পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ড্রেস কোড নিয়ে বিতর্কের পর পরিবর্তন আনা হয়েছে। পরিবর্তিত মূল ড্রেস কোডে রয়েছে সালোয়ার, কামিজ, ক্রস বেল্ট ওড়না ও জুতা। ছেলেদের জন্য টুপি, মেয়েদের জন্য স্কার্ফ ও অতিরিক্ত হিসেবে বড় ওড়না এতোদিন বাধ্যতামূলক ছিল। নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে এগুলোকে ঐচ্ছিক করা হয়েছে মাধ্যমিক শাখার জন্য। তবে কলেজ শাখার ড্রেস কোড আগের মতোই রয়েছে। ঐচ্ছিক অর্থ হচ্ছে- ছাত্ররা চাইলে টুপি পরতে পারবে, ইচ্ছে না হলে পরবে না। একইভাবে ছাত্রীরা স্কার্ফ ও ওড়নাও ইচ্ছে অনুযায়ী পরতে পারবেন। কিন্তু ঐচ্ছিক ঘোষণার পরও বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ছাত্রীদের ওড়না ও বোরকা পরতে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্কুলের শিক্ষার্থী অভিভাবকরা। তারা বলেন, যারাই বড় ওড়না পরে স্কুলে যাচ্ছেন তাদের ওড়না খুলে রাখা হচ্ছে এবং বোরকা পরে আসলে স্কুলে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৮ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, গতকাল মঙ্গলবার যারাই বড় ওড়না (ঐচ্ছিক পোষাক) পরে ক্লাসে গিয়েছিলেন তাদের সকলের ওড়না খুলে রেখে দেন ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক রুবিনা সুলতানা। ওই শিক্ষার্থী বলেন, একজন নারী শিক্ষক হয়েও তিনি ছাত্রীদের বলেন, ওড়না যারা পরে থাকবে তাদের ক্লাস করতে দেয়া হবে না। ক্লাস করতে চাইলে ওড়না খুলে রাখতে হবে। এরপর তিনি ছাত্রীদের ওড়না খুলে নিয়ে টেবিলে রেখে দেন। একইসাথে যে তিনজন ছাত্রী বোরকা পরে এসেছিলেন তাদেরকে রুবিনা সুলতানা পরবর্তীতে বোরকা পড়ে না আসার জন্য নির্দেশ দেন। বোরকা পরে আসলে স্কুলে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলেও সতর্ক করে দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৮ম শ্রেণির আরেক ছাত্রী বলেন, ওড়না পরার ক্ষেত্রে শিক্ষকরা বলছেন, ‘ওড়না পরতে পারবে তবে তা গলা ও মাথার মধ্যে পেঁচিয়ে রাখতে হবে। কোনভাবেই বুক বা পিঠে রাখা যাবে না। যারা এমনভাবে ওড়না পরবে তাদেরকে ক্লাস থেকে বের করে দেয়ারও হুমকী দেখা হচ্ছে বলে ওই ছাত্রী অভিযোগ করেন।
আরেক শিক্ষার্থীর অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একধরণের পোষাক পরে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করে আসছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই সেই পোষাক পরিবর্তন আনার কি প্রয়োজন হলো? পরিবর্তনের পর ওড়নাকে ঐচ্ছিক করা হয়েছে। ঐচ্ছিক মানে কি? প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, যার ইচ্ছে হবে সে পরবে, ইচ্ছে হবে না পরবে না। কিন্তু এই ঐচ্ছিক পোষাকে বাধ্যবাধকতা কেন? ওড়নার কারণে ছাত্রীদের ওপর শিক্ষকরা মানসিক চাপ দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে বনশ্রী শাখা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি শিক্ষক রুবিনা সুলতানা বলেন, ড্রেস কোডের মধ্যে ওড়না নেই। ঐচ্ছিকও করা হয়নি। চাইলে কেউ হিজাব করে মাথা ও গলা ঢাকতে পারবে। কিন্তু অবশ্যই কাধের নিচে স্কুলোর মনোগ্রাম দেখা যেতে হবে। ক্রস বল্টে দিয়ে অনেক ছাত্রীর বুক ঢাকতে সমস্যা হয় এজন্য বড় ওড়না ব্যবহার করতে পারবে কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমাদের করার কিছু নেই। চেয়ারম্যান যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন আমরা সেভাবেই করেছি। ছাত্রীদের ওড়না খুলে নিতে বাধ্য হয়েছি। বোরকার বিষয়ে রুবিনা বলেন, ছাত্রীরা চাইলে স্কুলে বোরকা পরে আসতে পারবে তবে ক্লাস করতে হবে বোরকা খুলে।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল শাহান আরা বেগম বলেন, ওড়না নিষিদ্ধ করা হয়নি, ঐচ্ছিক করা হয়েছে। যারা পরতে চায় তারা মাথায় হিজাবের মতো করে পরতে পারবে। তবে কোনভাবেই যেনো দুই দিকে ঝুঁলে না থাকে। বনশ্রী শাখায় ওড়না খুলে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি জানেন না। শিক্ষকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কিভাবে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারবেন। তবে কেউ কেউ এই বিষয়টিকে এবং পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করার জন্য অতিউৎসাহী হয়ে কাজ করছেন বলেও মন্তব্য করেন শাহান আরা বেগম।
প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সদস্য (শিক্ষক প্রতিনিধি) মাকসুদা আক্তার মালা বলেন, সারাদেশের স্কুল ড্রেসে ‘ক্রস বেল্ড ওড়না’ থাকে ৪ ইঞ্চি। আমাদেরও আগে ৪ ইঞ্চি ছিলো, পরিবর্তিত ড্রেস কোডে করা হয়েছে ৬ ইঞ্চি। ফ্রগ বদলে কামিজ করা হয়েছে। স্কুল ড্রেসে প্রচলিত কামিজের ঘের থাকে ২৪ ইঞ্চি, সেটি বাড়িয়ে ২৬ থেকে ২৮ ইঞ্চি করা হয়েছে। এছাড়া ছেলেদের টুপি, মেয়েদের স্কার্ফ, হিজাব ও অতিরিক্ত বড় ওড়নাটি ঐচ্ছিক করা হয়েছে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।