পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
বড় ধরনের ধসের পর দেশের শেয়ারবাজারে উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এতে বড় ধরনের উত্থান হয়েছে সবকটি মূল্য সূচকের। একই সঙ্গে বড় অঙ্কের বাজার মূলধন ফিরে এসেছে।
শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা সঙ্কট আর আতঙ্কে স¤প্রতি শেয়ারবাজারে ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে এ ধসের যুক্তিসংগত কোনো কারণ নেই। ধসের কবলে পড়ে ভালো ভালো কোম্পানির শেয়ারের দাম অনেক কমে গেছে। এতে বর্তমান বাজার বিনিয়োগকারীদের জন্য কেনার উপযোগী।
এদিকে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিক্রির চাপের কারণে মূলত শেয়ারবাজারে ধস নামে। ছোট, বড় সব ধরনের বিনিয়োগকারীর কাছ থেকেই বিক্রির চাপ আসে। এ পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে বড় বড় ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে বিক্রির চাপ কমানোর জন্য আহŸান জানানো হয়। আবার যারা ধসের আতঙ্কে শেয়ার বিক্রি করে দেন, তাদের অনেকে শেয়ার কিনছেন। এতে বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
তত্ত¡াধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, শেয়ারবাজারে বড় ধরনের যে দরপতন হয়েছে তার কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই। দরপতনের কারণে অনেক ভালো কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে গেছে। আমি মনে করি এই বাজার কেনার উপযোগী।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বৃহস্পতিবার দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১২টির। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৭টির। দাম বাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৮৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩ শতাংশের ওপর। ৫ শতাংশের ওপরে দাম বেড়েছে ৩২টির। ৯ শতাংশের ওপরে দাম বেড়েছে ৪টির।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ৮১ পয়েন্ট বা ২ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার ১৪৯ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৩৫ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৪০৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২৬ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেড়ে ৯৪০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সূচকের বড় উত্থানে এ দিন ভূমিকা রেখেছে বড় মূলধনের প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে বড় অঙ্কের বাজার মূলধন ফিরে পেয়েছে ডিএসই। বাজারটির বাজার মূলধন আগের দিনের তুলনায় ৪ হাজার ৮১১ কোটি টাকা বেড়ে ৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
এদিকে পতন কাটিয়ে বাজার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফেরায় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ ৭-৯ শতাংশ দাম বাড়ার পরও কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রি করতে চাননি। ফলে ক্রেতা থাকলেও এসব প্রতিষ্ঠানের বিক্রিতে সঙ্কট দেখা দেয়। অথচ দুদিন আগেও এসব কোম্পানির শেয়ার ৪-৫ শতাংশ দাম কমার পরও কিছু বিনিয়োগকারী কিনতে চাননি।
হঠাৎ বিক্রির চাপ কমায় লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমে গেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৬৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ২৪২ কোটি ৮২ লাখ। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির ২১ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাফার্জহোলসিমের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার। ১১ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এডিএন টেলিকম।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ব্র্যাক ব্যাংক, গ্রামীণফোন, রিং সাইন টেক্সটাইল, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, খুলনা পাওয়ার এবং স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২০৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৬০০ পয়েন্টে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২১৭ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১০৩টির, কমেছে ৮৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।