পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নদী, পানি, প্রাণ, প্রকৃতি, জীববৈচিত্র, সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় তথা ভারতের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এবার গঠিত হয়েছে জাতীয় প্লাটফর্ম। ভারতের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় জাতীয় পর্যায়ে আন্দোলন গড়ে তুলতে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আদলে এটি গঠন করা হয়েছে।
নতুন এ প্লাটফরমের নাম দেয়া হয়েছে নদী-পানি-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা জাতীয় কমিটি। এ কমিটি পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আগামী মার্চে জাতীয় কনভেনশনের আয়োজন করবে। সে সঙ্গে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে সারাদেশে সেমিনার ও আলোচনা সভার আয়োজন করবে। রাজধানীতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল মিলনায়তনে কয়েকদফা বৈঠকের পর নতুন এ প্লাটফরম গঠন হয়েছে।
এতে সম্পৃক্ত হয়েছেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পাটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বিডি রহমত উল্লাহসহ বুদ্ধিজীবী, গবেষক, লেখক, সাংবাদিক, রাজনীতিক ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নেতৃবৃন্দ। এছাড়া এতে বিভিন্ন পরিবেশবাদি সংগঠনও সম্পৃক্ত হবে। নদী-পানি-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর।
এ ব্যাপাারে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পাটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক জানান, প্রত্যেক রাষ্ট্র তার নিজের স্বার্থে এবং তার দেশের জনগণের স্বার্থে পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়েছে এমন প্রায় সবগুলো দল এমনভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে, যাতে তারা দেশের ওপর এবং দেশের জনগণের সমর্থনের ওপর ভরসা করতে পারেনি। অধিকাংশ সময়েই তারা কোনো না কোনো বিদেশী শক্তির সাথে আপোষ করে তাদের অনুগ্রহে জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষমতা নিজেদের কুক্ষিগত করে রাখার লোভে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়েছে।
তিনি বলেন, তারা শুধু আমাদের রাষ্ট্রীয় অধিকার জলাঞ্জলি দিয়েছে এমন নয়। তারা এমনভাবে আইন-কানুন-চুক্তি সম্পাদন করেছে, যাতে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব এবং অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়েছে। এরকম অনেকগুলি চুক্তির মধ্যে সর্ব-সাম্প্রতিক ভারতের উপকূলে রাডার বসানোর যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে তারা প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয় বৈঠকে।
এতে বলা হয় এসব চুক্তির মাধ্যমে তারা একদিকে দেশকে ভয়াবহ বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। অন্যদিকে স্বাধীন একটি সরকার হিসাবে অন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে নূন্যতম মর্যাদাটুকু পাওয়ার কথা ছিল তাও পচ্ছে না। আর তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ এবং বন্দরের মত নদী পানির মত স্পর্শকাতর রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ও প্রতিষ্ঠানে যেন বাইরের কোন আগ্রাসী থাবা তছনছ করার পাশাপাশি লুটে নিয়ে যেতে না পারে তারই সর্তক আয়োজন এটি।
তিনি বলেন, দল-মত নির্বিশেষে সকল প্রকার ন্যায্য অধিকার আদায় এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যারা ঐকবদ্ধভাবে পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী তাদের সাথে নদী-পানি-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা জাতীয় কমিটি এ অবস্থার পরিবর্তন করতে চায়। তিনি জানান, এটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের উদার গণতান্ত্রিকমনা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পাশাপাশি দেশের বিশিষ্ট নদী পানি পরিবেশ দেশপ্রেমিক বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।
গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল মিলনায়তনে বৈঠকের অবস্থান পত্রে বলা হয় ফারাক্কার পানি প্রবাহ নিয়ে চুক্তি থাকা সত্তে¡ও চুক্তি অনুযায়ী পানি না দেয়া, তিস্তার মতো আন্তর্জাতিক নদী সম্পূর্ণরূপে পানি তুলে নিয়ে সেচকাজে ব্যবহার করা, প্রবাহমান নদীগুলিতে অনিয়ন্ত্রিক শিল্পবর্জ্য নিঃস্বরণের মাধ্যমে দূষণ ও আন্তর্জাতিক রীতিনীতি উপক্ষো করাসহ ভারত বহুক্ষেত্রে পানি আইনের বরখেলাপ করে চলেছে।
বাংলাদেশের জন্য ভারতের সবচাইতে ভয়াবহ প্রকল্প আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প বা রিভার লিংকিং প্রজেক্ট। ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত এ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়ে রেখেছে, যা সম্পূর্ণ প্রাণ-প্রকৃতি ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। এ প্রকল্পের মাধ্যমে অববাহিকার পানিকে খরাপ্রবণ পেনিনসুলার অববাহিকায় নিয়ে যাবার যে উদ্যোগ তা ভারত সরকার ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করে চললেও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এখন পর্যন্ত এসব বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছে। আর এজন্য বাংলাদেশে একটি শক্তিশালি প্লাটফরম তৈরির জরুরি প্রয়োজন। এই প্রয়োজনীয়তার আলোকে গঠিত হয়েছে নদী-পানি-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা জাতীয় কমিটি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।