Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আল কোরআন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি কিতাব-২

এ কে এম ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন : আমি আরবি ভাষায় কোরআন নাজিল করেছি, যাতে কোনো বক্রতা নেই, হয়তবা তারা তাকওয়া অবলম্বন করতে পারবে। (সূরা যুমার : আয়াত ২৮)। বস্তুত আল কোরআন আল্লাহপাকের নিদর্শন, প্রকাশ্য মু’জিযা। বিভিন্ন দিক ও বিচার বিশ্লেষণে যেমন : শব্দ চয়ন, ছন্দের পরিপাটি, মূলভাব প্রকাশে অলঙ্কার শাস্ত্রের অপরূপ প্রয়োগ, আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের আদেশ ও প্রদত্ত সংবাদসমূহ তথা আল্লাহর নামসমূহ, গুণাবলি, ফিরিশতামন্ডলী, অদৃশ্যের সংবাদ পরিবেশন, চাই তা অতীতের হোক বা ভবিষ্যতের, ইত্যাদি দিক হতে আল কোরআন আল্লাহপাকের কালাম হওয়ার প্রকাশ্য দলিল। (শরহে আকীদায়ে সিফারানিয়্যাহ : পৃ. ১৫২)।

মর্যাদাপূর্ণ আল কোরআন বিকৃতি হতে পরিপূর্ণ সংরক্ষিত আছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকবে। কোরআন মাজীদ বিকৃত হওয়ার বিশ্বাস করা নির্ঘাত কুফুরি। এ প্রসঙ্গে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন : ক. নিশ্চয়ই কোরআন আমিই অবতীর্ণ করেছি। আর আমিই এর সংরক্ষণকারী। (সূরা আল হিজর : আয়াত ৯)। খ. আল্লাহপাকের বাণী ‘ইন্না নাহনু নাযযালনায যিকরা’ দ্বারা মুরাদ হলো আল কোরআন। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, কোরআন শরীফের অন্তভূক্ত নয় এমন কোনো বিষয় কোরআনে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে পারে না এবং কোরআনের অন্তভূক্ত কোনো বিষয়, যেমন আহকাম, দন্ডবিধি, ফরজসমূহ ইত্যাদি কোরআন হতে সংকোচন বা হ্রাস প্রাপ্ত হতে পারবে না। কোরআনুল কারীম এরূপ সর্বপ্রকার হ্রাস-বৃদ্ধি হতে সম্পূর্ণরূপে সংরক্ষিত। (তাফসীরে তাবারী : পৃ. ১২-১৪)।

উর্ধ্ব জগত হতে অবতীর্ণ সকল কিতাব ও সহীফাসমূহ সত্য। যদিও পরবর্তীতে লোকেরা এগুলোকে পরিবর্তন করেছে। সুতরাং বর্তমানে কোরআনুল কারীম ব্যতীত অন্য কোনো আসমানি কিতাব নিজের মৌলিক, সঠিক ও অবিকৃত অবস্থায় বিদ্যমান নেই। এ সম্পর্কে আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে : ক. যারা আপনার প্রতি, আপনার পূর্বে নবীদের প্রতি অবতীর্ণ কিতাবে বিশ্বাস রাখে। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ৪)। খ. কাফিরগণ যিকর তথা কোরআন অস্বীকার করে বসল, অথচ তা তাদের সামনে আসল কিতাব ছিল। অবশ্যই তা মহা গৌরবান্বিত কিতাব, তার সামনে ও পেছন থেকে কোনো ভ্রান্তি আগমন করতে পারে না। প্রজ্ঞাময় প্রশংসিত সত্তার নিকট হতে এটা অবতারিত। (সূরা ফুসসিলাত : আয়াত ৪১-৪২)।

মহান আল্লাহতায়ালা মানবজাতির পথ প্রদর্শন হেদায়েতের নিমিত্তে ছোট বড় অনেক গ্রন্থ নবী ও রাসূলগণের ওপর অবতীর্ণ করেছেন। যাতে মানুষের আকীদা ও আমল সঠিক হতে পারে এবং আল্লাহর পছন্দনীয় জীবন পদ্ধতির ওপর চলতে পারে। অকাট্য দলিল ও নিদর্শন দ্বারা প্রমাণিত সকল কিতাব ও সহীফার ওপর ঈমান আনয়ন করা ফরজ বা অত্যাবশ্যক। তার অস্বীকৃতি দ্বারা মানুষ ইসলামের সীমারেখা হতে বহিষ্কৃত হয়ে পড়ে। এ প্রসঙ্গে আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : তারাই মুমিন যারা আপনার ওপর নাযিলকৃত ও আপনার পূর্বে নাযিলকৃত আসমানি কিতাবসমূহে বিশ্বাস স্থাপন করে। আর তারা আখেরাতের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখে। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ৪)।



 

Show all comments
  • জাহিদ খান ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ২:২৫ এএম says : 0
    পৃথিবীর মানুষের জন্য আল্লাহ রব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে সর্বশেষ গাইডবুক বা চলার পথের পাথেয় হলো আল কোরআন।
    Total Reply(0) Reply
  • কামাল ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ২:২৬ এএম says : 0
    কোরআনের আগেও ১০৩টি আসমানি গ্রন্থ মানুষের হেদায়াতের জন্য নাজিল করা হয়েছে। যতটুকু জানা যায়, পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবগুলো একসঙ্গে নাজিল হয়েছে। এটাও জানা যায়, পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবগুলো অস্থায়ী নির্দেশনার মতো ছিল। সময়ের চাহিদার আলোকে নতুন কিতাব এসেছে। কোরআনই একমাত্র আসমানি গ্রন্থ, যে গ্রন্থ একসঙ্গে নয়, অল্প অল্প করে প্রয়োজনমতো নাজিল হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ কাজী নুর আলম ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ২:২৬ এএম says : 0
    আর এ গ্রন্থ এমন এক গ্রন্থ যা আগের সব গ্রন্থকে একসঙ্গে করে কেয়ামত পর্যন্ত মানুষের হেদায়াতের আলোর মশাল হাতে মানবজাতির মুক্তির দুয়ারে দাঁড়িয়ে থাকবে। পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবগুলোর মতো কোরআন একসঙ্গে নাজিল হয়নি। বিষয়টি নিয়ে তখনকার অবিশ্বাসীরা নানান প্রশ্ন তুলেছে। কোরআনের ভাষায়, ‘অবিশ্বাসীরা বলে, হে মুহাম্মদ! কেন পুরো কোরআন তোমার ওপর একসঙ্গে নাজিল হয়নি? হে নবী! তাদের বলে দাও, আমি অল্প অল্প করে কোরআন এজন্য নাজিল করেছি, যাতে কোরআনের হেদায়াত তোমাদের মনকে ছুঁতে পারে। আর ওরা যত উদ্ভট প্রশ্ন নিয়েই আসুক না কেন, মুহূর্তেই যেন আমি তোমাকে সুন্দর জবাব ও ব্যাখ্যা জানিয়ে দিতে পারি।’ সূরা ফুরকান, আয়াত ৩৩।
    Total Reply(0) Reply
  • তোফাজ্জল হোসেন ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ২:২৬ এএম says : 0
    মহান আল্লাহ আমাদের কোরআন বোঝার তাওফিক দিন।
    Total Reply(0) Reply
  • তরুন সাকা চৌধুরী ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ২:২৭ এএম says : 0
    বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মহিমান্বিত মহাগ্রন্থ আল-কুরআন বিশ্ব মানবতার জন্য মহান রবের অসীম অনুগ্রহ ও অমূল্য অবদান। এ গ্রন্থ বিভিন্ন দিক বিবেচনায় শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছে। অন্যান্য আসমানী কিতাবের দিকে লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাবো, সেগুলো কোন নির্দিষ্ট গোত্র বা জাতির জনগোষ্ঠীর উপর অবতীর্ণ হয়েছে এবং পরবর্তীকালে তাতে বিকৃতিও ঘটেছে। কিন্তু পবিত্র কুরআন কালের প্রেক্ষাপটে, সময়ের প্রয়োজনে ও সমসাময়িক অবস্থার আলোকে গোটা বিশ্ববাসীর জন্য মহানবীর (সা.) উপর অবতীর্ণ হয়েছে এবং আজও মানবজাতির মুক্তির একমাত্র গ্যারান্টি হিসেবে অবিকৃত অবস্থায় বিশ্বের মাঝে বিদ্যমান রয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Anish Ahmed ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০৪ পিএম says : 0
    Alhamdulilah, Subhanallah. Maa sha allah.
    Total Reply(0) Reply
  • MOKTAR HOSSAUN ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ২:৩৬ এএম says : 0
    আমি খুসি যে এই কোরাআন থেকে অনেক কিছু বুঝতে পেরেচি।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন