পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষের গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন দক্ষিণে বিএনপির প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, ধানের শীষের যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে এই জোয়ারে সরকারের সব চক্রান্ত ভেসে যাবে। কারণ ভোট বিহীন এ সরকারের জনগণের কাছে কোন জবাবদিহিতা নেই। জবাবদিহিতা না থাকায় দেশকে যেমন ধ্বংস করা হয়েছে, তেমনি ঢাকা শহরকেও দুনিয়ার সব থেকে অবাসযোগ্য দূষিত শহরে পরিণত করেছে। গতকাল শনিবার নির্বাচনী প্রচারণার নবম দিন কোতয়ালী থানাধীন বাংলাবাজার চৌরাস্তা মোড় থেকে গণসংযোগ শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, আমি আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হলে জনগণের গনতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়াসহ ঢাকাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেব। ক্লিন ঢাকা গড়ে তুলতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে। বাংলাবাজার মোড় থেকে আহসান উল্লাহ মঞ্জিল, ইসলামপুর, আহসান উল্লাহ রোড, নবাববাড়ি গেট, জিন্দাবাহার, বাওয়ানী স্কুলের গলি, আরমানিটোলা, নয়াবাজারের বাগডাসা লেন, সাত রওজা, আগামসিহ লেন, সিদ্দিক বাজার, কাপ্তান বাজার হয়ে জয়কালি মন্দিরের সামনে গিয়ে দিনের কর্মসূচি শেষ করেন ধানের শীষের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
গণসংযোগকালে সড়কের দুই পাশের দোকানপাট ও পথচারিদের হাতে লিফলেট বিতরণ এবং দোকানে-দোকানে গিয়ে সালাম ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি। এসময় তিনি আশপাশের বাড়িঘরে বসবাসকারি নারী-পুরুষের কাছে ভোট চেয়েছেন হাতের ইশারায়। এদিনও বিভিন্ন এলাকায় নারী ভোটাররা দলবেঁধে ইশরাক হোসেনকে ফুল দিয়ে বরণ করতে দেখা যায়। কেউ কেউ তাকে ফুলের মালাও পরিয়ে দেন।
গণসংযোগ চলাকালে নারী-পুরুষসহ অনেকে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবেন কিনা এ নিয়ে শঙ্কার কথাও জানান ইশরাক হোসেনকে। তিনিও অভয় দিয়ে তাদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার কথা বলেছেন। এসময় অন্যদের মধ্যে বিএনপি নেতা হাবিব-উন নবী খান সোহেল, ফজলুল হক মিলন, আবদুস সালাম আজাদ, এসএম জিলানী, কাজী আবুল বাশার, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করিম বাদরু, রফিক শিকদার, শরিফ হোসেনসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী এবং স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী গণসংযোগে অংশ নেন।
গণসংযোগে ‘নারী-পুরুষ বাঁধছে জোট- ধানের শীষে দিব ভোট, ইশরাক ভাইয়ের ভয় নাই- রাজপথ ছাড়ি নাই; উন্নয়নের মার্কা- ধানের শীষ মার্কা; ঢাকার ছেলে ইশরাক ভাই- ধানের শীষে ভোট চাই; মাগো তোমার একটি ভোটে- খালেদা জিয়া মুক্তি পাবে; আসছে দেশে শুভ দিন- ধানের শীষে ভোট দিন; ইশরাক ভাই ভালো লোক- ধানের শীষে দিব ভোট’ ইত্যাদি শ্লোগানে শ্লোগানে সমগ্র এলাকা মুখরিত হয়ে উঠে। এসময় রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে নারী-পুরুষসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ হাত তুলে, অনেককে উঁচু দালানের ছাদে, বারান্দায় দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে ধানের শীষের পক্ষে সমর্থন দিতে দেখা যায়।
অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে ইশরাক হোসেন নগরবাসির উদ্দেশ্যে বলেন, আগামি ৩০ তারিখ আপনারা নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যাবেন। জনগণের রায় যেন কেউ ছিনিয়ে নিতে না পারে সে ব্যাপারে সকলকে সজাগ থাকতে হবে। আপনারা দলবেঁধে ভোট কেন্দ্রে গেলে সরকারের সকল অপকৌশল গণজোয়ারে ভেসে যাবে।
ইশরাক বলেন, এই সরকার জনগণের সকল অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। জনগণের এই হারানো অধিকার আমরা ফিরিয়ে আনতে চাই। আমি আপনাদের ভোটাধিকার এবং গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনবো। আপনারা শুধু ৩০ তারিখ ভোট কেন্দ্রে আসুন। নির্বাচিত হলে নগরবাসীর সমস্যা সমাধানে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মপরিকল্পনার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, গত ১৩ বছরে ঢাকা ধ্বংস করা হয়েছে। বাস অনুপযোগী এই শহরকে বাসযোগ্য করে গড়ে তোলাই হবে আমার প্রধান কাজ।
ইশরাক হোসেন বলেন, আমি কদমতলী, শ্যামপুর, যাত্রাবাড়ী এলাকার বেহাল অবস্থা দেখেছি। এই চিত্র শুধু যাত্রাবাড়ী, কদমতলী অথবা শ্যামপুরেরই নয়। এটা পুরো ঢাকারই চিত্র। এর কারণ, বর্তমান ক্ষমতাসীনরা অনির্বাচিত। ভোটে নির্বাচিত হলে জনগণের কাছে সরকারের দায়বদ্ধতা থাকে। অনির্বাচিত সরকার ও মেয়রের জবাবদিহিতা না থাকায় ঢাকার এই বেহাল অবস্থা বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পুরান ঢাকার নিমতলীতে ২০১০ সালে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ব্যাপাক জানমালের ক্ষয়ক্ষতির উল্লেখ করে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, আমরা নিমতলীর ট্র্যাজিডির মত আর কোন ঘটনা দেখতে চাইনা। আমরা প্রাণহানির মত পরিবেশের অবসান চাই। তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ইনশাল্লাহ আমি মেয়র নির্বাচিত হলে এই এলাকাকে ঢেলে সাজানো হবে। নিরাপদ করে গড়ে তোলার জন্য যা যা করণীয় সব কিছু করব।
উত্তরে তাবিথের প্রচারণাঃ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। কমিশনার রফিকুল ইসলামের বক্তব্যে ইভিএম নিয়ে আমাদের যে শঙ্কা সেটি প্রমাণিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জাল ভোট ঠেকাতে প্রস্তুত রয়েছে কি-না এটি এখন ভোটারদের প্রশ্ন। গতকাল রাজধানীর খিলগাঁও তালতলায় নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর আগে সাংবাদিকদের কাছে এ প্রশ্ন তোলেন। তিনি নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমরা জানতে চাই, কী হচ্ছে?’ একজন নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, কেন্দ্র দখল করতে পারলে ইভিএমে ভোট চুরি করা যায়। এ বক্তব্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন কী বলতে চাচ্ছে? ভোটকেন্দ্র দখল করা যাবে না, এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুত কি-না, এসব কথা আমাদের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়।
এ সময় তার সঙ্গে জনসংযোগে ছিলেন বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকন, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল হোসেন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, নিপুন রায় চৌধুরী, আকরামুল হাসান, সুলতানা আহমেদ, স্থানীয় কাউন্সিলর প্রার্থী হেলাল কবির, যুবদলের এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।
তাবিথ আউয়াল এদিন ২২, ২৩, ৩৫ ও ৩৬ নং ওয়ার্ডের খিলগাঁও, মালিবাগ, শান্তিনগর, মধুবাগ, বনশ্রী, মগবাজার, হাজীপাড়া, রামপুরাসহ আশপাশের এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালান। মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে দুর্নীতিমুক্ত একটি সিটি করপোরেশন উপহার দিতে পারবো। মেয়র ও কাউন্সিলর সকলকেই জবাবদিহিতার মধ্যে থাকতে হবে। তাহলে মানুষের সেবা নিশ্চিত হবে। বনশ্রীতে বলেন, ঢাকা শহর থমকে গেছে। ট্র্যাফিক ব্যবস্থা, মশা নিধন, বর্জ্য নিষ্কাশন, ড্রেনেজ সিস্টেস- এ সব সমস্যা সমাধানে পরিকল্পনা আছে। বাসযোগ্য ঢাকা গড়তে আমি স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করব। তাবিথ আউয়াল বলেন, জনগণ ভোট দিতে চায়, ভোট দেয়ার পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব ইসির। ভোটারদের মধ্যে কিছুটা ভয়-ভীতি কাজ করছে ঠিকই কিন্তু এবার তারা সব ভয়-ভীতি উপেক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে প্রস্তুত রয়েছে। ভোটাররা চায় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, ভোটের মাধ্যমে তারা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে। সব ভোট কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। ভোটাররা আমাদের জানিয়েছেন যত বাধাই আসুন না কেনো তারা সব মোকাবেলা করে কেন্দ্রে যাবেন, ভোট দেবেন। ভোট কেন্দ্রে আমরা থাকবো, নেতাকর্মীরা থাকবে, এবার জনগণও থাকবো। আমাদের উপর প্রতিপক্ষ হামলা করলেও আমরা শক্তি অবস্থানে থাকবো। আমরা আইন মেনে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। ভয়-ভীতি আমাদেরকে কাবু করতে পারবে না। তিনি বলেন, পার্ক, খেলার মাঠ, ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে হবে। শুধু প্রতিশ্রুতি দিলেই হবে না, কাজ করতে হবে। আমরা দায়িত্ব পেলে কাজ করে দেখিয়ে দিতে চাই। মানুষের গণতন্ত্র হরণ করা হয়েছে। এখন জনগণ ভোট দিতে পারে না। এবার বিএনপির নেতাকর্মীরা ভোটারদের সাহস জোগাবে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যেতে এবং ভোটারেরা যাতে সুশৃঙ্খলভাবে ভোট দিতে পারে সে সহযোগিতা করবে।
তাবিথ বলেন, নির্বাচন কমিশনারের উপর আস্থা মানুষের নেই। তারা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারপরও আমরা দেখতে চাই নির্বাচন কমিশন কি করে। সুষ্ঠু ভোট হলে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে তাবিথ আউয়ালের মা নাসরিন আউয়াল মিন্টু ১৭ নং ওয়ার্ডের খিলক্ষেত কুড়িল কাজীবাড়ী থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। এ সময় তিনি লিফলেট বিতরণ করেন। ভোটারদের কাছে ভোট চান। তার সঙ্গে স্থানীয় মহিলা দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।