রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
আখ চাষ ও আখের রসের গুড়ের জন্য দেশের পশ্চিম জনপদ উল্লেখযোগ্য হলেও পিছিয়ে নেই কুমিল্লা। আখ চাষে কুমিল্লার মাটি ও আবহাওয়া বেশ উপযোগী। এক সময় কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাপক আখ চাষ হলেও সময়ের বিবর্তনে কিছু কিছু উপজেলায় আখ চাষ কমে গেছে। তবে আখ চাষের আগের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা, সদর দক্ষিণ উপজেলা, বরুড়া, মনোহরগঞ্জ ও চান্দিনা উপজেলার চাষি। কুমিল্লার এসব উপজেলায় শীত মৌসুম ঘিরে শুরু হয়েছে আখ কাটা, মাড়াই ও গুড় তৈরির জমজমাট পরিবেশ। আখ চাষে লোকসান নয়, মুনাফার মাত্রাটাই বেশি থাকে। আর তাই কুমিল্লা জেলায় এখনো যারা আখচাষে জড়িত রয়েছেন তাদের মুখে আখের স্বাদের মতোই মুনাফার মিষ্টি হাসি লেগে রয়েছে।
কুমিল্লা জেলায় এবছর ৩৬০ হেক্টর জমিতে রঙ বিলাস, লতা বিলাস, পঞ্চান্ন ও ঈশ্বরদী ২০৮ প্রজাতির আখচাষ করা হয়েছে। পৌষ-মাঘ মাসে আখ থেকে ভালো রস পাওয়া যায়। এ সময় গুড় উৎপাদন হয় ভালো। পৌষের শুরুতেই কুমিল্লার কয়েক উপজেলায় চলছে আখের গুড় তৈরির হিড়িক। দেশের উত্তর ও পশ্চিম জনপদের অনেক শ্রমিকই এখন কুমিল্লায় আখ মাড়াই ও গুড় তৈরির কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। কুমিল্লা সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা বিবিরবাজারের গাজীপুর গ্রামের আখচাষি ইউসুফ মিয়া জানান, তিনি বেশ কয়েক বছর ধরেই আখ চাষ করছেন। মুনাফা বেশি হওয়ায় আখ চাষের প্রতি তার মনোনিবেশও বেশি। তিনি প্রায় ১০ একর জমিতে আখচাষ করেছেন। পৌষের শুরু থেকেই তিনি আখের গুড় তৈরি করছেন। ময়মনসিংহ, নাটোর, রাজশাহী, রংপুরের প্রায় ৮ জন কারিগর আখের রসের গুড় তৈরির কাজে নিয়োজিত রয়েছে। মাঘের মাঝামাঝি পর্যন্ত গুড় তৈরির কাজ চলবে। শক্ত গুড় ৮০ টাকা এবং ঝোলা গুড় ১শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। বিবির বাজার ছাড়াও কুমিল্লা সদরের অরণ্যপুর ও শীমপুর গ্রামেও শীতের এ সময়ে জমজমাট হয়ে উঠেছে আখের গুড় তৈরির পরিবেশ।
বিবিরবাজারের গাজীপুর এলাকায় গুড় তৈরির কারিগর ময়মনসিংহের ইসমাইল জানান, প্রতিদিন ৫শ’ টাকা মজুরি ভিত্তিতে তারা ৭/৮জন কাজ করছেন। ক্ষেত থেকে আখ কেটে খোলায় এনে প্রথমে বীজের জন্য মাথা কেটে রাখা হয়। বাকি অংশ পরিষ্কার করে মেশিনে দিয়ে রস সংগ্রহ করা হয়। কড়াইয়ে সেই রস জ্বালিয়ে তৈরি করা হয় গুড়। আখের ডলনা ও পাতা ব্যবহার করা হয় জ্বালানি হিসেবে। গুড় তৈরির পাত্রে কমপক্ষে ২০ কেজি আখের রস আগুনে গরম করে জ্বাল দেয়া হয়। তা থেকে প্রায় ৫/৬ কেজি গুড় তৈরি হয়। দুই ধরনের গুড় তৈরি করা হয়ে থাকে। একটি শক্ত আরেকটি নরম বা ঝোলা গুড়।
সদর উপজেলার গলিয়ারা ইউনিয়নের কালির বাজার গ্রামের জামাল প্রধানও আখচাষ করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। তিনি নাটোরের কারিগর দিয়েই আখের গুড় তৈরি করে থাকেন। তিনি জানান, ক্ষেতের পাশেই চুল্লি বসিয়ে গুড় তৈরি করা হয়। এগুড়ে কোন ভেজাল নেই। তাই চাহিদাও বেশি। বাজারে কমদামে আখের গুড় মিলে। তবে এসব গুড়ে রাসায়নিক কেমিক্যাল তথা চক পাউডার, ফিটকিরি, চিনি, বার্নিশ কালার, ময়দা, রং মেশানো হয়ে থাকে। কুমিল্লা অঞ্চলের গুড়ে কোনরকম ভেজাল নেই। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এখানকার কৃষক আখ চাষে আগ্রহী হবে।
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুরজিত চন্দ্র দত্ত জানান, আখ লাভজনক ফসল। এক বীজে পাঁচ বছর চাষ করা যায়। সার ও পানি কম লাগে। কৃষি বিভাগ থেকে আখ চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। কুমিল্লা জেলায় আখচাষি দিন দিন বাড়ছে। কুমিল্লার মধ্যে বরুড়া উপজেলায় বেশি আখ চাষ হয়ে থাকে। কুমিল্লা অঞ্চলের আখের তৈরি গুড় উন্নতমানের। কৃষি বিভাগের সার্বিক সহায়তায় আগামীতে কুমিল্লা জেলায় আখ চাষের আবাদ আরও বাড়বে, কেননা আখ চাষের প্রতি এখানকার চাষিদের আগ্রহ বাড়ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।