বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
শরীয়তপুর জেলা সংবাদদাতা : শরীয়তপুর জেলা সদরসহ অপর ৫ উপজেলা সদরে ব্যাঙ্গের ছাতার ন্যায় গড়ে উঠেছে বে-সরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্ট্রিক সেন্টার। এসব ক্লিনিক গুলো সেবার নামে চালিয়ে যাচ্ছে জমজমাট ব্যবসা। চিকিৎসা ফি, অপারেশন চার্জ, সিট ভাড়া, পরীক্ষা নিরীক্ষা বাবদ রোগীদের কাছ থেকে গলাকাটা চার্জ নিচ্ছে বলে অভিযোগ। সেই সাথে এক শ্রেণীর অসাধু ও অর্থলোভী চিকিৎসক বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক, ডায়াগনস্ট্রিক সেন্টার ও প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা নিরীক্ষার উপর গ্রহণ করছেন কমিশন। আর এ কমিশনের মাত্রা বেশী পকেটে ঢুকাতে রোগীদের অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চিকিৎসকদের পছন্দের প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা নিরীক্ষা করাতে বাধ্য করা হয় বলে রোগীদের অভিযোগ।
জানা গেছে, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দগুলোতে লোকবল ও যন্ত্রপাতি বিকল ও সল্পতার অযুহাতে এক্সে, ইসিজি, আল্টাস্নোগ্রাম, এমআরআই সহ বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য রোগীদের প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠানো হয়। আর যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে পরে থাকায় ও এসব পদে জনবল নিয়োগ না দেয়ার নেপথ্যেও রয়েছে কমিশন বানিজ্য। এ বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও এটি বন্ধে মন্ত্রনালয় সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর ও বিভাগকে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা ও উপজেলার একাধিক প্রাইভেট ক্লিনিক ডায়াগনষ্ট্রিক সেন্টার ও হাসপাতালের শীর্ষ কর্তারা জানান, চিকিৎসকের কমিশন বানিজ্যের কারনে রোগীদের চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে। পরীক্ষা ভেদে ২০ ভাগ থেকে শুরু করে ৩৫ এমনকি ৪০ ভাগ পর্যন্ত কমিশন দিতে হয়। কমিশন না পেলে চিকিৎসকরা রোগীকে অন্য জায়গায় পাঠানোর হুমকী দিয়ে থাকে। ফলে বাধ্য হয়ে প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই কমিশন দিয়ে থাকে। যদি চিকিৎসককে কমিশন দিতে না হতো তবে রোগীদের চার্জ অনেকটাই কমে আসতো।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা দুর্নিতী প্রতিরোধ কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান আলী আজ্জম ফরিদী বলেন, ক্লিনিক গুলোর স্থায়ী রেজিষ্টার্ড চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও অনেক ক্লিনিক ও প্রাইভেট হাসপাতালে তা নেই। আবার জেলা উপজেলায় কর্মরত যে সকল চিকিৎসক ক্লিনিকের সাথে জড়িত তারাই মাঝে মাঝে রোগী দেখেন তখন আবার সরকারি হাসপাতালের রোগীরা বঞ্চিত হয়। শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল সহ উপজেলা হাসপাতাল গুলোতে গিয়ে দেখা গেছে স্থানীয় ক্লিনিকের দালালরা চিকিৎসকের চেম্বারে সাহেবী কায়দায় বসে গল্পগুজব করছে। চিকিৎসক তাদেরকে খুশি করতেও অন্তত একটি পরীক্ষা দিতে বাধ্য হন বলে জানা যায়। পরীক্ষা নিরিক্ষা দেয়ার পরই শুরু হয় রোগীকে নিয়ে দালালদের টানা হেচরা। ফলে চিকিৎসা নিতে এসেও ভোগান্তিতে পরে তারা।
এব্যাপারে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ আবদুল্যাহ বলেন, আমি আমার হাসপাতালের চিকিৎসকদের বলে দিয়েছি তারা যেন অহেতুক পরীক্ষা নিরিক্ষা না দেন। দালাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন স্থানীয় লোকজন রোগীর সেবার নামে এসব করে। মাঝে মধ্যে পুলিশের হাতে আটকও হয়।
সিভিল সার্জন ডাঃ মসিউর রহমান বলেন, কমিশন যারা দেয় এবং নেয় তারা কাজটি গোপনে করে। এ বিষয় প্রমান পেলে আমি আইনানুগ ব্যাবস্থা নিব। আমি এখানে যোগদানের পর থেকে দালাল চক্রের প্রভাব অনেকটাই কমে এসেছে। আমি কোন চিকিৎসকের টেবিলে কোন প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিকের পেইড, কার্ড বা স্লিপ পেলেও সে সূত্রে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। তিনি বলেন ক্ষতিগ্রস্থরা সচেতন হলেই কেবল এ অনিয়ম প্রতিরোধ করা সম্ভব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।