Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আবারও মেসিদের স্বপ্নভঙ্গ, শিরোপা চিলির

প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : সময়ের আবর্তে সবকিছুই পরিবর্তনশীল। শুধু অপরিবর্তনীয় আর্জেন্টিনার ফাইনালের ভাগ্য। টানা তিন বছর তিনটি বৈশ্যিক ফুটবল আসরের ফাইনালে হারতে হয়েছে আর্জেন্টিনাকে। আরো ছোট করে বললে লিওনেল মেসিকে। ব্রাজিল বিশ্বকাপের পর গেল বছর সান্তিয়াগোর সেই কোপার ফাইনাল। এক বছর পর আবারও সেই চিলির কাছে সেই টাইব্রেকার ভাগ্যে পরাজিত হয়ে চুরমার হল আর্জেন্টিনার ২৩ বছর ধরে লালিত শিরোপা।

নির্ধারিত আর অতিরিক্ত সময় গোলশূন্য থাকার পর টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো কোপা আমেরিকার শিরোপা দখলে নিলো চিলি।

দলের এই ব্যর্থতার জন্য এখন নিজেকেই দায়ী করতে হবে বার্সেলোনার তারকা ফরোয়ার্ড লিওনেল মেসিকে। টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনার প্রথম শটেই যে গোল করতে পারেননি আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। বল উড়িয়ে মারেন বারের উপর দিয়ে। পরে চিলি গোলরক্ষক ক্লাওদিও ব্রাভো রুখে দেন লুকাস বিগলিয়ার শটও।

অথচ যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত কোপা আমেরিকার এই শতবর্ষী বিশেষ টুর্নামেন্টে ফাইনালের আগে ৫ ম্যাচে আর্জেন্টিনা ও চিলি করেছিল যথাক্রমে ১৮ ও ১৬ গোল। তাদের কেউই আজ (সোমবার বাংলাদেশ সময় সকালে) নিউ জার্সির ইস্ট রাদারফোর্ডের মিটলাইফ স্টেডিয়ামের ফাইনালে জ্বলে উঠতে পারেনি।

২১তম মিনিটে ম্যাচের প্রথম ও সহজতম সুযোগটা আসে। গারি মেদেলের ভুলে বল পেয়ে যান গঞ্জালো হিগুয়াইন। এগিয়ে আসা গোলরক্ষক ব্রাভোর উপর দিয়ে তার চিপ বাঁ পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়।

২৮তম মিনিটে মেসিকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় মার্সেলো দিয়াসকে। প্রথম হলুদ কার্ডটি তিনি দেখেছিলে প্রতিপক্ষ অধিনায়ককেই আটকাতে গিয়ে। ব্রাজিলের রেফারির এই সিদ্ধান্তকে বেশি কঠোরই মনে হয়েছে।

বিরতির কিছু আগে আর্তুরো ভিদালকে ফাউলের জন্য আর্জেন্টিনা ডিফেন্ডার মার্কোস রোহোকে সরাসরিই লাল কার্ড দেখিয়ে দেন রেফারি। রেফারির এই সিদ্ধান্ত নিয়েও বিতর্ক হতে পারে।

৫৬তম মিনিটে হিগুয়াইনকে তুলে নিয়ে সার্জিও আগুয়েরোকে নামান কোচ জেরার্ডো মার্টিনো।

সার্জিও রোমেরোকে প্রথম সেভ করতে হয় ৭৯তম মিনিটে। বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়া এদুয়ার্দো ভারগাসের শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক। পাঁচ মিনিট পর ডি-বক্সের ভেতর থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে সুযোগ নষ্ট করেন আগুয়েরো।

নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে ডি-বক্সে ঢুকে পড়া জ্যঁ বোশেজুর কাটব্যাক থেকে গোল করতে পারেননি টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় সানচেস। পাল্টা আক্রমণে মেসি বল নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। এখানেও ব্যর্থ দু’দলের আক্রমনভাগ।

ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ানোয় চিলিকে খুশিই দেখালো। তখনই ফিরে আসে চিলির সান্তিয়াগোর সেই গত আসরের স্মৃতি। সেবার আর্জেন্টিনা হেরেছিল ৪-১ গোলে। মেসি প্রথম শটে গোল করলেও, ব্যর্থ হয়েছিলেন হিগুয়াইন ও এভার বানেগা।

এবার ভিদালের প্রথম শটই রোমেরো ঠেকিয়ে দেওয়ায় মনে হচ্ছিল ইতিহাস পাল্টাতে যাচ্ছে। কিন্তু মেসি দেখালেন অমার্জনীয় ব্যর্থতা। বল উড়িয়ে মারেন ক্রসবারের উপর দিয়ে!

চিলির নিকোলাস কাস্তি দ্বিতীয় শটে লক্ষ্যভেদ করেন। হাভিয়ের মাসচেরানোও বাঁ পাশ গিয়ে গোল করে আর্জেন্টিনাকে সমতায় ফেরান।

তৃতীয় শটে আরানগুইস রোমেরোকে নড়তে না দিয়েই বল জালে পাঠান। আগুয়েরোও নিচু শটে ডান কোণ দিয়ে ব্রাভোকে ফাঁকি দেন।


চতুর্থ শটে ঠান্ড মাথায় উপরের বাঁ কোণ দিয়ে বল জালে পাঠান বোশেজু। কিন্তু বিগলিয়ার শট ডানে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন ব্রাভো।

এরপর ফ্রান্সিসকো সিলভা কোনো ভুল করেননি। বল জালে পাঠিয়ে দলকে ভাসন টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের উল্লাসে।

গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনার কাছে ২-১ গোলে হেরেছিল চিলি। ফাইনালে এসে এর নির্দয় প্রতিশোধ নিল তারা।

সেই ১৯৯৩ সালে এই কোপা আমেরিকাতেই শেষবার বড় কোনো টুর্নামেন্টে জিতেছিল আর্জেন্টিনা। এর পর অপেক্ষা কেবল বেড়েছে আর্জেন্টিনার। প্রত্যাশার বাড়তি চাপই হয়ত এই বর্ধিষ্ণু অপেক্ষার কারণ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ