পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কমিউনিটি সেন্টারের বাস, গ্যারেজের ভাঙ্গাগাড়ি, নির্মাণ সামগ্রী, রিকশা, অটোরিকশার অঘোষিত স্ট্যান্ড, সার্ভিস লেন, আন্ডারপাসে হকারের পসরা। চালু হতেই এভাবে বেদখল হয়ে গেছে বহুল প্রত্যাশিত চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাট-কর্ণফুলী সেতু সংযোগ সড়ক। ২৭০ কোটি টাকায় নির্মিত এই অঞ্চলের প্রথম ছয় লেনের সড়ক এটি। গেল ডিসেম্বরে সড়কটি উম্মুক্ত করে দেওয়া হলেও বিশৃঙ্খলায় মিলছে না সুফল।
জটে আটকা পড়ছে যানবাহন। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। কক্সবাজার, বান্দরবানমুখী দেশি-বিদেশি পর্যটকদেরও বিড়ম্বনার শেষ নেই। দক্ষিণ চট্টগ্রাম ছাড়াও কক্সবাজারের মহেশখালী, মাতারবাড়িতে বেশ কয়েকটি মেগাপ্রকল্পের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। কক্সবাজারে ফ্লাইট সংখ্যা সীমিত হওয়ায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও সড়ক পথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বিশৃঙ্খল সড়কে তাদেরও নাকাল হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
২০১০ সালে কর্ণফুলী সেতু চালুর নয় বছর পর চালু হয় আট কিলোমিটার দীর্ঘ এ সংযোগ সড়ক। কুয়েত ফান্ডের আর্থিক সহযোগিতায় নির্মিত সড়কের বহদ্দারহাট থেকে সেতুর উত্তরপ্রান্ত পর্যন্ত ছয় লেন এবং সেতুর দক্ষিণপ্রান্ত থেকে শিকলবাহা ক্রসিং পর্যন্ত চার লেন। নগরীর রাহাত্তার পুল ও কালামিয়া বাজার এলাকায় মূল মহানগরীর সাথে বৃহত্তর বাকলিয়ার সড়ক যোগাযোগের জন্য রয়েছে দুটি আন্ডারপাস। দুপাশের দুটি সার্ভিস লেইন হয়ে সিটি সার্ভিসসহ ছোট যানবাহন চলাচল করে। আর চার লেনে চলাচল করছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও বান্দরবানসহ দূরপাল্লার যানবাহন।
ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য এলাকার সাথে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকতসহ কক্সবাজার, বান্দরবান ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের যোগাযোগ নিশ্চিত করতেই সড়কটি নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। তবে সড়কে বিশৃঙ্খলা আর দখলের কারণে সুফল মিলছে না পুরোপুরি। এলাকা ঘুরে যানবাহন চালক ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, দখলের কারণে বিশেষ করে আন্ডারপাসে বিশৃঙ্খলায় সড়কের দুপাশে এবং শাখা সড়কগুলোতে নিত্য যানজট আর জটলা লেগেই আছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কটির মাধ্যমে মূল মহানগরী থেকে বৃহত্তর বাকলিয়াকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। মূল শহরে আসা-যাওয়ার জন্য মাত্র দুটি আন্ডারপাস, আর তাও বিশৃঙ্খলায় অচল। আন্ডারপাসমুখী সড়কগুলোতে তীব্র যানজট সেইসাথে জনদুর্ভোগ বাড়ছে। বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার থেকে নেমে সড়কের প্রবেশমুখে চরম বিশৃঙ্খলা। সড়কে দুপাশ দখল করে অসংখ্য ছোট ছোট গাড়ি। ওই জটলায় আটকা পড়ছে সেতুমুখী বাস, ট্রাকসহ যানবাহন।
এরপর সেতুর উত্তরপ্রান্তে রাস্তার উপর আরও বড় জটলা। সেখানে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ১৯টি রুটের বাস, মিনিবাস রাস্তায় দাঁড় করিয়ে যাত্রী উঠানামা করা হচ্ছে। আছে বেশ কয়েকটি অঘোষিত টেম্পু, টেক্সি স্ট্যান্ড। সড়ক দখল করে অগণিত হকার, ক্ষুদে দোকানির পসরা। এসব জঞ্জাল ঠেলে সেতুতে উঠতে অনেক সময় ঘণ্টা পার হয়ে যায়। একই চিত্র সেতুর দক্ষিণপ্রান্তের মইজ্জ্যারটেক হয়ে শিকলবাহা ক্রসিংয়েও। বাস চালকরা বলছেন, সংযোগ সড়ক চালুর পরও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার যাতায়াতের সময় তেমন কমেনি।
বাকলিয়ার বাসিন্দা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী-সমাজসেবী মো. খোরশেদ আলম দুলাল বলেন, আন্ডারপাসের বিশৃঙ্খলার কারণে রাহাত্তারপুল থেকে কেবি আমান আলী সড়ক যানজটে প্রায় অচল হয়ে পড়ছে। একই অবস্থা আন্ডারপাসকে ঘিরে অন্য সড়কগুলোতেও। মানুষের কষ্ট-দুর্ভোগের পাশাপাশি ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে। শৃঙ্খলা আনা গেলে জনদুর্ভোগ কমবে এবং সড়কের সুফলও পাওয়া যাবে। প্রায় পৌনে ৩০০ কোটি টাকার এ সড়ক বিশৃঙ্খলার কারণে অচল থাকবে এটা কারও কাম্য নয়।
সড়কে সুফল পুরোপুরি মিলছে না জানিয়ে নগরীর পূর্ব বাকলিয়ার কাউন্সিলর হারুন উর রশীদ ইনকিলাবকে বলেন, সড়ক দখল করে রিকশা, অটোরিকশা পার্কিং করা হচ্ছে, হকার বসছে। মিয়াখাননগর এবং কালামিয়াবাজার এলাকায় দীর্ঘজট হচ্ছে। এসব বিশৃঙ্খলা দূর করা গেলে মানুষ সুফল পাবে।
দক্ষিণ বাকলিয়ার কাউন্সিলর ইয়াছিন চৌধুরী আছু বলেন, স্থানীয়দের কিছুটা কষ্ট হলেও দূরপাল্লার যানবাহন সহজে চলাচল করতে পারছে। আবার স্থানীয়রা যারা নগরীর দূর-দূরান্তে আসা যাওয়া করছেন তারাও সুফল পাচ্ছেন। বাকলিয়া এক্সেস রোডের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই সড়ক চালু হলে এই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ থাকবে না।
সড়কে দখল আর বিশৃঙ্খলার বিষটি স্বীকার করে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ বলেন, বিষয়টি পুলিশের ট্রাফিক বিভাগকে জানানো হয়েছে। ডিসেম্বরে সড়কটির কাজ শেষে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সওজকে বুঝিয়ে দিয়েছে। এখন সড়কের দেখভাল করার দায়িত্ব সওজের। তবে সড়ক দখল আর বিশৃঙ্খলার বিষয়টি দেখার দায়িত্ব ট্রাফিকের বলে জানান তিনি।
নগর ট্রাফিক পুলিশের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, সড়কে যত্রতত্র পার্কিং, নির্মাণ সামগ্রী রেখে দখল এবং অবৈধ দোকানপাটের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, স্থানীয়দের মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণাও চালানো হয়েছে। এসব ব্যবস্থার ফলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরছে দাবি করে তিনি বলেন, কাউকে সড়ক দখল করতে দেওয়া হবে না। সার্ভিস লেনেই ছোট যানবাহন চলবে, সেখানে পার্কিং বা মালামাল রাখা যাবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।