প্রচন্ড শীতে ও শৈত্যপ্রবাহে দুর্ভোগে পড়েছেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। সেইসঙ্গে দেখা দিয়েছে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগবালাই। এরই মধ্যে কমলগঞ্জ উপজেলায় ঠাণ্ডাজনিত কারণে ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। প্রচন্ড ঠান্ডায় দু’দিনে শমশেরনগর ইউনিয়নের কানিহাটি, ডবলছড়া চা বাগানের নারীসহ বয়োবৃদ্ধ ৪ জন ও আলীনগর ইউনিয়নের কামুদপুর আশায়ন প্রকল্পের এক বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কুয়াশা, প্রচণ্ড ঠান্ডা ও মৃদু বাতাসে গরম কাপড়ের অভাবে চা শ্রমিক, শব্দকর পরিবার ও নিম্নআয়ের মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। খড়খুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন চা বাগান ও বস্তির নিম্নআয়ের লোকজন। ঠাণ্ডায় সর্দি, জ্বর, শ্বাসকষ্ঠ ও নিউমোনিয়া রোগের উপদ্রুবও বাড়ছে।
জানা যায়, প্রচন্ড ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার দুপুরে শমশেরনগর ইউনিয়নের ফাঁড়ি ডবলছড়া চা বাগানের সুবল চাষার ছেলে রাখাল চাষা (৪৬), আপ্পালু কূর্মীর স্ত্রী দাঙ্গামা কূর্মী (৬০) মারা যান। শনিবার সকাল ১০ টায় ডবলছড়া বাগানের রাজেন্দ্র তুলিয়ার স্ত্রী বুলেশ্বরী তুলিয়া (৬০) এবং সকাল ১১ টায় কানিহাটি চা বাগানের মিরা বীন এর ছেলে হরিয়া বীন (৬০) মারা যান। শনিবার ভোরে আলীনগর ইউনিয়নের কামুদপুর আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দা আঞ্জব আলী (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে শনিবার দিনভর কূয়াশা ও প্রচন্ড ঠান্ডা থাকায় কোথাও সূর্যের আলো দেখা যায়নি। শমসেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য কানিহাটি চা বাগানের শ্রমিক নেতা সীতারাম বীন চার জনের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রচন্ড ঠান্ডায় বয়োবৃদ্ধ এসব লোকের মৃত্যু হয়েছে। চা শ্রমিকদের গরম কাপড়ের অভাব রয়েছে বলে তিনি জানান।
শব্দকর সমাজ উন্নয়ন পরিষদের সম্পাদক উপেন্দ্র শব্দকর বলেন, উপজেলার মুন্সীবাজার, আলীনগর, আদমপুর ও পতনঊষার এলাকায় বেশ কিছু শব্দকর পরিবার রয়েছেন। আয় রোজগার কম ও পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় হিসাবে গরম কাপড়ের তীব্র সঙ্কট রয়েছে। শীতে তাদের চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। শমসেরনগর, ভানুগাছ ও মুন্সীবাজারের কয়েকজন প্রাইভেট চিকিৎসক জানান, সর্দি, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি পাওয়া যাচ্ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স্রের চিকিৎসক বিশ্বজিৎ সিংহ বলেন, ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ২ শিশু ভর্তি রয়েছে। তবে ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ চলমান রয়েছে।