Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বেকার হওয়ার পথে চাকা কারিগর

মুরশাদ সুবহানী, পাবনা থেকে | প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০৪ এএম

পাবনার গ্রামীণ জনপদের বাহন গরু-মহিষের গাড়ি। এই গাড়ি দেখেননি দেশে এমন লোক মনে হয় নেই। তবে এখন এ গাড়ি কম দেখা যায়। প্রযুক্তির এ যুগে যন্ত্রচালিত গাড়িতে দ্রæত গন্তব্যে পৌঁছা যায়। জোয়াল কাধে নিয়ে গরুর গাড়ি চলে গাড়িয়ালের হেট, হেট, ডান, বাম ইত্যাকার শব্দে। এই শব্দ গরু বুঝতে পারে, সেই মতো চলে। শুধু গরু নয়, মহিষও গাড়ি টানে।
গরু বা মহিষের গাড়ি চালাতে কাঠের তৈরি চাকা লাগে। কাঠের তৈরি চাকা লাগিয়ে গ্রামীণ জনপদে চলে এই গাড়ি। গরু-মহিষের গাড়ির চাকা আবিষ্কার নিয়ে নানা জনের নানা তার্কিক বিষয় চলমান থাকলেও এই চাকা প্রচীন সভ্যতার প্রতীক দোজলা-ফোরাত কুলের সাসনীয় সভ্যতার (২১২ খৃ.) প্রথম দিকে আবিষ্কার হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। চলাচলের সুবিধার জন্য কাঠের চাকা আবিষ্কার হয়। এই চাকা গরু ও ঘোড়া গাড়িতে জুড়ে দিতে ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ার দেশ সমূহে। এই থেকে ভারতবর্ষে ও বাংলাদেশে চলে আসে গরুর গাড়ি, ঘোড়া গাড়ির চাকা। এই চাকা যুক্ত হয় মহিষ টানা গাড়ির সাথেও। এ দেশের কাঠের মিস্ত্রীরা তাদের মেধা দিয়ে কাঠের চাকা তৈরি করতে শিখে যায়। কাঠের চাকার যে প্রচলন ছিল, তা ধীরে ধীরে যান্ত্রিক সভ্যতার ধাক্কায় নি:শেষ হতে থাকে। বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদে গরু গাড়ি চলচলা অনেক কমে গেছে, ধাক্কা দিয়েছে, পাকা সড়কে চলাচলকারী ট্রাক, শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নছিমন-করিমন নামীয় যানবাহন। ধান-চাল, তরিতরকারি এবং মানুষজনের গ্রামীণ জনপদে চলাচলের জন্য এই যান্ত্রিক বাহন মুখ্য হয়ে উঠেছে। ফলে গরু-মহিষের গাড়ির কদর কমে গেছে। এই বাহনের কাঠের চাকা তৈরি কারিগররা প্রায় বেকার হয়ে পড়েছেন। কাঠের চাকায় লোহার পাতলা পাত এবং পরে কংক্রিট সড়কে চলতে হলে গরুর গাড়ির কাঠের চাকার সাথে ট্রায়ার লাগানোর নির্দেশনা এলে চাকা তৈরি কাঠ মিস্ত্রীগণ সেটি করে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকেন। এখন যান্ত্রিক গাড়ির কারণে সেই আয় রুজি-রোজগার বন্ধ হওয়ার পথে। সবাই যান্ত্রিক বাহনে চড়ছেন। গ্রামীণ জনপদে পাকা সড়কে মাইক্রোবাস, বাস, আর মেঠো পথে নছিমন-করিমন চলছে। আর নিরাশা-হাতশা বেকারত্ব নেমে এসেছে চাকা তৈরি কারিগরদের জীবনে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ