পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ভারতীয় হাই কমিশনারের সাথে চিটাগাং চেম্বার নেতাদের এক মতবিনিময় সভায় দুই দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে বড় ঘাটতি কমিয়ে আনা, অশুল্ক বাধাসমূহ দূর করা এবং পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে সড়ক, নৌ, রেলপথের যোগাযোগ বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। চেম্বার নেতারা দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে শুল্কায়নসহ বাণিজ্য সহজীকরণ এবং চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে যৌক্তিক মাশুল নির্ধারণের উপর গুরুত্বারোপ করেন। গতকাল সোমবার আগ্রাবাদস্থ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় ভারতের হাই কমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ বলেন, বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ক্রমে বাড়ছে। এদেশে ভারতের অনেক শিল্পকারখানা আছে। তারা এদেশে অর্থনীতিতে ভ‚মিকা রাখছে। মংলা ও মীরসরাই ইকোনমিক জোনে ভারতের জোন থাকবে। পারস্পরিক সর্ম্পক এবং উভয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মূল ভ‚মিকা পালন করছে। ২০১৮-১৯ সালে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্যের মধ্যে বাংলাদেশের রফতানি ১.০৪ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে তৈরীপোশাক রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের এলডিসি স্ট্যাটাস পরিবর্তিত হলেও অগ্রাধিকার ভিত্তিক বাণিজ্য অব্যাহত থাকবে। হাই কমিশনার বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অশুল্ক বাধাসমূহ দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতে দূর করা সম্ভব হবে বলে মত প্রকাশ করেন।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, অর্থনৈতিক চরিত্র বিচারে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও ভারত এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি ভারত থেকে আমদানির বিপরীতে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস করার লক্ষ্যে রফতানি বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এক্ষেত্রে বিদ্যমান অশুল্ক বাধাসমূহ দূর করার ক্ষেত্রে হাই কমিশনারের সহযোগিতা কামনা করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত কর অবকাশসহ বিভিন্ন প্রণোদনার সুযোগ গ্রহণ করে মীরসরাই ইকনোমিক জোনে যৌথ বা এককভাবে বিনিয়োগের মাধ্যমে ভারত ও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পণ্য রফতানি করে উভয়পক্ষ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে বলে চেম্বার সভাপতি মনে করেন।
চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ বলেন-স্থল পথে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি করা উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক হবে। তিনি তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বন্টনের দাবী জানান। ব্যবসায়ী নেতারা মীরসরাই ইকনোমিক জোনে জেটি নির্মাণ, আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে উভয় দেশে পরস্পরের ট্রাক চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ, সীমান্ত বাণিজ্য বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়ন সহযোগিতা, ভারতগামী বাংলাদেশী চিকিৎসা প্রার্থীদের জন্য সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন, তৈরীপোশাক রফতানিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, শুল্কায়নসহ বাণিজ্য সহজীকরণ, চট্টগ্রাম বন্দরকে ট্রানজিট বন্দর হিসেবে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে যৌক্তিক পর্যায়ে মাশুল নির্ধারণের আহ্বান জানান।
এতে ভারতের সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জি, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার এম ফখরুল আলম, জাপানের অনারারি কনসাল মো. নুরুল ইসলাম, প্রকৌশলী আলী আশরাফ, চেম্বারের পরিচালক একেএম আকতার হোসেন, সৈয়দ ছগীর আহমদ, অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।