Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অসময়ের বর্ষণে আমনের দরপতন

দিশেহারা কৃষক

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১২ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

পৌষের অকাল বর্ষণের সাথে দু’দফার মাঝারি প্রাকৃতিক দুর্যোগে শষ্যের গুণগত মান ভালো না হওয়ায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমনের দর পতনে দিশেহারা কৃষকরা। বরিশালের বিভিন্ন হাটে ধানের গড় দাম এখন ৬শ’ টাকারও নিচে। অথচ এবার আমন রোপনের শুরুতে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ এবং কর্তনের আগে ‘বুলবুল’-এর আঘাতে দক্ষিণাঞ্চলের উৎপাদন ব্যয় অন্তত ২০ ভাগ বেড়ে গেলেও ধানের দর গত বছরের চেয়ে কম। সর্বশেষ গত শুক্রবার দক্ষিণাঞ্চলের ধানের পাইকারি হাটগুলোতে যে মূল্য লক্ষ করা গেছে, তাতে কৃষকের মুখ আরো মলিন হয়েছে। দুঃশ্চিন্তার ছাপ সব কৃষকের চোখে মুখে।
অগ্রহায়ণের শুরুতে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মাঠে থাকা কয়েক লাখ হেক্টর উঠতি আমন ধান মাটিতে ফেলে দেয়ায় তা প্রবল বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত হয়। আমনসহ প্রায় ১০ লাখ হেক্টর জমির ফসল বৃষ্টি আর জলোচ্ছ¡াসের পানিতে নিমজ্জিত হয়। ফলে অনেক এলাকার ২৫-৩০ ভাগ ফসল কাটাই সম্ভব হয়নি। পানি সরে যেতে সপ্তাহখানেক সময় লাগে। উঠতি আমনের বেশিরভাগ ধানই চিটা হয়ে যায়। এমনকি থোর পর্যায়ের ধানের গুণগত মানও বিনষ্ট হয়।
সদ্য সমাপ্ত খরিপ-২ মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় আবাদকৃত সোয়া ৭ লাখ হেক্টর জমিতে উৎপাদিত আমন থেকে ১৬ লাখ টনেরও বেশি চাল পাবার লক্ষ থাকলেও তা অর্জন নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। অগ্রহায়ণের ক্ষতিকর বর্ষণের পরে গত কয়েকদিনের অকাল বর্ষণেও ধানের আরো ক্ষতি হয়েছে। অনেক কৃষক ধান কাটলেও পৌষের বৃষ্টির কারণে তা শুকাতে পারছে না।
ধান বিক্রি করতে গিয়েও দাম মিলছে না। এবার দক্ষিণাঞ্চলে প্রতি মণ আমনের উৎপাদন ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৫শ’ টাকারও বেশি। অথচ ধান হাটে পৌঁছানোর পরিবহন ব্যয়ের পরে দাম মিলছে সাড়ে ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকারও কম। এ অবস্থায় দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা চরম দুরাবস্থায় পড়েছে। খাদ্য অধিদফতর দক্ষিণাঞ্চলে যেসব শর্তে ধান কিনছে, তাতে কৃষকরা সরাসরি উপকৃত হচ্ছেন না। তাদের নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে ফরিয়াদের ওপরই। আর সেখানে দাম মিলছে ফরিয়া সিন্ডিকেটের হিসেব অনুযায়ী।
ফলে এবার মারাত্মক ক্ষতির কবলে দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতির প্রাণ কৃষি ও কৃষক। এমনকি এবার বাজারে শীতকালীন সবজির দাম সাম্প্রতিককালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছলেও তাতে লাভবান হননি দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা। সারা দেশের অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকা দক্ষিণাঞ্চলে রবি মৌসুম শুরু হয় প্রায় দু’মাস বিলম্বে। উপরন্তু বুলবুলের ছোবলে আগাম শীতকালীন সবজির পুরোটাই নষ্ট হয়ে কৃষকদের পরিপূর্ণভাবেই সর্বশান্ত করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আমনের দরপতন

১২ জানুয়ারি, ২০২০
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ