বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
অনেক বিস্তৃত ভূমি নিয়ে অষ্ট্রেলিয়া মহাদেশ। পশ্চিমা জগত ইউরোপ আমেরিকার বলয়ভুক্ত সমমনা অষ্ট্রেলিয়া অনেকের স্বপ্নের দেশ। মানবতা ও সভ্যতার যে শিক্ষা ইসলাম দিয়েছে, তার আলোকে পশ্চিমে যে মানবাধিকার পাওয়া যায়, উন্নত বিশ্বে যে নাগরিক অধিকার দেয়া হয়, এর ফাঁক ফোকর গলিয়ে কিছু মুসলিম সেসব দেশে জায়গা পায়।
খ্রিষ্টান কিংবা ধর্মহীন লোকেরা তাদের প্রয়োজনেই সামান্য মুসলিমকে তাদের দেশে যেতে দেয়, থাকতে দেয়। যদি এরা কোরআন সুন্নাহর প্রেম মানবতা ও দরদ নিজেদের জীবনে গ্রহণ করত, যদি ইসলামের আদর্শে আদর্শবান হতো, তাহলে পৃথিবীর সব অশান্তি শেষ হয়ে যেত।
দুনিয়াজুড়ে যুদ্ধ শেষ হতো। অস্ত্র ও মাদকের ব্যবসা শেষ হতো। নারী শিশু পাচার ও যৌন ব্যবসা থাকত না। ইসলাম যেখানে নিজের প্রতিবেশীর হক এত বেশি দিয়েছে যে, আল্লাহর রাসূল (সা.) এক সময় ভেবেছিলেন, আল্লাহ কি প্রতিবেশীকেও মানুষের সম্পত্তির উত্তরাধিকার বানিয়ে দেন কি না। (আল হাদিস)।
হোক সে প্রতিবেশী মুসলিম কি অমুসলিম। আর আধুনিক বিশ্বে আমেরিকা, সাবেক রাশিয়া, অষ্ট্রেলিয়া ইত্যাদি দেশ অধিক ফলনের কারণে টন কে টন খাদ্য-শস্য, আপেল, আঙ্গুর, টমেটো, গাজর ইত্যাদি ধ্বংস করে দিয়েছে। তবুও অন্য দেশ ও জাতিকে দেয়নি। উদ্দেশ্য তাদের বড়ত্ব ধরে রাখা, তৃতীয় বিশ্বের অভাব টিকিয়ে রাখা, দুর্ভিক্ষের ফায়দা নেয়া।
যুগ যুগ ধরে মানুষ এ অনাচার দেখে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এরা বড় শক্তি ঠিকই কিন্তু আল্লাহর সামনে তারা যে কোনো কিছুই না তা তাদের বোঝে আসে না। কারণ, তাদের অন্তরে ঈমানের আলো নেই। তারা হেদায়াত পায়নি। ইসলাম যেখানে ব্যক্তির নিজের সামান্য আয়ের ভেতরও প্রতিবেশীর কিছু অধিকার রেখেছে।
প্রতিবেশীদের শরীক করতে না পারলে খাবার আয়োজনও নিরবে নিভৃতে করতে বলা হয়েছে। সম্পর্ক সহজ থাকলে বলা হয়েছে, নিজের তরকারিতে ঝোল কিছুটা বাড়িয়ে দিতে, যেন প্রতিবেশীকেও কিছু খাবার দিয়ে খাওয়া যায়। এসবই প্রতীকি নির্দেশনা। যার আক্ষরিক অর্থও উদ্দেশ্য, নীতিগত অর্থও উদ্দেশ্য।
ব্যক্তি যেমন প্রতিবেশীকে দেবে, রাষ্ট্রও প্রতিবেশীকে এবং অভাবী দুর্ভিক্ষ কবলিত রাষ্ট্রকে দেবে। আমেরিকা অষ্ট্রেলিয়ায় এমনকি অনেক মুসলিম রাষ্ট্রেও (নামে মুসলিম রাষ্ট্র হলেও এসবের নীতি নির্ধারক শাসকরা পশ্চিমাদেরই অনুসারী) এত পরিমাণ খালি জায়গা পড়ে আছে যেখানে দুনিয়ার ঘনবসতি পূর্ণ অঞ্চলের মানুষকে যাওয়ার সুযোগ দিলে বিশ্বের বহু সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। ইসলাম বিবর্জিত বিশ্ব ব্যবস্থা পাল্টে সভ্যতার নেতারা যদি কোরআন সুন্নাহর আলোকে নতুন ব্যবস্থা প্রণয়ন করেন, তাহলে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা পানির মতো সহজ। যে শান্তি ইসলাম দিয়েছে।
পানির অভাবে কিছুদিন আগে অষ্ট্রেলিয়া হাজার হাজার উটকে প্রশিক্ষিত স্নাইপার শ্যুটার দিয়ে গুলি করে হত্যা করল। মানুষের পানি উটেরা খেয়ে ফেলে। আর এসব উট অযতেœ বনাঞ্চলে বংশ বিস্তার করে বেড়ে উঠেছে। এ সংবাদ প্রকাশের পর দুনিয়ার দেশে দেশে মুসলিমরা একে অপচয় মনে করে চিন্তিত হয়েছেন। এক মুসলিম এনজিও প্রধান বলেছেন, আমাদের সহযোগিতায় এসব উট জবাই করে বিশ্বের অভাবী মানুষদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়া হোক।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগানও উটগুলোকে হত্যা না করে পুষ্টিহীন শিশু ও খাদ্যহীন মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার প্রস্তাব করেন। অষ্ট্রেলিয়ার এ চিন্তাটি করার বা বিভিন্ন দেশের সহযোগিতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মতো মন মানসিকতা এ মুহূর্তে তৈরি হয়নি। হেদায়াত ও সুমতি আল্লাহর দ্বীন ছাড়া অন্যত্র পাওয়াও যায় না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।