বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন : আমি আরবি ভাষায় কোরআন নাজিল করেছি, যাতে কোনো বক্রতা নেই, হয়তবা তারা তাকওয়া অবলম্বন করতে পারবে। (সূরা যুমার : আয়াত ২৮)। বস্তুত আল কোরআন আল্লাহপাকের নিদর্শন, প্রকাশ্য মু’জিযা। বিভিন্ন দিক ও বিচার বিশ্লেষণে যেমন : শব্দ চয়ন, ছন্দের পরিপাটি, মূলভাব প্রকাশে অলঙ্কার শাস্ত্রের অপরূপ প্রয়োগ, আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের আদেশ ও প্রদত্ত সংবাদসমূহ তথা আল্লাহর নামসমূহ, গুণাবলি, ফিরিশতামন্ডলী, অদৃশ্যের সংবাদ পরিবেশন, চাই তা অতীতের হোক বা ভবিষ্যতের, ইত্যাদি দিক হতে আল কোরআন আল্লাহপাকের কালাম হওয়ার প্রকাশ্য দলিল। (শরহে আকীদায়ে সিফারানিয়্যাহ : পৃ. ১৫২)।
মর্যাদাপূর্ণ আল কোরআন বিকৃতি হতে পরিপূর্ণ সংরক্ষিত আছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকবে। কোরআন মাজীদ বিকৃত হওয়ার বিশ্বাস করা নির্ঘাত কুফুরি। এ প্রসঙ্গে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন : ক. নিশ্চয়ই কোরআন আমিই অবতীর্ণ করেছি। আর আমিই এর সংরক্ষণকারী। (সূরা আল হিজর : আয়াত ৯)। খ. আল্লাহপাকের বাণী ‘ইন্না নাহনু নাযযালনায যিকরা’ দ্বারা মুরাদ হলো আল কোরআন। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, কোরআন শরীফের অন্তভূক্ত নয় এমন কোনো বিষয় কোরআনে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে পারে না এবং কোরআনের অন্তভূক্ত কোনো বিষয়, যেমন আহকাম, দন্ডবিধি, ফরজসমূহ ইত্যাদি কোরআন হতে সংকোচন বা হ্রাস প্রাপ্ত হতে পারবে না। কোরআনুল কারীম এরূপ সর্বপ্রকার হ্রাস-বৃদ্ধি হতে সম্পূর্ণরূপে সংরক্ষিত। (তাফসীরে তাবারী : পৃ. ১২-১৪)।
উর্ধ্ব জগত হতে অবতীর্ণ সকল কিতাব ও সহীফাসমূহ সত্য। যদিও পরবর্তীতে লোকেরা এগুলোকে পরিবর্তন করেছে। সুতরাং বর্তমানে কোরআনুল কারীম ব্যতীত অন্য কোনো আসমানি কিতাব নিজের মৌলিক, সঠিক ও অবিকৃত অবস্থায় বিদ্যমান নেই। এ সম্পর্কে আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে : ক. যারা আপনার প্রতি, আপনার পূর্বে নবীদের প্রতি অবতীর্ণ কিতাবে বিশ্বাস রাখে। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ৪)। খ. কাফিরগণ যিকর তথা কোরআন অস্বীকার করে বসল, অথচ তা তাদের সামনে আসল কিতাব ছিল। অবশ্যই তা মহা গৌরবান্বিত কিতাব, তার সামনে ও পেছন থেকে কোনো ভ্রান্তি আগমন করতে পারে না। প্রজ্ঞাময় প্রশংসিত সত্তার নিকট হতে এটা অবতারিত। (সূরা ফুসসিলাত : আয়াত ৪১-৪২)।
মহান আল্লাহতায়ালা মানবজাতির পথ প্রদর্শন হেদায়েতের নিমিত্তে ছোট বড় অনেক গ্রন্থ নবী ও রাসূলগণের ওপর অবতীর্ণ করেছেন। যাতে মানুষের আকীদা ও আমল সঠিক হতে পারে এবং আল্লাহর পছন্দনীয় জীবন পদ্ধতির ওপর চলতে পারে। অকাট্য দলিল ও নিদর্শন দ্বারা প্রমাণিত সকল কিতাব ও সহীফার ওপর ঈমান আনয়ন করা ফরজ বা অত্যাবশ্যক। তার অস্বীকৃতি দ্বারা মানুষ ইসলামের সীমারেখা হতে বহিষ্কৃত হয়ে পড়ে। এ প্রসঙ্গে আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : তারাই মুমিন যারা আপনার ওপর নাযিলকৃত ও আপনার পূর্বে নাযিলকৃত আসমানি কিতাবসমূহে বিশ্বাস স্থাপন করে। আর তারা আখেরাতের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখে। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ৪)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।