়েছেন। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন না পাওয়াতে মামলার চার্জশীট দিতে দেরি হয়েছে। তবে এখন দ্রুত সময়ের মধ্যে চার্জশীট জমা দেওয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ