বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য মহান একুশে ফেব্রæয়ারিকে সামনে রেখে পাঁচ গুণীজনকে বিশ্ব বাঙালি পুরস্কার-২০১৯ দিয়েছে বিশ্ব বাঙালি সংঘ। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, ভারতের অধ্যাপক সুভাষ চন্দ্র মুখোপাধ্যায়, অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য ও কবি পার্থ বসু।
গতকাল বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ব বাঙালি সংঘের সমন্বয়ক মজিব মহম্মদ। পুরস্কারপ্রাপ্তদের পরিচিতি তুলে ধরেন সালমা বাণী।
দীর্ঘদিন নতুন প্রজন্মকে মুক্তচিন্তা এবং জ্ঞানচর্চায় উদ্বুদ্ধ করে জাতি গঠনে বিশেষ অবদান রাখায় অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীকে এই পদকের জন্য মনোনীত করা হয়। পুরস্কার গ্রহণ করে তিনি বলেন, জীবনে অনেক পুরস্কার পেয়েছি। প্রতিটি পুরস্কারই স্বতন্ত্র। প্রাপককে তা আনন্দিত করে। উৎসাহিত করে। আজকে বাঙালি কাকে বলে এবং বাঙালির কী অবস্থায় আছে এ দুটো বিষয় প্রাসঙ্গিক। যে বাংলা ভাষা ব্যবহার করে, তাকে বাঙালি বলব। কিন্তু অবাঙালিরা বাংলা ভাষা ব্যবহার করতে পারে, সেজন্য অতিরিক্ত গুণটা দরকার, কেবল বাংলা ভাষার ব্যবহার না, বাংলা ভাষার উৎকর্ষের জন্য সচেষ্ট হওয়া এবং বাঙালি যেন উন্নত হতে পারে, এর জন্য কাজ করা। কেবল ভালোবাসাই নয়, যেন অগ্রগতি হয়, তার জন্য চেষ্টা করা। তিনি বলেন, বিশ্বে ৩০ কোটি বাঙালি আছে। কিন্তু ভালো অবস্থানে নেই। আমরা জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করলাম। কিন্তু যেটা হওয়ার কথা ছিল, শিক্ষাব্যবস্থা অভিন্ন ধারায় মাতৃভাষার মাধ্যমে হবে, সেটা হয়নি। তিন ধারার শিক্ষাব্যবস্থা হয়েছে। এটি শ্রেণি বিভাজনের ওপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
ভারতের বিহারের মানভূম ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখায় ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সুভাষ চন্দ্র মুখোপাধ্যায়কে এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়। পুরস্কার গ্রহণ করে তিনি বলেন, আপনারা বাংলা ভাষার মালা পড়েছেন। আমরা আন্দোলন করেছিলাম। কিন্তু পুরোপুরি সফল হইনি। ব্রিটিশ পিরিয়ডে আমরা অনেক কবির কবিতা পড়েছি। যেমন বন্দে আলী মিয়া। কিন্তু বর্তমানে তারা হারিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের সংস্কৃতির বিনিময় করতে হবে। না হয় বাংলা ভাষা অন্ধকারে থেকে যাবে।
পুরস্কার গ্রহণ করে তিনি বলেন, দেশভাগের পর আমরা একটা জাতিকে পেলাম খুব নিঃস্ব অবস্থায়, দুঃখী হিসেবে।
শিক্ষা, অর্থ, বিত্ত কিছ্ইু ছিল না। তখন আমার কাছে প্রয়োজন মনে হলো জাতির চেতনাকে বড় করতে হবে। বাংলা পক্ষের মাধ্যমে সাম্প্রতিককালে পশ্চিমবঙ্গে ভাষা-সংস্কৃতি রক্ষার আন্দোলনে বিশেষ অবদান রাখায় পুরস্কার পান কবি পার্থ বসু। বিশ্ব বাঙালি সংঘের সংঘাচার্য রাজু আহমেদ মামুন বলেন, বর্তমান সভ্যতা এক ঘোর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। মানুষের হাতে এসেছে আত্মা ধ্বংসের ভয়াবহ অস্ত্র।
নতুন নতুন প্রযুক্তির মধ্য দিয়ে বেড়ে যাচ্ছে মূল্যবোধহীন দিশেহারা প্রজন্ম। আছে ক্ষুধা-বৈষম্য-কুসংস্কার-অশিক্ষা আর জঙ্গিবাদ। আছে- মানুষ ক্রয় বিক্রয়ের নৈতিকতাহীন পুঁজিবাদী করপোরেট চালাকিও। বিপন্ন আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির সেই উচ্চারণ- সবার উপরে মানুষ সত্য। পুরস্কার দেওয়ার পর ‘বর্তমান বিশ্বের বাঙালি: সংকট ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কবি শামীম রেজা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।