পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতীয় ক‚টনীতিকের সাথে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ এবং ড্রাফটিং বিভাগের সচিব নরেন দাস এবং একই বিভাগের যুগ্ম সচিব কাজী আরিফুজ্জামানের ব্যক্তিগত গোপন বৈঠকের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের কপি বিভিন্ন দফতরে দেখা গেছে। আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রতিবেদনের সফট কপি শেয়ার হয়েছে। শেয়ার হয়েছে ই-পেপারের প্রিন্ট ভার্সন। বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনের ভেতর অবস্থান করে অন্য দেশের স্বার্থ রক্ষাকারী কর্মকর্তাদ্বয়ের মুখোশ উন্মোচিত হওয়ায় অধিকাংশ কর্মকর্তাই স্পর্শকাতর এ প্রতিবেদনকে যথার্থ, তথ্যনির্ভর, বস্তুনিষ্ঠ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। গতকাল আইন মন্ত্রণালয় ছিল অনেকটাই থমথমে। কর্মকর্তাদের ছোটাছুটি ছিল কম। কেউ কারো সঙ্গে কথাও খুব একটা বলেননি। সবার মধ্যে দিনভর ছিল কানাঘুষা। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আইন মন্ত্রণালয়ে আসেন দুপুরে। অবস্থানকালে রুটিন ওয়ার্ক নিয়েই তিনি ছিলেন ব্যস্ত। তাছাড়া দুই কর্মকর্তার বৈঠক সম্পর্কে আইনমন্ত্রীর অবস্থান এবং বক্তব্য প্রতিবেদনেই উল্লেখ রয়েছে। সরকারের একটি অনুবিভাগের সচিব এবং এক কর্মকর্তার স্বপ্রণোদিত ব্যক্তিগত গোপন বৈঠকের ঘটনাটি ছিল ‘টক অব দ্য মিনিস্ট্রি’। কোন কর্তৃত্ব বলে তারা এই বৈঠক করতে পারলেন- এটিই ছিল সবার প্রশ্ন।
এদিকে ইনকিলাব প্রতিবেদনের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় ড্রাফটিং উইংয়ের কর্মকর্তারা জানান, দুই কর্মকর্তা যা ঘটিয়েছেন সেটি অবিশ্বাস্য। মন্ত্রী তথা সরকারকে না জানিয়ে ব্যক্তিগতভাবে কূটনৈতিক পর্যায়ের এই বৈঠক তারা করতে পারেন না। তারা কি করে কার অনুমতি নিয়ে ব্রিফকেস ভর্তি রেকর্ডপত্র ভারতীয় কূটনীতিকের হাতে তুলে দিলেন? কি ছিল সেই ব্রিফকেসে? মন্ত্রণালয় তথা সরকার কি সেই রেকর্ডপত্র সম্পর্কে অবহিত? এটির ব্যাখ্যা কি? উক্ত দুই কর্মকর্তা এখন যে ব্যাখ্যাই দাঁড় করান না কেন এটি সুস্পষ্ট তথ্য পাচার এবং গুপ্তচরবৃত্তি। তারা জানান, কূটনীতিকদের সঙ্গে সরকারের কোনো কর্মকর্তার যেকোনো পর্যায়ের আলাচারিতার জন্য অবশ্যই উচ্চ পর্যায় থেকে অনুমোদন নিতে হয়। কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকের কোনো বিষয় থাকলে বিষয়বস্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন করিয়ে নিতে হয়। এ দুই কর্মকর্তা কি সেটি করেছিলেন? ব্রিফকেসে যেসব রেকর্ডপত্র ক‚টনীতিকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে সেগুলো কি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবহিত? ক‚টনীতিকের সঙ্গে ‘প্রাথমিক আলাপচারিতা’র জন্য কি আইন মন্ত্রণালয় নরেন দাস ও কাজী আরিফকে কোনো দায়িত্ব দিয়েছিলেন? এসব প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যেই। প্রতিবেদনটি প্রকাশের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। সরকারও তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে ড্রাফটিং উইংয়ের সচিব নরেন দাসের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে মন্ত্রণালয়। কারণ, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (এস কে সিনহা)-এর দক্ষিণহস্ত বলে পরিচিত নরেন দাসের অতীত কর্মকান্ড ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এস কে সিনহা প্রধান বিচারপতি হওয়ার পর আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। ওই চিঠিতে নরেন দাসকে এস কে সিনহা তার ‘বিশেষ কর্মকর্তা’ হিসেবে নিয়োগ দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাটি এস কে সিনহার কাছে ‘বিশস্ত লোক’ হিসেবে নরেন বিশ্বাসের নাম দেন। কিন্তু আইনমন্ত্রী সেই অনুরোধ উপেক্ষা করেন বলে জানা গেছে। এতে এস কে সিনহা অসন্তুষ্ট হন মন্ত্রণালয়ের প্রতি। নরেন দাস হন আশাহত।
প্রতিবাদ এবং প্রতিবেদকের বক্তব্য : এদিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যা’ ও ‘ভিত্তিহীন’ দাবি করে প্রতিবাদ পাঠিয়েছেন লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব কাজী আরিফুজ্জামান। ব্যক্তিগতভাবে পাঠানো প্রতিবাদটিকে তিনি ‘লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ’-এর পক্ষ হতে ‘তীব্র ক্ষোভ’ ও ‘প্রতিবাদ’ জানান। তবে একজন যুগ্ম সচিব সরকারের অনুমোদন এবং সিদ্ধান্ত ছাড়া এই প্রতিবাদও পাঠানোর এখতিয়ার রাখেন না বলে জানান একই মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এটিও সরকারি চাকরির ‘শৃঙ্খলা ভঙ্গ’ বলে মনে করেন তারা। এ বৈঠকের বিষয়ে সরকার যদি অবহিত থাকতেন এবং প্রতিবেদনের তথ্য যদি যথার্থ না হতো তাহলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় খোদ মন্ত্রণালয়ই প্রতিবাদ জানাত। সরকার এ বৈঠকের দায় নেয়নি বলেই তাকে ব্যক্তিগতভাবে প্রতিবাদ পাঠাতে হয়েছে।
কাজী আরিফুজ্জামানের পাঠানো প্রতিবাদেও রয়েছে তথ্য বিভ্রান্তি। ভারতীয় হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি, পলিটিক্যাল-৩ লাবন্য কুমারের পাঠানো নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্রে শুধু নরেন দাস ও কাজী আরিফুজ্জামানের নাম উল্লেখ রয়েছে। এ দুই কর্মকর্তার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতেই ডেপুটি হাইকমিশনার বিশ্বদীপ দে’র সঙ্গে নবনীতা চক্রবর্তী এ বৈঠকের ব্যবস্থা করেন। অন্য বিভাগের আর কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে নয়।
ব্যক্তিগত প্রতিবাদে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং বিভাগের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভারতীয় ক‚টনীতিকের সঙ্গে আলাপ হয়েছে বলে দাবি করেন। এছাড়া বাংলাদেশে বিশ্বমানের একটি আইন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়েও আলোচনা হয় বলে দাবি করা হয়। অথচ এ বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনার জন্যও সরকার তাদের মতো এ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিয়েছেন কি নাÑ প্রতিবাদে তা তিনি উল্লেখ করেননি। সর্বোপরি ক‚টনীতিকের কাছে হস্তান্তর করা ব্রিফকেসটিতে কি কি কাগজপত্র ছিল এটির কোনো ব্যাখ্যা নেই প্রতিবাদে। কি কি নথিপত্র ছিল সেই ব্রিফকেসে? অতএব, যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। এতে প্রতিবেদকের নিজস্ব কোনো বক্তব্য ছিল না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।