Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করালে ভারতে একজনও হিন্দু থাকত না : শেলডন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী ও ভাষাতাত্তি¡ক অধ্যাপক শেলডন পোলক বলেছেন, মুসলমান শাসকরা জোরপ‚র্বক ধর্মান্তরিত করালে বর্তমান ভারতে একজনও হিন্দু থাকত না। কারণ হিসেবে মুসলমান শাসকদের প্রায় ১২০০ বছর ভারত শাসন করার ইতিহাস তুলে ধরেছেন তিনি। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ের অধ্যাপক শেলডন পোলক নিজেকে ‘ইহুদি ব্রাহ্মণ’ বলে পরিচয় দেন। সংস্কৃত পারদর্শী এই অধ্যাপক হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ম‚র্তি ক্লাসিকাল লাইব্রেরি ইন্ডিয়া প্রকল্পের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। স¤প্রতি রাজস্থানের জয়পুরের সাহিত্য উৎসবে এসেছিলেন তিনি। পোলককে প্রশ্ন করা হয় যে ‘অনেকে বলেন, ইসলামি আক্রমণের পর সংস্কৃতের পতন হল, শাসকের দাপটে সবাই উর্দু, ফার্সি শিখতে ছুটলো।’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাজে কথা। তোমাদের বাংলার নবদ্বীপ বা মিথিলা সংস্কৃত ন্যায়চর্চার কেন্দ্র হয়েছিল সুলতানি আমলে।’ তিনি বলেন, ‘দারাশিকো বেদান্ত পড়ছেন বারাণসীর পÐিতদের কাছে। মুসলমান শাসকরা এ দেশে প্রায় বারোশো বছর রাজত্ব করেছিলেন। তারা জোর করে ধর্মান্তরিত করালে এ দেশে (ভারতে) একজনও হিন্দু থাকত না। তাদের উৎসাহ না থাকলে সংস্কৃতও টিকে থাকত না। ধর্মের সঙ্গে ভাষার উত্থানপতন গুলিয়ে তাই লাভ নেই।’ সংস্কৃত এবং ধ্রুপদী সাহিত্য চর্চায় ভারত কীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে জানতে চাইলে সমসাময়িক বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি ভাষার এই পÐিত বলেন, ‘চাই মুক্ত, বহু মানুষের কণ্ঠস্বরকে সম্মান করার মতো পরিবেশ। সংস্কৃতকে কোনো নির্দিষ্ট বর্ণের মানুষ সংরক্ষণ করেনি, সমাজের সব অংশের তাতে ভ‚মিকা রয়েছে।’ পোলক বলেন, ‘কোনো ডিভাইসিভ, এক্সক্লুশনারি, মেজরিটারিয়ান রাজনীতি তাই সংস্কৃতের অন্তরায়। দরকার সবাইকে নিয়ে মুক্ত আনন্দের সৃষ্টিশীল পরিবেশ। পরাজিতের বিষণ্ণতাবোধ থেকে সংস্কৃত পড়া যায় না, দরকার বহু স্বরের, বহু স্তরের আনন্দের উপলব্ধি।’ তিনি বলেন, ‘প্রথমে কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রীয় সংস্কৃত সংস্থানের খোলনলচে বদলাতে হবে। ব্রাহ্মণ, অব্রাহ্মণ, মুসলিম, দলিত সব মিলিয়ে ভারতে কতজন সংস্কৃত পড়ে? কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবু আমার ধারণা, সাড়ে সাত কোটি। সংখ্যাটা তিন কোটি হতে পারে, দশ কোটিও! এই সাড়ে সাত কোটি ছাত্র কী শেখে, কতটুকুই বা শেখে? কিচ্ছু না।’ অধ্যাপক পোলকের মতে, ‘তাদের দোষ নেই, শেখানোর মানুষ কোথায়? ফলে প্রথমেই দরকার আন্তর্জাতিক মানের একটি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ক্লাসিকাল স্টাডিজ। এদেশে এত আইআইটি, আইআইএম! সবাই ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং আর ম্যানেজমেন্ট পড়তে ছুটছে। কিন্তু ধ্রুপদী সাহিত্যচর্চার একটা কেন্দ্র নেই?’ তিনি এসবের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘এসব থাকলে সেখানে মেধার চর্চা হবে, সর্বোচ্চ মেধাবীরা পড়াবেন ও গবেষণা করবেন। তখনই দ্বিতীয় প্রজন্মের বিশেষজ্ঞা ও জ্ঞানী তৈরি হবে। এটাই সবচেয়ে জরুরি।’ ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ