পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন নিকেতনে বাসায় ঢুকে ব্যবসায়ী শাহ মো. তোবারক হোসেনকে হত্যায় সরাসরি জড়িত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পশ্চিম বিভাগের গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল রোববার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন এসব তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- গোলাম রাব্বী, বাবুল হোসেন ওরফে বাবু, সোহেল প্রধান, মো. ইমন হোসেন ওরফে হাসান, মো. আলামিন খন্দকার ওরফে রিহান। এদের মধ্যে দুইজন স্বেচ্ছায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এরা হলো- গোলাম রাব্বী ও ইমন হোসেন ওরফে হাসান। গতকাল বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মইনুল ইসলাম ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
অপর তিন আসামিকে ১০ দিন রিমান্ডে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর সৈয়দ ইফতেখার হোসেন। শুনানি শেষে একই আদালত প্রত্যেকের চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডের আসামিরা হলো- বাবুল হোসেন ওরফে বাবু, সোহেল প্রধান ও মো. আলামিন খন্দকার ওরফে রিহান।
গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, বাসার নগদ মোটা অঙ্কের টাকা লুট করার উদ্দেশ্যেই ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে তোবারকের সাবেক কর্মচারী শাহিন। চাকরিচ্যুতির প্রতিশোধ নিতে অর্থ লুটের পরিকল্পনা করলেও হত্যার পরিকল্পনা ছিল না তার। কিন্তু ডাকাতির সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছুরিকাঘাতে মৃত্যু হয় ব্যবসায়ী তোবারক। গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য পেয়েছে।
অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন আরো বলেন, ব্যবসায়ী তোবারকের দোকান ও ব্যবসার কিছু অংশ দেখভাল করতো শাহিন ও শিহাব নামে দুই কর্মচারী। আর্থিক অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে তোবারক শাহিনকে বরখাস্তত করে নতুন কর্মচারী নিয়োগ করেন।
তিনি বলেন, এরপর থেকে শাহিন প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। তোবারকের প্রতিদ্বন্ধীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকে। সোহেল নামে এক ক্ষুদে ব্যবসায়ীর সঙ্গে শিহাবের কথা হয়। শিহাব জানতো তোবারক ব্যবসায়ী হওয়ায় নগদ টাকা ফ্লাটে রাখতেন। তারা সেই টাকা লুটের জন্য ডাকাতির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক চাঁদপুরের ৪ জন ও কুমিল্লার একজনকে ভাড়া করা হয়।
তিনি আরো জানান, মোহাম্মদ আলী নামে এক কেয়ারটেকার গত ১০ বছর আগে তোবারকের বাসায় মারা যান। তারই ছেলে সাজিয়ে ইমন হোসেন নামে একজনকে হাসান নাম দিয়ে তোবারকের বাসায় গত ১৭ ডিসেম্বর পাঠানো হয়। তোবারক নিজের বাসাতেই হাসানের থাকার ব্যবস্থা করেন। পাশের রুমে থাকতেন তোবারকের সহকারী সাইফুল।
হাসান প্রতিদিনের খবর শাহিনকে জানাত। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৪ ডিসেম্বর রাব্বী বাবু, হৃদয় ও শিহাব ঘটনার আগের দিন বিকেলে চকবাজার থেকে ৬টি ছুরি, স্কচটেপ ও দড়ি কিনে আনে। সন্ধ্যায় সবাই তোবারকের বাসায় রেকি করে। এরপর তারা ইমন ও রিমনের বাড্ডা এলাকার একটি মেসে অবস্থান করে।
গত ২৫ ডিসেম্বর ফজরের নামাজের সময় শান্তিনিকেতনের বাসার নিচে পৌঁছায় তারা। বাসার দারোয়ান গেট খুলে মসজিদে গেলে ইমন নিচে নামে এবং ওই ফ্লাটের ঢোকার গলির মুখ থেকে রাব্বী, বাবু, রিমন, শিহাব ও হৃদয়দের নিয়ে ৪ তলার ফ্লাটে গিয়ে রুমে অবস্থান নেয়। শাহিন ও সোহেল বাইরে অবস্থান করে। হাসান ও অন্যান্যরা ছুরি, স্কচটেপ ও দড়ি নিয়ে ভিকটিমের শয়নকক্ষে প্রবেশ করে ঘুমন্ত তোবারক হোসেন ও সহকারী সাইফুলকে বিছানায় চেপে ধরে।
ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে দুজনের হাত পা বেঁধে ফেলে। চোখে-মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। তখন বাবু নামে ভাড়াটে সন্ত্রাসীও ছুরিকাঘাতে আহত হন। ভিকটিম তোবারক নিস্তেজ হয়ে গেলে আহত সাইফুলকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে রেখে আলমারিতে থাকা নগদ টাকা লুট করে পালিয়ে যায় তারা। এরপর নর্দায় মেসে গিয়ে টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে সবাই চলে যায়।
আব্দুল বাতেন সাংবাদিকদের জানান, গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে নগদ দুই লাখ ৪২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও রক্তমাখা দড়ি। ওই ঘটনায় জড়িত শাহিন, শিহাব ও হৃদয় পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতার করতে পারলে মোট কতো টাকা লুট করা হয়, তা স্পষ্ট হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।