পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বায়ুদূষণে রাজধানী ঢাকার যেমন বেহাল দশা; রাজনৈতিক দল হিসেবে এরশাদ প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টির অবস্থাও বর্তমানে তেমন। জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী দলটি জনমতের বিপক্ষে গিয়ে দুই দফায় জাতীয় সংসদে বিরোধী দল হয়েছে। দলের কেন্দ্র থেকে শুরু করে শেকড় পর্যায়ের নেতারা গণমানুষের রাজনীতি করার চেষ্টা করলেও কিছু নেতার সুবিধাবাদীতায় দলটি কার্যত আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনে পরিণত হয়েছে। এরশাদের মৃত্যুর পর জিএম কাদের পার্টিকে ‘গণমুখী চরিত্র’ দেয়ার চেষ্টা করলেও তা ঠেকিয়ে ক্ষমতাসীনদের ‘তল্পিবাহক দল’ হিসেবে ধরে রাখার চেষ্টা চলছে। এর মধ্যেই ২৮ ডিসেম্বর হতে যাচ্ছে জাতীয় কাউন্সিল।
জাতীয় পার্টির অনুষ্ঠেয় কাউন্সিল ঘিরে আবার শুরু হয়েছে দেবর জিএম কাদের ও ভাবি রওশন এরশাদের বিরোধ। এরশাদের মৃত্যুর পর দেবর-ভাবির বিরোধ শুরু হলে ক্ষমতার ভাগাভাগি (ভাবি রওশন এরশাদ সংসদে বিরোধী দলের নেতা ও জিএম কাদেরকে দলের চেয়ারম্যান) করে সঙ্কটের সুরাহা হয়। কিন্তু জিএম কাদের যে কোনো সময় আওয়ামী লীগের বি-টিম থেকে পার্টিকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিতে পারেন সে আশঙ্কায় আসন্ন কাউন্সিলে ক্ষমতাসীন দলের হস্তক্ষেপ চাচ্ছেন কয়েকজন সুবিধাবাদী নেতা। দলে এদের কোনো সমর্থক নেই।
এই গ্রুপ চাচ্ছেন চেয়ারম্যান পদ থেকে জিএম কাদেরকে সরিয়ে রওশন এরশাদকে বসিয়ে এরশাদের দলকে ক্ষমতাসীনদের অঙ্গ সংগঠনে পরিণত করতে। দলের নেতারা আশঙ্কা করছেন এবারের কাউন্সিলে পর্দার আড়াল থেকে প্রভাব খাটিয়ে রওশন এরশাদকে চেয়ারম্যান এবং জিএম কাদেরকে নির্বাহী চেয়ারম্যান করা হতে পারে। তবে দলটির কেন্দ্র থেকে শুরু করে শেকড় পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা কমবেশি সবাই এমন আশঙ্কা করছেন। এ জন্যই তারা দাবি তুলেছেন এবার কাউন্সিলরদের ভোটে দলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিব নির্বাচিত করা হোক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রেসিডিয়ামের এক সদস্য বলেন, পর্দার আড়াল থেকে কেউ নেতা চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে কাউন্সিলরদের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচনের দাবি তোলা হবে এবং ভোট করতে বাধ্য করা হবে।
১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠা হলেও জাতীয় পার্টি পুনর্জন্ম লাভ করে ১৯৯১ সালে মিজানুর রহমান চৌধুরীর হাত ধরে। গুলশান পার্কে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের মাধ্যমে গণমানুষের রাজনীতি শুরু করে ’৯৭ সালে এরশাদের মুক্তির পর দীর্ঘদিন গণমানুষের পক্ষে ছিল দলটি। কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদে গৃহপালিত বিরোধী দল হওয়ার পর থেকে দলটি কার্যত আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের রুপ লাভ করে। সরকারি দলের ইচ্ছা-অনিচ্ছায় কর্মসূচি পালন করে, বক্তৃতা বিবৃতি দেয়।
তবে ২০০৬ সাল থেকে স্বামী এরশাদ ও স্ত্রী রওশন এরশাদের মধ্যে বিরোধ ছিল। ২০০৬ সালে এরশাদ আওয়ামী লীগের সঙ্গে মহাজোট গঠন করলে রওশন এরশাদ বিএনপির পক্ষে অবস্থান নেন। স্বামী এরশাদকে দল থেকে বহিষ্কার করে রওশন জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন। তিনি বর্তমানে সউদী আরবে কর্মরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহকে মহাসচিব করেন। রওশন সে সময় তারেক রহমানের সঙ্গে ২৫ আসন সমঝোতা করে নির্বাচনে অংশ নেন। ওয়ান ইলেভেনের কারণে ২২ জানুয়ারির সে নির্বাচন ভন্ডুল হয়।
সুত্র জানায়, দলের কাউন্সিল উপলক্ষে গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটিসহ বেশ কয়েকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির ১০ জন নেতার সঙ্গে এ নিয়ে কথা বললে তারা জানান, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু, ফখরুল ইমামসহ কয়েকজন চাচ্ছেন জাপাকে সরকারের মুখাপেক্ষী করে রেখে ক্ষমতার সুযোগ সুবিধা নিতে। এ জন্য তারা রওশন এরশাদকে দলের চেয়ারম্যান ও জিএম কাদেরকে নির্বাহী চেয়ারম্যান করতে সরকারের হস্তক্ষেপের জন্য দৌড়ঝাপ করছেন।
কিন্তু অধিকাংশ নেতাই বলছেন, এরশাদের পর বর্তমানে জাপায় জিএম কাদেরের বিকল্প নেই। প্রয়োজনে কাউন্সিলে নির্বাচন করা যেতে পারে। চেয়ারম্যান নির্বাচনে ভোট হলে রওশন এরশাদ ১০ ভোটও পাবেন না। ক্লিন ইমেজের জিএম কাদের বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন। তবে রওশনের ঘনিষ্ট সূত্র জানিয়েছে তিনি (রওশন) নিজেও চেয়ারম্যান হতে আগ্রহী নন। দেবর জিএম কাদেরের মাথায় তার আশির্বাদের হাত রয়েছে। তবে তিনি দলের নিয়ন্ত্রণ যাতে হাতছাড়া না হয় সে জন্যই সউদী আরবে কর্মরত রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ অথবা ফখরুল ইমামকে মহাসচিব করতে চাচ্ছেন। বর্তমান মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা তার পছন্দের হলেও বিশ্বাস ভঙ্গের কারণে তার প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন না।
কাউন্সিল উপলক্ষে দলটির মহাসচিব পদে কারা আসতে পারেন তা নিয়েও আলোচনা চলছে। দলটির একটি বড় অংশ চাচ্ছেন এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব করা হোক। কিন্তু তিনি কো চেয়ারম্যান অথবা নির্বাহী চেয়ারম্যান পদের প্রত্যাশা করছেন। তবে মহাসচিব পদে মশিউর রহমান রাঙ্গা, গোলাম মসিহ, ফখরুল ইমাম, কাজী ফিরোজ রশিদ, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজুর নাম আলোচনায় রয়েছে। তবে কাউন্সিলরদের ভোটে মহাসচিব নির্বাচিত করা হলে কাজী ফিরোজ রশিদ ও অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজুর সম্ভাবনা বেশি বলে কেন্দ্রের কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন।
জানতে চাইলে দলটির প্রেসিডিয়ামের দু’জন সদস্য বলেন, পর্দার আড়াল থেকে হস্তক্ষেপ হলে রওশন চেয়ারম্যান হতে পারেন। সেটা হলে জাপার রাজনীতিতে হবে ‘শেষ পেরেক’। পরিচ্ছন্ন ইমেজের কারণে জিএম কাদেরের বিকল্প এখনো কাউকে দেখা যাচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।