পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আমার ছেলেটার কী দোষ ছিল? সারাদিন লালমাটিয়া মহিলা কলেজ কেন্দ্রে নৌকা আর ঠেলাগাড়ির জন্য কাজ করেছে। বিকেলে বাসায় আইসা নাস্তা খাইয়া গেছে আড্ডা দিতে। সুস্থ-সবল ছেলেকে আমি আর বুকে ফিরে পাই নাই, পাবও না। হারলেও ওরা, জিতলেও ওরা। কিন্তু বুক খালি করল আমার। আমি এ হত্যার বিচার চাই। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার এলাকায় দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি কোপে নিহত সুমন শিকদারের (২৪) মা ঝুমুর বেগম গতকাল আহাজারি করে এ সব কথা বলেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ৫ জন। নির্বাচনে তিনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের এক কাউন্সিলর প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট ছিলেন। গত শনিবার রাতে মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার এলাকার রহিম ব্যাপারী ঘাটে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলেও গতকাল পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। লালমাটিয়া এফ ব্লকের ৪/২ ভবনের কেয়ারটেকার আনোয়ার আহমেদ শিকদারের ছেলে নিহত সুমন। এ ভবনের নিচতলায় বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকতেন তিনি। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সুমন সবার বড়। তাদের গ্রামের বাড়ি ল²ীপুর জেলার রামগতিতে।
মোহাম্মাদপুর থানার ওসি মো. আব্দুল লতিফ বলেন, সুমন হত্যায় জড়িতদের শনাক্তে ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গতকাল ওই বাসায় গিয়ে দেখা যায়, উপার্জনক্ষম সন্তান হারানোর শোকে শয্যাশায়ী মা ঝুমুর বেগম। দুই বোন সুইটি ও সুবর্ণা মায়ের পাশে বসে তাকে সান্তনা দিতে গিয়ে নিজেরাই হাউমাউ করে বারবার কেঁদে উঠছেন।
নিহত সুমনের বোন সুবর্ণা সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা উত্তরের নৌকা মার্কার প্রার্থী আতিকুল ইসলামের নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয় ছিল সুমন। ভোটের সারাদিন কাটিয়েছে লালমাটিয়া মহিলা কলেজে। ভোট শেষ হবার পর বাসায় এসে নাস্তা খায়। এরপর তার মোবাইলে একটা কল আসে। তারপর ঘর থেকে বেরিয়ে যায় ভাই। আর ফেরেনি। রাত ১০টার দিকে খবর পেয়ে ছুটে যাই সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে। দেখি রক্তাক্ত নিথর শরীর নিয়ে স্ট্রেচারে শুয়ে আছে আমার ভাই। ডাক্তার আর পুলিশের মুখে জানতে পারি সুমন ভাইকে কে বা কারা কুপিয়ে খুন করেছে।
এ সময় সুমনের মা ঝুমুর বেগম বিলাপ করে বলেন, আল্লাহ তুমি বিচার করো, কারা এমন করে আমার ছেলেডারে খুন করল। আমার বুকটা ফাঁকা করল।
তিনি বলেন, রাত ৯টার দিকে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে। ছেলেডারে কোপাইছে। আমি খুনের বিচার চাই। আমার ছেলের মতো আর ছেলে হয় না। এ মহল্লায় সবাই ওরে চেনে-জানে। আমার মতো আর কোনো মায়ের বুক যেন কখনও খালি না হয়।
স্থানীয়রা জানান, নিহত সুমন ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলামের লালমাটিয়া মহিলা কলেজ কেন্দ্রের পোলিং এজেন্ট ছিলেন।
মোহাম্মাদপুর থানার এসআই মো. হারুন জানান, কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে জানা যাবে কেন কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শী নিহত সমনের বন্ধু সাজ্জাদ হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে আমি, সুমন, রুবেল, আলামিন, ইমরান (মেসি) ও ইমরানসহ ৬ জন রহিম ব্যাপারী ঘাটে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। হঠাৎ অর্ধশত মুখোশধারীরা যুবক এসে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগের নেতা শাহ আলম জীবনের লোক কে কে আছে বলে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এতে সুমন আহত হলে আমরা তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাই। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কী কারণে তাকে এভাবে হত্যা করলো, আমরা জানি না। হামলার সময় সবার মুখে মাস্ক পরা থাকায় কাউকে চিনতে পারিনি।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. প্রবাহ বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের এখানে আনার আগেই সুমনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, বুকের ডান পাশের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া তার পেটে, পায়ে ও পিঠসহ শরীরে বেশ কয়েকটি জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।