পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর এবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন আয়োজন করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আজ রোববার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৈঠক শেষে তফসিল ঘোষণা হতে পারে। মার্চের শেষ দিকে হতে পারে নির্বাচন। ২৯ বা ৩০ মার্চ চট্টগ্রাম সিটিতে ভোট হতে পারে ইসি সূত্রে জানা গেছে।
গতকাল শনিবার ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. ইসরাইল হোসেন ইনকিলাবকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, রোববার বিকেল তিনটায় নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে ৬১ তম কমিশন বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ইসি সচিব মো. আলমগীর ইনকিলাবকে বলেছেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভোট ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে সম্পন্ন করা হবে। বৈঠকের আলোচ্য সূচিতে চট্টগ্রাম সিটি ভোট ও বগুড়া-১ এবং যশোর-৬ আসনের উপ-নির্বাচনকে রাখা হয়েছে। ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করেছিল ইসি। এ সিটির মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের ৫ আগস্ট। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, ৫ আগস্টের পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গত ১৮ জানয়ারি বগুড়া-১ আসন আর যশোর-৬ আসনটি ২১ জানুয়ারি শূন্য ঘোষণা হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী, আসন শ্যূন্য হওয়ার পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বগুড়া-১ আসনে ১৬ এপ্রিল আর যশোর-৬ আসনে ১৯ এপ্রিলের মধ্যে ভোটগ্রহণ করতে হবে।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল সর্বশেষ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী সাবেক মেয়র এম মনজুর আলমকে হারিয়ে নির্বাচিত হন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও ৪১ ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা দায়িত্ব নিয়ে প্রথম সভা করেছেন ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট। স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইনে বলা আছে, নির্বাচিত পরিষদের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম সভার পাঁচ বছর মেয়াদ পূরণের দিন থেকে ১৮০ দিন আগে পর্যন্ত যে কোনও দিন নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। সে হিসেবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন হতে হবে ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে।
জুন মাসে বর্ষাকাল, বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতায় চট্টগ্রামের বাকলিয়া, চকবাজার, শুলকবহর, বাদুরতলা, মুরাদপুরসহ নিন্মাঞ্চলগুলো ডুবে যায়। ২০১০ সালে চসিক নির্বাচনের সময় জলাবদ্ধতার কারণে পানিবন্দী হয়ে পড়েছিল অনেক এলাকা। কোমরসম পানি ডিঙ্গিয়ে অনেক ভোটারকে ভোট কেন্দ্রে যেতে হয়েছিল। জলাবদ্ধতার কারণে ওই নির্বাচনে জনপ্রিয় মেয়র এবিএম মহিউদ্দিনকে পরাজয় বরণ করতে হয়েছিল বলে ধারণা তার অনুসারীদের। জলাবদ্ধতার অভিজ্ঞতাকে স্মরণে রেখে বৃষ্টির মৌসুম শুরুর আগেই ভোট কার্য শেষ করতে যায় নির্বাচন কমিশন। এপ্রিলের প্রথম দিন থেকে শুরু হতে যাচ্ছে এইচ. এস. সি পরীক্ষা। পরীক্ষার জন্য এক মাস কোন ধরণের নির্বাচনী আয়োজন হবে না। এ হিসেবে মার্চের মধ্যেই নির্বাচন শেষ করতে চায় নির্বাচন কমিশন। ৩০ মার্চই অনুষ্ঠিত হতে পারে চসিক নির্বাচন।
সর্বশেষ চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল মঙ্গলবার। ভোটে অনিয়মের অভিযোগে দুপুরেই ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তৎকালীন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম মনজুর আলম। রাতে নির্বাচনী ফলাফলে দেখা যায়, হাতি প্রতীক নিয়ে আবু জাহেদ মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন যিনি আ জ ম নাছির উদ্দিন নামেই বেশি পরিচিত তিনি পেয়েছিলেন ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৩৬১ ভোট। কমলা লেবু প্রতীক নিয়ে এম মনজুর আলম পান ৩ লাখ ৪ হাজার ৮৩৭ ভোট। সেবার অন্য প্রতীকে ভোট হলেও নতুন নিয়মে দলীয় প্রতীক নিয়ে এবার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। নৌকার মাঝি কে হবেন তা নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা। নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন হবে সম্পূর্ণভাবে ইলেকট্রোনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে। ইভিএম পদ্ধতিতে প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। আপত্তি থাকলেও আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি। চট্টগ্রামেও নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে ধানের শীষ প্রতীকে দেখা যেতে পারে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনকে।
১৯৯০ সালের ৩১ জুলাই চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের নাম পরিবর্তিত করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নামকরণ করা হয়। মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী মেয়র হিসেবে দায়িত্ব দেন এরশাদ সরকার। পরবর্তীতে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে মেয়রের দায়িত্ব দেয়া হয় মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনকে। ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মত চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
চসিকের প্রথম নির্বাচিত মেয়র হলেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী। তিনি ১৯৯৪ সালের ১১ মার্চ থেকে ২০১০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি টানা ১৭ বছর মেয়র পদে ছিলেন। ২০১০ সালের নির্বাচনে এক সময়ের শিষ্য মনজুর আলমের কাছে পরাজিত হন। ২০১৫ সালের সিটি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী আ জ ম নাছিরের কাছে পরাজিত হন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মনজুর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।