রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
দিনাজপুরের আত্রাই নদীর বালু নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে দ্বন্ধ এখন চরমে। ব্যবসায়ীদের একটি পক্ষ জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে বালু মহাল থেকে বালু বিক্রি করছে। অপর একটি পক্ষ ড্রেজিং করা বালু বিআইডব্লিউই’র কাছ থেকে ক্রয় করে বিক্রি করছে। ইজারাদারদের অভিযোগ সমগ্র দেশের বালু মহালগুলো সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা প্রশাসন টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকে। লাখ থেকে কোটি টাকায় ১ বছরের চুক্তিতে ক্রয় করা বালু মহাল থেকে নির্দিষ্ট মাশুলে বালু বিক্রি করা হয়। অপরদিকে ড্রেজিং করে পাওয়া বিপুল পরিমাণ বালু অত্যন্ত কম দামে ক্রয় করে তা সরকারি বালু মহালের চেয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে বালু মহালের ইজারাদার। ইজারাদাতারা বলছে নিয়ম মোতাবেক বালুর মালিক স্থানীয় প্রশাসন। আর ড্রেজিংয়ের বালু ক্রয়কারী ব্যবসায়ী বলছে তারা বিআইডব্লিই’র কাছ থেকে বালু ক্রয় করে বৈধভাবে বিক্রি করছে। জানা যায়, মোহনপুর রাবার ড্যাম থেকে ভুসিরবন্দর পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশের নাব্যতার উন্নয়নে কাটার সেকশন ড্রেজার দ্বারা ড্রেজিং কাজ চলছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে ড্রেজিংকৃত মাটি বিক্রয়ের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ)। এই কাজটি পায় শহরের গণেশতলা এলাকার মোসাদ্দেকুল ইসলাম। তবে এই কাজটি পাওয়ার পর থেকেই প্রতি ট্রলি বালু বাজারমূল্য থেকে অনেক কম মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। যাতে করে ইজারাদারদের বালু বিক্রি হচ্ছে না। এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে গত ১৪ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছেন আলতাফ হোসেন নামে এক বালু ইজারাদার। ইজারাদার আলতাফ হোসেন বলেন, পাঁচবাড়ী ব্রিজের কাছে আত্রাই নদীর খননকৃত বালু অবৈধভাবে কে বা কারা বিক্রি করায় আমার বালু বিক্রি হচ্ছে না। যাতে করে আমি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এখন প্রশাসনের নিকট আকুল আবেদন যেভাবে হোক এই বালু বিক্রি বন্ধ করা হোক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পাঁচবাড়ী ব্রিজ সংলগ্ন দক্ষিণ পার্শ্বের এলাকায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের ড্রেজিংয়ের কাজ চলছে। আর তার কিছুটা উত্তরপার্শ্বে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে উত্তোলনকৃত বালু ট্রলিতে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব বালু বিক্রি করছেন মোসাদ্দেকুল ইসলাম নামের এক ইজারাদার। তিনি প্রতি ট্রলি ২৫০ থেকে ৩শ’ টাকা দরে এসব বালু বিক্রি করছেন। ইজারা নিয়ে বালু বিক্রি করার পাশাপাশি নদীর ধারের বাঁধের বালু পর্যন্ত কেটে বিক্রি করছেন তারা।
সেখানে দায়িত্বরত ইজারাজার মোসাদ্দেকুল ইসলামের ভাতিজা পরিচয় দিয়ে হামিদুর রহমান বলেন, নদী খননের এই কাজটি করছে বিআইডব্লিউটিএ। আর সরকারি কোষাগারে পে-অর্ডারের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়ে নদী থেকে উত্তোলনকৃত বালু বিক্রির অনুমতি পেয়েছি। সে হিসেবে এই বালু বিক্রি হচ্ছে। এসব বালু ২৫০ টাকা থেকে ৩শ’ টাকা ট্রলি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।তবে কত টাকা কোষাগারে জমা দিয়েছেন এটি জানাননি তিনি। ইজারাদারের আরেক ভাতিজা রমজান আলী বলেন, সরকারিভাবে নদী খননের যে বালু উঠেছে সেগুলো বিক্রির জন্য সরকারি রাজস্ব জমা দিয়ে আমরা কাজটি পেয়েছি। এই বালু সরকারি রাস্তার কাজ বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে ২৫০ থেকে ৩শ’ টাকা ট্রলি দরে।বাজারমূল্য থেকে কম দরে বিক্রি করা হচ্ছে এমনটি জানার পর ৩শ’ টাকা দরে বালু বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে এখানে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না বলে দাবি তাদের।
এ ব্যাপারে দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবু সালেহ মো. মাহফুজুল আলম বলেন, খননের মাধ্যমে যেসব বালু উঠছে সরকারি সংস্থা হলে বিনামূল্যে এবং ব্যক্তিগত হলে অর্থের বিনিময়ে এসব বালু দেয়ার নিয়ম রয়েছে। উত্তোলনকৃত বালু ক্রয়ের জন্য যারা আমাদের কাছে আবেদন করেছে সেই আবেদন বিআইডব্লিউটিএ-তে পাঠিয়েছি। ইজাদারররা বিআইডব্লিউটিএ থেকে অনুমতি নিয়ে রাষ্ট্রিয় কোষাগারে অর্থ জমা দিয়ে বালু ক্রয় করে পরে তা বিক্রি করছেন। এসব ব্যাপারে আমরা সুপারিশ কিংবা সিদ্ধান্তও দেই না। আমাদের কাছে ইজারাদার একটি অভিযোগ দিয়েছেন যেটি বিআইডব্লিউটিএ-তে পাঠানো হয়েছে। বাঁধ কেটে বিক্রি করার ব্যাপারে তিনি বলেন, কোথায় বালু উত্তোলন করা হয়েছে সেটিও আমরা দেখিনি। এটা আমাদের মধ্যে না, তারা নীতিমালা অনুযায়ী বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন। এখানে আমাদের সংশ্লিষ্টতা খুবই কম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।