Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গতিশীল অর্থনীতি

চলনবিল এলাকায় শুঁটকি উৎপাদন

সিরাজগঞ্জ থেকে সৈয়দ শামীম শিরাজী : | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:৪১ এএম

শুঁটকি উৎপাদন ও বিক্রি করে দেশের তিন জেলা সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নাটোরের অর্থনীতি গতিশীল হওয়ার খবরটি নিঃসন্দেহে উৎসাহব্যঞ্জক। এ তিন জেলার চলনবিল এলাকায় ছোট ছোট দেশীয় মাছ থেকে তৈরি হচ্ছে পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ শুঁটকি। এ অঞ্চলে ছোট ছোট অনেক মাছ অবিক্রীত থেকে যায়। এ মাছ থেকে শুঁটকি উৎপাদনের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর হওয়ার পাশাপাশি বিল অঞ্চলের মানুষের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। শুঁটকি উৎপাদন কেন্দ্র করে তিন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে উঠেছে শত শত অস্থায়ী শুঁটকি চাতাল। পাবনায় উৎপাদিত শুঁটকি বিদেশেও রফতানি হচ্ছে। তবে চলনবিল এলাকায় শুঁটকি উৎপাদন, বিক্রি বা রপ্তানি করার কাজটি যে খুব সহজে হচ্ছে, তা নয়। শুঁটকি উৎপাদনে চাতাল তৈরি, মাছ কেনা ও শ্রমিক মজুরি দিতে যে পুঁজি প্রয়োজন, তা অনেকেরই নেই। এ ছাড়া উৎপাদিত শুঁটকি সংরক্ষণে কোনো টেকসই ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় কম দামে শুঁটকি বিক্রি করতে বাধ্য হন উৎপাদনকারিরা। এতে লোকসান গুনতে হয় তাঁদের।
একটা সময় ছিল, যখন শুধু কক্সবাজার ও আশপাশের এলাকায় শুঁটকি উৎপাদিত হতো। এখন কক্সবাজার ছাড়িয়ে দেশের অন্যান্য জেলাতেও ব্যাপকহারে শুঁটকি উৎপাদিত হচ্ছে। এসব শুঁটকি বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। এটা আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত সুখবর। তবে এ শিল্পে যেসব সমস্যা রয়েছে, তা দূর করা গেলে শুঁটকি উৎপাদন ও রফতানিতে যে আমরা বিশ্বে শীর্ষস্থান দখল করতে পারতাম, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
দেশের শুঁটকি উৎপাদনকারিরা সবচেয়ে বেশি যে সমস্যায় পড়েন, তা হলো সংরক্ষণ সমস্যা। এ দেশে বহু আগে থেকে শুঁটকি উৎপাদিত হলেও সরকারিভাবে তা সংরক্ষণে মানসম্মত কোনো ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। এ জন্য অনেক সময় শুঁটকি ভালো রাখার জন্য উৎপাদনকারিরা এতে ডাইক্লোরো ডাইফিনাইল ট্রাই-ক্লোরাইথেন (ডিডিটি) নামক রাসায়নিক মেশান, যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এই ডিডিটি মিশ্রিত শুঁটকি খেলে ক্যানসার, কিডনির জটিলতাসহ নানা চর্মরোগ দেখা দিতে পারে।
এ ছাড়া বিদেশে শুঁটকি রফতানি হলেও এ ব্যাপারে কোনো সরকারি নীতিমালা নেই। শুঁটকি উৎপাদন ও রফতানি করতে গিয়ে রপ্তানিকারকরা নানা দুর্ভোগে পড়েন। ফলে বিদেশের বাজারে যে পরিমাণ শুঁটকির চাহিদা রয়েছে, সে পরিমাণ রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে সরকারের যথাযথ নজর ও সহায়তা জরুরি। এ শিল্পকে আরও গতিশীল করতে সরকারকে শুঁটকি উৎপাদনকারিদের প্রশিক্ষণ ও সহজ শর্তে ঋণসুবিধা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া বিষমুক্ত শুঁটকি উৎপাদন নিশ্চিত করতে মানসম্মত সংরক্ষণব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে। শুঁটকি রফতানির ব্যাপারে নীতিমালা তৈরি করতে হবে। সরকারি সহায়তা পেলে এ শিল্পের বিকাশ হবেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অর্থনীতি

৩ জানুয়ারি, ২০২৩
২১ নভেম্বর, ২০২২
১৭ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ