Inqilab Logo

রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে ভারতে স্বর্ণ পাচারকারীদের তৎপরতা

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

কোলকাতা নিকটবর্তী ও যাতায়াত সুবিধা হওয়ায় দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তপথে ভারতে স্বর্ণ পাচার বাড়ছে। অসংখ্য ঘটনা প্রমাণ দিচ্ছে সাম্প্রতিককালে স্বর্ণ পাচারকারিদের ব্যাপক তৎপরতা চলছে অতিমাত্রায়। বিজিবিও গোটা সীমান্তে গোয়েন্দা তৎপরতাসহ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে। আটক করছে কোটি কোটি টাকার স্বর্ণ। বিজিবি অভিযানে আটক হওয়ার পরও স্বর্ণ পাচার তৎপরতা থামছে না।

সর্বশেষ ভারতে পাচারের প্রাক্কালে ৮ ফেব্রুয়ারি বেনাপোল বড়আঁচড়া সীমান্ত এলাকার ভাংগার মোড় থেকে ৩০টি স্বর্ণবারসহ দুই চোরাকারবারিকে আটক করে যশোর ৪৯ বিজিবি। ৫ ফেব্রুয়ারি সাদিপুর সীমান্তে ১০টি স্বর্ণবারসহ এক পাচারকারি আটক হয়। একইভাবে ৩১ জানুয়ারি সাতক্ষীরার ভোমরার ল²ীদাঁড়ি সীমান্ত থেকে দুই কেজি ৩৫০ গ্রাম স্বর্ণ আটক করে বিজিবি। ৩০ জানুয়ারি সাতক্ষীরার কলারোয়া সীমান্তে ছয়টি স্বর্ণবার উদ্ধার করে বিজিবি। ২৭ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার শিংনগর থেকে এক কেজি ২১০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণের গহনা উদ্ধার করে ঝিনাইদহের মহেশপুর ৫৮ বিজিবি। ৪ ফেব্রুয়ারি বিজিবি টহলদল চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগরে একটি যাত্রীবাহী বাস তল্লাশি করে ভারতীয় মাদক ও স্বর্ণ চোরাকারবারি সুমন সরকারকে আটক করে। তার বাড়ি ভারতের নদীয়া জেলায়। এভাবে একের পর এক ঘটনা প্রমাণ করে ভারতে স্বর্ণ পাচারকারিদের তৎপরতা বেড়েই চলেছে।
যশোর ৪৯ বিজিবি কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল মো. সেলিম রেজা জানান, কোলকাতা নিকটবর্তী হওয়ায় স্বর্ণ পাচারকারিরা তৎপরতা চালাচ্ছে ঠিকই তবে বিজিবি সদস্যদের হাতে আটকও হচ্ছে। হুন্ডি, মাদক, চোরাচালান ও স্বর্ণ আটকের ব্যাপারে বিজিবি সীমান্তে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে সফল হচ্ছে। আটক হচ্ছে স্বর্ণ ও পাচারকারি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত দুই বছরে শুধু যশোর সীমান্তপথে ভারতে স্বর্ণ পাচারের সময় প্রায় দেড়শ’ কেজি স্বর্ণ আটক করে বিজিবি, পুলিশ ও শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। এ সময়ে ৩৯ জন স্বর্ণ পাচারকারিকে আটক করা হয়।

সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক একটি শক্তিশালী পাচারকারি সিন্ডিকেট এসব স্বর্ণপাচার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এক সময় যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত বিশেষ করে বেনাপোল স্বর্ণ পাচারের প্রধান রুট হিসেবে চিহ্নিত ছিল। মাঝে প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৭ সাল থেকে রুটটি আবার চালু হয়। প্রতিনিয়ত ভারতে স্বর্ণ পাচার হওয়ায় বেনাপোলের সাদীপুর সীমান্তলাগোয়া গ্রাম ‘সোনাপুর’ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে। সূত্রটি জানায়, বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট এলাকায় ভারতের সাথে বাংলাদেশের ৭০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। যাত্রীবেশেও স্বর্ণ পাচার করে পাচারকারিরা। সম্প্রতি যশোর ৪৯ বিজিবি সদস্যরা যশোর-বেনাপোল সড়কের নতুনহাট ইটভাটার সামনে থেকে স্বর্ণ পাচারের বড় চালান আটক করে। বিজিবি জানায়, ওই অভিযানে উদ্ধার হয় প্রায় ১১ কেজি স্বর্ণের বার ও প্রাইভেট কার। আটক হয় ৩ পাচারকারি। সূত্র জানায়, বেনাপোল সীমান্তমুখী একটি প্রাইভেট কারে (ঢাকা মেট্রো গ-৪৩-৪২২৯) বিশেষভাবে লুকিয়ে রাখা ৯৪ পিস স্বর্ণবার উদ্ধার করে বিজিবি। প্রাইভেট কারের মালিক বেনাপোলের পুটখালী গ্রামের ইমান আলী।

একইভাবে চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা ও ঝিনাইদহসহ দক্ষিণ-পশ্চিমের বিভিন্ন সীমান্তপথে নানা কায়দায় ভারতে স্বর্ণ পাচারের তৎপরতায় লিপ্ত পাচারকারিরা। এপার-ওপারের সংঘবদ্ধ চক্র স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সীমান্ত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ