বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্কুল-কলেজ কেন্দ্রীক কিশোরদের অপরাধ বাড়ছে কুমিল্লায়। এক সময় বস্তি এলাকার দরিদ্র পরিবারের পড়ালেখা না জানা কিশোররা চুরি ছিনতাই থেকে শুরু করে মারামারি এমন কি খুনোখুনির সাথে জড়িত থাকতো।
আর এখন শহরের অভিজাত এলাকায় বা ফ্ল্যাট, বাসাবাড়িতে থাকা কিশোররা জড়াচ্ছে এসব অপরাধে। এইট-নাইন-টেন থেকে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির অধিকাংশ ছাত্র গ্রুপ গঠন করে অপরাধ করছে। শহরের কিশোর গ্যাং কালচারের প্রভাব পড়েছে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। কিশোর গ্যাং কালচারে উদ্বিগ্ন অভিভাবকমহল, আইন-শৃংখলা বাহিনী ও সমাজ বিশেষজ্ঞরা। শহরের গন্ডি পেরিয়ে কিশোর গ্যাং কালচার এখন পাড়াগাঁয়ে স্থান করে নিয়েছে। কুমিল্লা শহরে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে কয়েকটি খুনের ঘটনার পর কুমিল্লা-৬ আসনের এমপি হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহারের কঠোর হুশিয়ারি ও আইন শৃংখলাবাহিনীর নজরদারি বৃদ্ধি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কড়াকড়ি আরোপের পর শহরে এটির প্রভাব কমে আসলেও হঠাৎ করেই গত ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় এটির প্রভাব পড়েছে। জন্মদিন উদযাপনের নামে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে প্রায় ১৫ স্কুল ও কলেজের ছাত্র চরমভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় হতাহতের বিষয়টি না ঘটলেও এনিয়ে তৈরি হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন গ্রæপ।প্রতিশোধের নেশায় লাঞ্ছিত হওয়া শিক্ষার্থীরাও গ্রুপ গড়ে তুলছে।যা বড় ধরণের অঘটন সৃষ্টি করবে বলে সমাজের বিশিষ্টজনরা মনে করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোন শিক্ষার্থীর কবে জন্মদিন এসব ফেসবুক আইডি থেকে নিয়ে তালিকা করে রাখছে মুরাদনগর উপজেলা সদরের ডি.আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কাজী নোমান আহম্মেদ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী নামধারী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। তারপর জন্মদিন উদযাপনের নামে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গাছ অথবা লাইটপোস্টের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে ডিম, আটা, রং এসব সারা শরীরে মেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।
এছাড়াও কিল ঘুষি এবং গায়ের পোশাক ছিড়ে ফেলার ঘটনাও ঘটাচ্ছে। গেলো ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এবছরের জানুয়ারির প্রথম কয়েকদিনে ওই স্কুলের নবম-দশম শ্রেণির মাহিদুল, রুহুল আমিন, নাইম, মাহাদি, ছাব্বির, রাজবির হোসেন রবিন ও তারেকুল এবং কলেজ পড়–য়া হৃদয়, নিজাম ও নিশাতসহ অন্তত ১৫জন শিক্ষার্থী কিশোর গ্যাং কালচারের শিকার হয়েছে। নির্যাতন ও লাঞ্ছনার শিকার শিক্ষার্থীরা জানায়, মুরাদনগর ডি.আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির সিয়াম, রাহিল, মাহিদুল, শাকিল, রাজু, করিম এবং দশম শ্রেণির মাহমুদ, ফাহিম, আশিক, নাইম, ইয়াছিন, রাজা, রাব্বি, ছোট ইয়াছিন এবং কাজী নোমান আহম্মেদ ডিগ্রি কলেজের সাব্বির ইলিয়াস, হৃদয়, নাইম, মারুফ, সবুজ, জিসান, ফয়সাল, নিশাতের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং কালচার গড়ে উঠেছে।
জানা গেছে, গ্যাং কালচারে জড়িত শিক্ষার্থী স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সন্তান। তাদের এসব কর্মকাণ্ডে কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করেনা। মুরাদনগর থানার ওসি মনজুর আলম বলেন, এসব ঘটনার কোন অভিযোগ না পেলেও ঘটনাগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি। এসব শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের থানায় ডেকে প্রাথমিকভাবে সতর্ক করে দেওয়া হবে। তাতেও যদি ওরা সংশোধন না হয় তাহলে তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শাহজাহান ও কলেজের প্রিন্সিপাল সাদেকুল ইসলাম জানান, কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়টি তাদের জানা নেই। এসব ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।