Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাণিজ্য ঘাটতি ৭০ হাজার কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১০:১১ পিএম

আমদানি ব্যয় বাড়ছে, কিন্তু সে অনুযায়ী বাড়ছে না রফতানি আয়। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) দেশের পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৮২২ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা। আর প্রভাব পড়েছে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাব ভারসাম্যে। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লেনদেন ভারসাম্যের ওপর (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) প্রকাশিত পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ব বাজারে পণ্যের চাহিদা কম ও সঠিক মূল্য পাচ্ছে না বাংলাদেশ। ফলে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রফতানি হচ্ছে না। অন্যদিকে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ চলছে। এসব বড় বড় প্রকল্পের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানি করতে হচ্ছে। এতে আমদানি ব্যয় যে হারে বেড়েছে, সে তুলনায় রফতানি হয়নি। যার কারণে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে এক হাজার ৮৮৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় হয়েছে দুই হাজার ৭০৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে ডিসেম্বর শেষে দেশে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৮২২ কোটি ২০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (বিনিময় হার ৮৫ টাকা ধরে) দাঁড়ায় ৬৯ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা। ঘাটতির এ অঙ্ক ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময় ছিল ৭৮০ কোটি ডলার। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার।

আলোচিত সময়ে আমদানি কমেছে ২ দশমিক ৭২ শতাংশ। রফতানি কমেছে ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। তবে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকলেও সেপ্টেম্বর থেকে তা ঋণাত্মক হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সেই হিসেবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো। কিন্তু গত কয়েক বছর উদ্বৃত্তের ধারা অব্যাহত থাকলেও গেল অর্থবছরে ঋণাত্মক ধারায় চলে গেছে। ডিসেম্বরেও এ ধারা অব্যাহত রয়েছে।

চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের ডিসেম্বর শেষে ১৩৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার ঋণাত্মক হয়েছে। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী এর পরিমাণ প্রায় ১১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা, যা এর আগের অর্থবছরে একই সময়ে ঋণাত্মক ছিল ৩৩৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার।

আলোচিত সময়ে সেবা খাতে বিদেশিদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে ৫২৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আর বাংলাদেশ এ খাতে আয় করেছে মাত্র ৩৬৩ কোটি ডলার। এ হিসাবে ৬ মাসে সেবায় বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৬৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারে, যা গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ষষ্ঠ মাসে ছিল (ঘাটতি) ১৬২ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আলোচিত সময়ে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে ২৭৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার, এর মধ্যে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ১৩৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার। যা গত অর্থবছরের চেয়ে এফডিআই বেড়েছে ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং নিট বেড়েছে ২ দশমকি ৫৭ শতাংশ। একই সময়ে দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে মাত্র ৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা তার আগের অর্থবছরে একই সময়ে ছিল ৭ কোটি ২০ লাখ ডলার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাণিজ্য ঘাটতি

৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ