Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৭ জুন ২০২৪, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আমরা এমন ভোট চাইনি

ইভিএমে আঙুলের ছাপ মেলেনি সিইসির

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৩৯ এএম

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের আইইএস স্কুল ও কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিতে যান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। কিন্তু ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে সিইসির আঙুলের ছাপ মেলেনি। পরে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে ভোটপ্রদান করেন তিনি।

দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিভিন্ন স্থানে ভোটাররা কেন্দ্রে ঢুকতে না পারা, অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরাসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, এমন ভোট আমরা চাইনি। এখনো চাই না।

গতকাল সন্ধ্যায় আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে অনানুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট ভালো হয়েছে। কত শতাংশ ভোট পড়েছে তা তিনি জানেন না। তবে এটা ৩০ শতাংশের বেশি হবে না। দুই সিটির নির্বাচন ভালো হয়েছে।

গতকাল শনিবার ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে উত্তরার আইইএস স্কুল অ্যান্ড কলেজে নিজে ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। সিইসি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আমাদের নির্দেশ, এমন ঘটনা যদি ঘটে তারা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে। এর আগে বেলা পৌনে ১১টার দিকে কলেজ ভবনের দোতলায় আট নম্বর বুথে তিনি ভোট দিতে ঢোকেন সিইসি। ইভিএম মেশিনে তার দুই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি স্ক্যান করা হয়। তবে কোনোটিই ম্যাচ করেনি। তখন কর্মকর্তারা দ্রুত তার জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর দিয়ে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করেন। এরপর তিনি ভোট দিয়ে চলে যান।

সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সিদ্দিকা বুলবুল এ বিষয়ে বলেন, সিইসির প্রথম দুটি বৃদ্ধাঙ্গুলীর ছাপ নেয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে তা ম্যাচ করেনি। পরে আমরা আর চেষ্টা করিনি। তিনি জানান, তাড়াহুড়োর কারণে এবং ভোটার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য আমরা তার এনআইডি নম্বর দিয়ে ভোট নিয়েছি। ইভিএম মেশিনে ফিংগারপ্রিন্ট না মেলার বিষয়ে পরে সাংবাদিকদের সিইসি বলেন, কারো ফিংগারপ্রিন্ট না মিললেও ভোট দেয়ার তিন-চারটি উপায় আছে। সেভাবে তারা ভোট দিতে পারবেন।

সিইসি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আমাদের নির্দেশ, এমন ঘটনা যদি ঘটে তারা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবে। নির্বাচনী পরিস্থিতি শান্ত রাখতে প্রার্থী, ভোটার এবং বিভিন্ন প্রার্থীর সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ভোটের পরিবেশ যেন বজায় থাকে। তবে এখন পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানান তিনি। নূরুল হুদা বলেন, আমরা ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি করেছি। আমাদের যে দায়িত্ব সেটা পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করেছি-রিটার্নিং অফিসার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগসহ সব কিছু। আমাদের দিক থেকে প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সিটি নির্বাচনে ভোট ৩০ শতাংশের কম হবে : সিইসি
গতকাল নির্বাচন ভবনে অনানুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট ভালো হয়েছে। কত শতাংশ ভোট পড়েছে তা তিনি জানেন না। তবে এটা ৩০ শতাংশের বেশি হবে না। ভোটকেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, এ ধরনের অভিযোগ আমরা পাইনি। যেসব এজেন্ট কেন্দ্রে গেছেন, তাদের বের করে দেয়া হয়নি। বের করে দেয়ার অভিযোগ কেউ করেননি। সিটি নির্বাচনের বিষয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে অনাগ্রহী ছিলেন সিইসি। তবে, সন্ধ্যায় নির্বাচন ভবন ত্যাগ করার সময় তার লিফটের মুখে সাংবাদিকদের বারবার অনুরোধের একপর্যায়ে তিনি কথা বলেন। এদিকে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তোলা তার পদত্যাগের দাবিও নাকচ করে দেন তিনি।

ইভিএমে ভোট হওয়ায় এবার ব্যালটে সিল বা জাল ভোট দেয়ার উপায় ছিল না। কিন্তু অনেকেই অভিযোগ করেছেন, নিজের ভোট নিজে দিতে পারেননি। ইভিএমে আঙুলের ছাপ দিয়ে মেশিনটি খোলা হলেও অনেক ভোটারকে নির্দিষ্ট প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করা হয়। সরেজমিনে গিয়েও নির্বাচনে নানা অনিয়মের চিত্র দেখতে পাওয়া গেছে। ঢাকার বহু কেন্দ্রে বিএনপির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের এজেন্টদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। কেন্দ্রের আশপাশে বিএনপির কর্মীদের উপস্থিতিও ছিল না। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীর উপস্থিতি ছিল সর্বত্র।

পল্টনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার বিষয়ে সিইসি বলেন, ওখানে কী ঘটেছে, এই মুহ‚র্তে তা বলতে পারবো না। এটি ক্রিমিনাল ঘটনা। এটি তদন্তের বিষয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিষয়।
ভোট গ্রহণের সময় এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে, এরকম অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সিইসি বলেন, আমরা এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি। ভোটে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ইসলামী আন্দোলনের নেতারা আপনার পদত্যাগ দাবি করেছে। আপনি পদত্যাগ করবেন কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, না। এর আগে চার নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তবে বৈঠকের ২০ মিনিট পর বৈঠক শেষে বেরিয়ে আসেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। তার কাছে সাংবাদিকরা প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মাহবুব তালুকদার বলেন, আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। ওই বৈঠকে মাহবুব তালুকদার, শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম ও কবিতা খানম উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের আগে কবিতা খানম বলেন, সিটি নির্বাচনের সার্বিক দিক নিয়ে আলোচনা করতেই সিইসির সঙ্গে বৈঠকে বসেছি। চার নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর, অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • Habib Molla ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৭ এএম says : 0
    আমরা সাধারণ মানুষ ইভিএম চাই না। আমরা সাধারণ মানুষ আগের মতো বেল্টের মাধ্যমে ভোট দিতে চাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Ab Razzak ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৭ এএম says : 0
    অবৈধ টাকা গুণতে গুণতে ওর হাত নষ্ট হয়েছে
    Total Reply(0) Reply
  • Kamrul Hasan ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৭ এএম says : 0
    কিন্তু ভুক্তভোগী জনগণের দাবি- "নিজের আঙুল বাড়িতে রেখে, অন্যের আঙুল নিয়ে ভোট দিতে আসার কারণে ভোটকেন্দ্রে নূরুল হুদার আঙুলের ছাপ মেলেনি!"
    Total Reply(0) Reply
  • ডিএম শফিকুল ইসলাম বাহার ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৮ এএম says : 0
    এরেস্ট করা হোক সিইসি-কে,জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করার অপরাধে.....
    Total Reply(0) Reply
  • Emad Uddin ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৯ এএম says : 0
    এই ঘটনা শুনে আমার গান গাইতে ইচ্চা করে। গুরু কি ইবিম বানাইলা নিজের ফিংগার মেলেনা ভোট কেমনে দিবরে
    Total Reply(0) Reply
  • Atawl Hoque ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৯ এএম says : 0
    বাবাদের খুশি করতে এবিএম এনে লজ্জিত হতে হল সিইসি কে।
    Total Reply(0) Reply
  • Habibur Rahaman ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৯ এএম says : 0
    সম্মান বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না সিইসি সাহেব, বাসায় গেলে বউ বাচ্চাও আপনাকে সম্মান করে না মনে হয়!
    Total Reply(0) Reply
  • Syed Mahfuj Rahman ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:০০ এএম says : 0
    তাহলে লাভ হইলো কি? অন্যের আইডি দিয়াই তো অন্য জনে ভোট দিতে পাড়বে। এত টাকা খরচ করে লাভ কি হইলো?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিটি করপোরেশন নির্বাচন

২৯ ডিসেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ