রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
টি এম কামাল, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে
আসন্ন ঈদ-উল ফিতর আনন্দঘন পরিবেশকে মাদকের নীল ছোবলে দংশন করতে সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের একশ্রেণির মাদক ব্যবসায়ীরা গড়ে তুলছে মাদকের মজুত। টাকার নেশায় মত্ত হয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা স্কুল-কলেজে পড়–য়া শিক্ষার্থীদের হাতেও পৌঁছে দিচ্ছে প্রাণঘাতী মাদক। এসব কিছুকে মোকাবেলা করতে এরইমধ্যে উপজেলা প্রশাসনও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার পাল্টা ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। সূত্রে জানা গেছে, কাজিপুরের মাদক ব্যবসায়ীরাও মরিয়া হয়ে লেগেছে। এটা তাদের টিকে থাকার একটা চ্যালেঞ্জও বটে। ব্যবসায়ীরা যমুনা নদী দ্বারা পূর্ব-পশ্চিমে বিভক্ত কাজিপুরকে মাদক পারাপারের নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নিয়েছে। অনেক বড় বড় চালান ঢেকুরিয়া, মাইজবাড়ী, মেঘাই, বুরুঙ্গী, নাটুয়ারপাড়া, তেকানী, বাংলাবাজার, সীমান্তবাজার, পূর্বে রূপসা, ভেটুয়া, কাজলগ্রাম, মনসুর নগর, কুমারিয়াবাড়ি ঘাট এলাকা দিয়ে দিনে-রাতের সুবিধামতো সময়ে চলাচল করে। যারা মাদক বহন করে তারাই মাঝে মাঝে থানা পুলিশের অভিযানে ধরা পড়ে। ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাদের শাস্তি দিয়ে জেলে পাঠালেও জামিনে অথবা মুক্তি পেয়ে ফিরে এসে আবারো একই পেশায় জড়িয়ে পড়ে। ফলে এই পেশার জনবল দিন দিন বাড়ছে। অনেক সময় যারা মাদক সেবন করে তাদেরকে ফাঁদে ফেলে মাদকের গডফাদাররা এই ব্যবসায় নামতে বাধ্য করে। কাজিপুরের সোনামুখী, হরিনাথপুর, ঢেকুরিয়া বাজার, শিমুলদাইড়, ঢেকুরিয়া-মেঘাই ওয়াপদা বাধ, উপজেলা শহরের আবাসিক এলাকা, আলমপুর, সিংড়াবাড়ি, সীমান্ত বাজার, পূর্ব ও পশ্চিম বেতগাড়ি, উদগাড়ি বাজার, গান্ধাইল বাজার, আর চরাঞ্চলের অনেক এলাকায় ঈদকে সামনে রেখে গড়ে উঠছে মাদকদ্রব্যের মজুত। এসব মাদকের মধ্যে রয়েছে গাঁজা, ফেন্সিডিল, ইয়াবা, চোলাই মদ প্রভৃতি। বর্তমানে কাজিপুরে ইয়াবা ব্যবসা জমজমাট চলছে। সহজে বহনযোগ্য এবং ওষুধের মতো দেখতে হওয়ায় সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকলেও অনেকেই তা সনাক্ত করতে পারে না। এর সাথে যোগ হয়েছে কতিপয় হারবাল ওষুধের নামে মাদক ব্যবসা। ইয়াবা বা বাবা এসব মাদক হারবাল ওষুধের মোড়কেও বিক্রি হচ্ছে। এই মাদকগুলো এখন কাজিপুরের অনেক জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও ব্যবহার করছে। কাজিপুরের বেশকিছু নাম সর্বস্ব ওষুধ ফার্মেসিতেও চলছে ইয়াবা-বাবার কেনাবেচা। এমন সুকৌশলে এসব হাতবদল হয় যা কারোই নজরে সহজে আসে না। এই ফার্মাসিগুলোকে নজরদারিতে আনার পরামর্শ দিয়েছেন সুশীল সমাজের মানুষজন। কাজিপুর উপজেলা প্রশাসনও মাদক ব্যবসায়ীদের পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন। মাদক সেবন ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট কাউকেও ছাড় দেয়া হবেনা বলে জানিয়েছেন কাজিপুর উপজেলা চেয়ারম্যান বকুল সরকার, নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুর রহমান ও থানার অফিসার ইনচার্জ সতিম কুমার কুন্ডু। সম্প্রতি এক সেমিনারে উপজেলা চেয়ারম্যান বকুল সরকার জানান, মাদক বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। মাদক সংশ্লিষ্টরা যত শক্তিশালীই হোক কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, কাজিপুরকে মদ-জুয়া মাদকমুক্ত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যাদেরকে মাদকসহ ধরা হয়েছে তাদের সবাইকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে। অফিসার ইন চার্জ সমিত কুমার কুন্ডু জানান, কাজিপুরে মাদক সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে মোহাম্মদ নাসিম স্যারের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। আমরাও সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছি। প্রতিমাসেই তারা ধরা পড়ছে এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। মদ-জুয়া-মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের এই যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।