বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
কোরআনুম মাজীদ সর্বশেষ আসমানি কিতাব এবং পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবসমূহের রহিতকারী। সকল আসমানি কিতাবের মধ্যে এটি সর্বোত্তম, সর্বশ্রেষ্ঠ, অধিক সম্মানীত ও মর্যাদাবান।
এ প্রসঙ্গে আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে : ক. আমি আপনার কাছে সত্যতা সহকারে কিতাব নাজিল করেছি। যা তার পূর্বের কিতাবের সত্যায়নকারী ও সংরক্ষণকারী। (সূরা আল মায়িদাহ : আয়াত ৪৮)। খ. আমি যে কোনো আয়াত রহিত করলে অথবা আপনার অন্তর থেকে বিস্মৃত করলে, তার চেয়ে উত্তম বিধান আনয়ন করি। (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত ১০৬)।
গ. প্রিয় নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ওই মহান সত্তার শপথ, যার হাতে আমার জীবন, যদি এখন তোমাদের মাঝে ইউসুফ আ.-এর আগমন ঘটে আর আমি তোমাদের মাঝে তেমন থাকি, এমতাবস্থায় তোমরা যদি আমাকে ছেড়ে তার আনুগত্য করো, তবে অবশ্যই পথভ্রষ্টতা ও ভ্রান্তিতে নিপতিত হবে। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক : খন্ড ৬, পৃ. ১৪৪)। ঘ. রাসূলুল্লাহ সা. আরো বলেছেন, যদি মূসা আ. জীবিত থাকতেন, তবে আমার আনুগত্য ছাড়া তার গত্যন্তর ছিল না। (মেশকাতুল মাসাবিহ : খন্ড ১, পৃ. ৩০)।
বর্তমানের ইহুদি ও খৃষ্টান পন্ডিতদের সংকলিত ও সম্পাদিত তাওরাত, ইঞ্জিল, যাবুর নামক কিতাবগুলো মূল আসমানি কিতাব নয়। এগুলো রদবদল করা নাম সর্বস্ব গ্রন্থমাত্র। সুতরাং এ সকল কিতাবের বর্তমান বিদ্যমান বাণীকে আল্লাহপাকের বানী বলে বিশ্বাস করা এবং এ কিতাবগুলোর সম্পূর্ণই আসল আসমানি কিতাব বলে আকিদাহ পোষণ করা নির্ঘাত কুফুরী। এ প্রসঙ্গে আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ক. কিতাবধারীরা (ইহুদি, খৃষ্টানগণ) নিজ হস্তে কিতাব রচনা করে বলে, এটা আল্লাহর নিকট হতে অবধারিত। (সহীহ বুখারী : খন্ড ২, পৃ. ১০৪৯)।
পূর্বের আসমানি কিতাবসমূহ একসাথে একত্রিতভাবে লিখিত আকারে অবতীর্ণ হয়েছে। শুধু কোরআনুম মাজীদ প্রয়োজন অনুযায়ী অল্প অল্প করে ক্রমে ক্রমে তেইশ বছরে অবতীর্ণ হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে : ক. আমি কোরআনুল কারীম পৃথক পৃথকভাবে নাজিল করেছি, যাতে আপনি লোকদের নিকট ধীরে ধীরে বিরতি দিয়ে তিলাওয়াত করতে পারেন। (সূরা বানী ইসরাঈল : আয়াত ১০৬)।
স্মর্তব্য যে, পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবসমূহ শুধু বিষয় বস্তুর দিক থেকে মু’জিযা ছিল, আর কোরআনুম মাজীদ শব্দ ও বিষয়বস্তুর দিক থেকে মু’জিযা। সুতরাং কোরআনুল কারীম শব্দ ও বিষয় বস্তু উভয় দিক হতেই মু’জিযা ও উপমাহীন। আল কোরআনের মু’জিযা হওয়ার ব্যাপারে আল্লাহপাকের চেলেঞ্জ নিম্নরূপ। ক. যদি তোমরা আমার প্রিয় বান্দাহ হযরত মোহাম্মাদ সা.-এর ওপর অবতীর্ণ গ্রন্থের ব্যাপারে কোনো রকম সন্দেহে নিপতিত হয়ে থাক, তবে অনুরূপ একটি সূরা রচনা করে আন এবং প্রয়োজনে আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের সাহায্যকারীদের আহ্বান করো, যদি তোমরা সত্যপ্রিয় হও। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ২৩)।
খ. হে নবী, আপনি বলুন, যদি আল কোরআনের মতো গ্রন্থ রচনা করতে মানব-দানব একত্রিত হয়ে চেষ্টা করে তবুও পারবে না। যদিও পরস্পর একে অপরের সাহায্যকারী হয়। (সূরা বনী ইসরাঈল : আয়াত ৮৮)। গ. আমি মানুষের জন্য এই কোরআনে সকল প্রকার দৃষ্টান্ত বিবৃত করেছি। আর মানুষ বড়ই ঝগড়া প্রিয়। (সূরা কাহাফ : আয়াত ৫৪)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।