Inqilab Logo

বুধবার, ০৫ জুন ২০২৪, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ডিএনসিসি’র প্রস্তুতি শুরু ডেঙ্গু প্রতিরোধ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

বিগত সময়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানোর পরও যারা অসচেতন হয়ে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবে দায়ী থাকবে, তাদের জেল-জরিমানসহ কঠোর পদক্ষেপের কথা ভাবছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। তবে নাগরিক সমজ বলছে, এটি প্রতিরোধে বছরব্যাপী কাজ করার পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সামাজিক সংগঠনগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। গতকাল রোববার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) গুলশানের নগর ভবনে কিউলেক্স ও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় মতবিনিময় সভায় এসব বিষয় উঠে আসে।

ডেঙ্গ প্রতিরোধে এবছর আগে থেকেই পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। এই লক্ষ্যে বর্ষাকালের অনেক আগেই বছরের প্রথম অ্যাডভোকেসি ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে ডিএনসিসি। নিয়মিত মেয়র না থাকায় সভায় সভাপতিত্ব করেন উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আবদুল হাই। মতবিনিময় সভায় ডিএনসিসির মশকনিধন কার্যক্রম নিয়ে ডা. মাহমুদা আলী এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কার্যক্রম নিয়ে ডা. আফসানা আলমগীর খান দু’টি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।

ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল হাই বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে যথেষ্ট প্রচারণা হয়েছে। জনগণ এখন জানে, কেন ডেঙ্গু হয়, কীভাবে প্রতিরোধ করতে হয়। এরপরও যদি কেউ সচেতন না হন, তাকে আইন অনুযায়ী জেল-জরিমানা করা হবে। ভালোবাসা দেওয়ার দিন শেষ, এখন থেকে প্রয়োজনে আইন প্রয়োগ করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে। মশা নিয়ন্ত্রণে মাঠপর্যায়ে যারা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই।

ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে ডিএনসিসির রিসোর্স (সক্ষমতা) বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া সার্বক্ষণিক কীটতত্ত্ববিদদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে সে অনুযায়ী কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। কিউলেক্স মশা নির্মূলে গবেষণা করে সম্ভাব্য প্রজননক্ষেত্র (হটস্পট) চিহ্নিত করে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি চিরুনি অভিযান অব্যাহত থাকবে। ডেঙ্গুর কারণে যাতে আর কোনো প্রাণহানি না ঘটে সে জন্য ডিএনসিসি সবধরনের পদক্ষেপ নেবে।

কীটতত্ত্ববিদ ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, এটা মনে করা ভুল হবে যে, গতবছর ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি ছিল, এবছর কমে যাবে। আমাদের সারাবছর কাজ করতে হবে। এখন থেকে প্রস্তুত হতে হবে। সামাজিক সংগঠনগুলোকে মশা নিয়ন্ত্রণে আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে হবে। ফোর্থ জেনারেশন লার্ভিসাইডিংয়ের মাধ্যমে মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদা সাবরিনা ফ্লোরা বলেন, ডেঙ্গুর কারণে গতবছর আমরা অনেক ‘সাফার’ (দুর্ভোগ) করেছি, আবার আমরাই সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করেছি। মশার বংশবিস্তার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আধুনিক ও কার্যকরী বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকে মনোযোগী হতে হবে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, শুধু ফগিং করে কাজ হবে না, ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট (আইভিএম) করতে হবে। গতবছরের বিভিন্ন ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের এগোতে হবে। গতবছর বিভিন্ন ‘রিপিল্যান্ট’-এর মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে মশার ‘রিপিল্যান্ট’ প্রস্তুত করতে হবে যেন অন্য দেশের প্রতি নির্ভরতা না থাকে। মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ শফিউল্লাহ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা, কীটতত্ত্ববিদ ডা. সাইফুর রহমান, বিভিন্ন সোসাইটির নেতা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, সিভিল এভিয়েশনের প্রতিনিধি প্রমুখ।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডেঙ্গু

২৭ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ