Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসি ইভিএমে ভোট করতে মরিয়া

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০২ এএম

প্রায় সকল রাজনৈতিক দলের ঘোরতর আপত্তি সত্তে¡ও জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত এবং অর্থ হরিলুটের জন্য ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) দিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভোট করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আর এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

গতকাল রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, শুধু রাজনৈতিক দল নয়, ইসির টেকনিক্যাল কমিটি, নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংগঠনসমূহ, দেশের সচেতন মহল ও একজন নির্বাচন কমিশনারের বর্তমান ইভিএম ব্যবহারে বিরোধীতা থাকলেও সরকারের আজ্ঞাবহ কমিশন তা আমলে নেয়নি।

তিনি বলেন, ভারতের চেয়ে ১১ গুণ বেশি টাকায় ইভিএম কিনে ভোটারদের উপর জবরদস্তি করে চাপিয়ে দেয়ার আয়োজন চলছে। আওয়ামী লীগের নির্লজ্জ মোসাহেব প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশনের ইভিএম ব্যবহারের মূল লক্ষ্য অর্থ লুটপাট এবং সরকারের প্রার্থীদের ডিজিটাল ভোট ডাকাতির মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি বানিয়ে দেয়া।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ব্যালটের পরিবর্তে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নির্বাচনের আয়োজন করায় নির্বাচনী ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। ক্ষমতাসীনদের পক্ষে ডিজিটাল ভোট ডাকাতি করা এবং নিজেদের পকেট ভারি করতে জনগণের টাকা লুটপাটের জন্যই ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। ইভিএম ব্যবহার করা বিগত কয়েকটি নির্বাচন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ব্যালট পেপারের পরিবর্তে ইভিএম ব্যবহার করার কারণে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকার অপচয় হয়েছে।

রিজভী বলেন, ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে প্রশিক্ষণ খাতেই বাজেট রাখা হয়েছে ২৩ কোটি ৯০ লাখ ৯২ হাজার টাকা। প্রশিক্ষণের বাইরে নির্বাচন পরিচালনা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষা খাতে কমবেশি ৪৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। অথচ ২০১৫ সালে সর্বশেষ ঢাকার দুই সিটিতে ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচনে ইসির খরচ হয়েছিলো মাত্র ২৮ কোটি টাকা। শুধু ইভিএমের কারণেই সাড়ে চার বছরের ব্যবধানে সেই খরচ গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৯ কোটি টাকায়।

ব্যালটের চেয়ে ইভিএমে ভোট গ্রহণে প্রশিক্ষণ খাতেই অন্তত: আটগুণ বেশি খরচ দেখানো হচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, এনআইডির সাবেক ডিজি বর্তমানে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং এনআইডির বর্তমান ডিজির পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় রাষ্ট্রের হাজার কোটি টাকা লুটপাট করতে জনগণের ঘাড়ে ইভিএম চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ঢাকার দুই সিটিতে ভোট কেন্দ্র আড়াই হাজারের মতো। ভোটকক্ষ প্রায় ১৪ হাজার। ইসি প্রতিটি কক্ষে তারা একটি করে ইভিএম ব্যবহার করতে চায়। সেই হিসাবে ১৪ হাজার ইভিএমের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু গত ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, নির্বাচনে ৩৫ হাজার ইভিএম ব্যবহার করা হবে। অতিরিক্ত ২১ হাজার ইভিএম কোথায় ব্যবহার করা হবে?

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর রাতের ভোট ডাকাতির কেলেঙ্কারীতে অস্বস্তিতে পড়ে এখন ইভিএম এর মাধ্যমে ডিজিটাল ভোট ডাকাতির প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। নীরবে, নিঃশব্দে জনগণের ভোটাধিকার হরণের অপর নাম ইভিএম। ইসি যে ইভিএমটি ব্যবহার করতে যাচ্ছে তার ইউনিট আছে দুইটি। একটি কন্ট্রোাল ইউনিট, অন্যটি ব্যালট ইউনিট। কন্ট্রোল ইউনিটে ফিঙ্গার প্রিন্ট থাকলেও ব্যালট ইউনিটে ফিঙ্গার প্রিন্টের ব্যবস্থা নেই। ইভিএমের কন্ট্রোল ইউনিটে ফিঙ্গার প্রিন্ট ম্যাচিংয়ের পর ব্যালট ইউনিটে গিয়ে একজনের ভোট দিতে পারবেন অন্যজন। বিএনপির এই নেতা বলেন, ভোটাধিকার বঞ্চিত জনগণ যন্ত্রের মাধ্যমে ভোটদানের স্থায়ী সুযোগ হারাচ্ছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ