পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ওড়না ও বোরকা পরা ছাত্রীদের কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বনশ্রী শাখার ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক রুবিনা সুলতানা। যেসকল ছাত্রী বড় ওড়না ও বোরকা পরে ক্লাসে যাচ্ছেন তাদেরকেই নানাভাবে হেনস্থা ও মানসিক নির্যাতন করছেন ওই শিক্ষক। বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকরা প্রতিবাদ জানালেও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের দোহায় এবং শিক্ষার্থীকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করার ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছেন রুবিনা। গত মঙ্গলবার ক্লাসে ওড়না পরে যাওয়া ছাত্রীদের ওড়না খুলে রেখে দেয়ার পর গতকাল বুধবার আবারও একই ধরনের কাজ করেছেন তিনি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বনশ্রী শাখায় ৮ম শ্রেণিতে যেসব ছাত্রী ওড়না পরে গিয়েছিলেন ক্লাস শুরুর আগে তাদের ওড়না খুলতে বাধ্য করেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক রুবিনা সুলতানা। বোরকা পরে যাওয়া তিন ছাত্রীকে বোরকা পরে না আসার জন্য কড়া সতর্ক বার্তাও দেন ওই শিক্ষক। বিষয়টি নিয়ে দৈনিক ইনকিলাবে সংবাদ প্রকাশের পর অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। কিন্তু শিক্ষক রুবিনা সুলতানার অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি। তিনি গতকাল বুধবারও ৮ম শ্রেণির ছাত্রীদের ওড়না খুলে ক্লাসে প্রবেশ করতে বাধ্য করেন।
৮ম শ্রেণির এক ছাত্রী অভিযোগ করেন, স্কুলের ঐচ্ছিক পোশাক বড় ওড়না পরে যেসব ছাত্রী স্কুলে গিয়েছিল তাদেরকে ওড়না খুলে তারপর ক্লাসে প্রবেশ করতে বলেন রুবিনা সুলতানা। ওই ছাত্রী বলেন, যারা ওড়না খুলতে রাজি হননি তাদেরকে তিনি ক্লাসে প্রবেশ করতে দেবেন না বলেও সতর্ক করে দেন। একইভাবে ওই ক্লাসে তিনজন ছাত্রী যারা বোরকা পরে আসেন তাদেরকেও বোরকা খুলে তারপর ক্লাস করতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়।
আরেক ছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, রুবিনা সুলতানা ম্যাডাম সকলকে হুমকি দেন তিনি যে নির্দেশনা দিবেন তা মেনে চলতে হবে। অন্যত্থায় কেউ স্কুলে পড়াশোনা করতে পারবেন না। বাধ্য হয়ে ছাত্রীরা ওড়না ও বোরকা খুলে ক্লাসে প্রবেশ করে। নিত্যদিনই ওই শিক্ষকের এধরনের অত্যাচারের কারণে ছাত্রীরা মানসিকভাবে ভেঙে পরছেন বলেও জানান ওই ছাত্রী।
যদিও শিক্ষা আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, যে সকল আচার-আচরণ ও কথা-বার্তায় শিক্ষার্থীর মানসিক যন্ত্রণার উদ্রেক হয়, তাদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়, সে অসম্মান বা অপমান বোধ করে এবং শিক্ষায় তাদের স্বতঃস্ফূর্ততা বিনষ্ট হবে সেসব কাজই মানসিক নির্যাতন হিসেবে গণ্য হবে।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ড্রেস কোড নিয়ে বিতর্কের পর পরিবর্তন আনা হয়েছে। পরিবর্তিত মূল ড্রেস কোডে রয়েছে সালোয়ার, কামিজ, ক্রস বেল্ট ওড়না ও জুতা। ছেলেদের জন্য টুপি, মেয়েদের জন্য স্কার্ফ ও অতিরিক্ত হিসেবে বড় ওড়না এতোদিন বাধ্যতামূলক ছিল। নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে এগুলোকে ঐচ্ছিক করা হয়েছে মাধ্যমিক শাখার জন্য। তবে কলেজ শাখার ড্রেস কোড আগের মতোই রয়েছে। ঐচ্ছিক অর্থ হচ্ছে- ছাত্ররা চাইলে টুপি পরতে পারবে, ইচ্ছে না হলে পরবে না। একইভাবে ছাত্রীরা স্কার্ফ ও ওড়নাও ইচ্ছে অনুযায়ী পরতে পারবেন। কিন্তু ঐচ্ছিক ঘোষণার পরও বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ছাত্রীদের ওড়না ও বোরকা পরতে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্কুলের শিক্ষার্থী অভিভাবকরা। তারা বলেন, যারাই বড় ওড়না পরে স্কুলে যাচ্ছেন তাদের ওড়না খুলে রাখা হচ্ছে এবং বোরকা পরে আসলে স্কুলে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীর অভিভাবক প্রশ্ন রেখে বলেন, রুবিনা সুলতানা ওড়না ও বোরকা নিষিদ্ধ করে ছাত্রীদের কি পোশাক পরাতে চান। তিনি কি চান না আমাদের মেয়েরা শালিন পোশাক পরুক। মেয়েদের ওড়না-বোরকা নিয়ে তার এতো এলার্জি কেন? তিনি তার নিজের মেয়ে, বোনদের কি পোশাক পরান তাও জানতে চান ওই অভিভাবক।
এ বিষয়ে রুবিনা সুলতানা বলেন, ছাত্রীরা ক্লাসে ওড়না ও বোরকা পরে আসতে পারবে না। বাইরে থেকে তারা পরে আসতে পারে। তবে ক্লাসে প্রবেশের আগে খুলে ফেলতে হবে। আর বড় ওড়না পরলে তা মাথা ও গলা পর্যন্ত হিজাব হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। গলার নিচে কোনোভাবেই তা ঝুলানো যাবে না।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল শাহান আরা বেগম বলেন, যারা স্কুলে ওড়না পরে আসে তারা কয়জনে বাইরে পর্দা করে। আমরা তো অপশন রেখেছি, কেউ পরে আসতে পারে কিন্তু ক্লাসে পরতে পারবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।