Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দুপচাঁচিয়ায় ভেজাল লাচ্ছা তৈরির ধুম

প্রকাশের সময় : ৩০ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে

দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পবিত্র রমজান মাসে ঈদুল ফিতর উৎসবকে সামনে রেখে ভেজাল ও নি¤œমানের লাচ্ছা তৈরির ধুম পড়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এক শ্রেণীর মৌসুমী ব্যবসায়ী পবিত্র রমজান মাস ও ঈদুল ফিতর উৎসবকে সামনে রেখে লাচ্ছা তৈরির ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন হোটেল ও কনফেকশনারিতেও লাচ্ছা তৈরি করা হচ্ছে। তারা যত্রতত্র ঘর ভাড়া নিয়ে এসব লাচ্ছা সেমাই তৈরি ও বিক্রয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। উপজেলার চৌমুহনী বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শুধু এই চৌমুহনী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ৭ থেকে ৮টি দোকানে লাচ্ছা সেমাই তৈরি হচ্ছে। বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন নূর মোহাম্মদ ও দেলোয়ার হোসেন এবং চৌমুহনী থেকে আলতাফ নগর সড়কের দু’ধারে মেহেরুল ইসলাম, আব্দুস সামাদ, ছিদ্দিকুর রহমান, আব্দুল গোফফার, আজাহার আলী, ফারুক হোসেন নামের ব্যক্তিরা দোকান ভাড়া নিয়ে অনেকেই নিজ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে যত্রতত্র এসব লাচ্ছা তৈরি করছে। এছাড়াও উপজেলা সদরের মহিলা কলেজ সংলগ্ন আমজাদ হোসেন, জিয়ানগর বাজারে আনোয়ার হোসেন এসব ব্যবসায়ী লাচ্ছার কারখানা দিয়ে লাচ্ছা তৈরি করে আসছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ উপকরণ দিয়ে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এসব লাচ্ছা তৈরি হচ্ছে। অত্যন্ত নোংরা পরিবেশে ও স্যাতসেতে মেঝেতে আটার খোমর তৈরি করা হচ্ছে। এসব আটার খোমর তৈরির কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের অবস্থা আরো করুণ। খালি গায়ে পা দ্বারা এসব শ্রমিকরা আটার খোমর তৈরির কাজে ব্যস্ত রয়েছে। গরমে তাদের গা থেকে ঘাম ঝরে আটার খোমরে মিশে যাচ্ছে। এই খোমর দ্বারাই পরে কারিগররা তাদের কারিগরি কৌশলে লাচ্ছা তৈরী করছে। অধিক মুনাফার আশায় এসব ব্যবসায়ীরা তৈরিকৃত লাচ্ছা ভাঁজার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে অত্যন্ত নি¤œমানের পোড়া তেল। দোকানগুলোতে দেখা গেছে, পুরনো খাওয়ার অনুপযোগী এসব তেল এই লাচ্ছা ভাঁজার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তৈরিকৃত এসব লাচ্ছা উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রং মেশানো ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরিকৃত এসব লাচ্ছা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে স্থানীয় চিকিৎসকরা মন্তব্য করেছেন। এব্যাপারে গত ২৬ জুন দুপচাঁচিয়া উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় বিভিন্ন সদস্য প্রশাসনের দৃষ্টি কেড়ে বক্তব্য রেখেছেন। এদিকে এসব বিষয়ে দেখাশোনার জন্য সরকারিভাবে একজন স্যানেটারি ইন্সপেক্টর উপজেলায় কর্মরত থাকলেও অজ্ঞাত কারণে এসব অসাধু ভেজাল ও নি¤œমানের লাচ্ছা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে তিনি নীরব রয়েছেন। এব্যাপারে উপজেলার স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মমতা রাণীর সাথে গতকাল শনিবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, অধিকাংশ লাচ্ছা ব্যবসায়ীরা অনুমতি (লাইসেন্স) ছাড়াই ব্যবসা করছেন। দুই একেই এসব অবৈধ ভেজাল লাচ্ছা তৈরির ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেট ইউএনও শাহেদ পারভেজের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দুপচাঁচিয়ায় ভেজাল লাচ্ছা তৈরির ধুম
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ