পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যৌক্তিক কারণ ছাড়া আর কোনো প্রকল্পেই প্রতীকী মূল্যে খাসজমি বরাদ্দ নয়। প্রকল্পের স্বার্থে খাসজমির দরকার হলে আইনানুযায়ী মূল্য পরিশোধ করেই তা নিতে হবে। প্রতীকী মূল্যে খাসজমি পেতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে প্রতিনিয়ত চিঠি আসার কারণে এ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতীকী মূল্যে খাসজমি বরাদ্দ নেয়া নিরুৎসাহিত করার বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়কে অনুশাসন দিয়েছেন।
সাধারণত অকৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালা, ১৯৯৫-এ প্রতীকী মূল্যে বা বিনা মূল্যে বন্দোবস্ত দেয়ার কোনো বিধান নেই। তবে নীতিমালার ১০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ব্যতিক্রম সাপেক্ষে প্রতীকী মূল্যে অকৃষি খাসজমি বন্দোবস্ত অনুমোদনের এখতিয়ার সরকারপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর।
অন্যদিকে খাসজমি থেকে মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব আয়ও কমে আসছে। এসব বিবেচনা করে প্রতীকী মূল্যে খাসজমি বরাদ্দ দেয়া নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ জন্য খাসজমি বরাদ্দে জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০’ মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গত ১৪ নভেম্বর পরিপত্র জারি করে তা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। খাসজমি রক্ষার কৌশল হিসেবে বরাদ্দের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক বা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এবং প্রত্যাশী সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বিতভাবে সরেজমিনে প্রস্তাবিত এলাকা পরিদর্শন করতে হবে এবং জমির ন্যূনতম চাহিদা প্রতিবেদনে উল্লেখ করতে হবে।
ভূমি সচিব মো. মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী ইনকিলাবকে বলেন, খাসজমি থেকে মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব আয়ও কমে গেছে। এসব বিবেচনা করে প্রতীকী মূল্যে খাসজমি বরাদ্দ দেয়া নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। খাসজমি বরাদ্দে জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ভ‚মি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান দেশে কৃষি খাসজমির পরিমাণ ১১ লাখ ৫১ হাজার ১৩৬ একর। অকৃষি খাসজমি ৬ লাখ ৯২ হাজার ৫৬৮ একর। সব মিলিয়ে কৃষি ও অকৃষি খাসজমির পরিমাণ ১৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭০৪ একর। বন্দোবস্তযোগ্য কৃষি খাসজমির পরিমাণ ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৬৩০ একর এবং অকৃষি খাসজমি ১ লাখ ৭ হাজার ৯৩৩ একর। সব মিলিয়ে বন্দোবস্তযোগ্য কৃষি ও অকৃষি খাসজমির পরিমাণ ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৫৬৩ একর। কৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালা অনুযায়ী, শুধু ভ‚মিহীন পরিবার খাসজমি বরাদ্দ পাবে। প্রতি একর বা তার অংশের জন্য ১ টাকা প্রতীকী মূল্যে ৯৯ বছরের জন্য এসব জমি বন্দোবস্ত দেয়া হয়। ৯৯ বছরের আগে তা কোনোভাবেই বিক্রি বা হস্তান্তরযোগ্য নয়।
হর্টিকালচার নির্মাণ প্রকল্পের জন্য প্রতীকী মূল্যে খাসজমি বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানার পর তিনিও প্রতীকী মূল্যে খাসজমি বরাদ্দ নেয়া নিরুৎসাহিত করার বিষয়ে অনুশাসন দিয়ে বলেছেন, হর্টিকালচার নির্মাণ প্রকল্পে কি জমির মূল্য বাবদ অর্থ বরাদ্দ রাখা হয় না? প্রতীকী মূল্যে কেন দিতে হবে? প্রতীকী মূল্যে বিপুল পরিমাণ জমি বরাদ্দের কারণে একদিকে দ্রæত কমছে সরকারের খাসজমির পরিমাণ, অন্যদিকে খাসজমি বরাদ্দ থেকে আয়ও তলানিতে নেমেছে ভূমি মন্ত্রণালয়ের। এ অবস্থায় মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যৌক্তিক কারণ ছাড়া আর কোনো প্রকল্পেই প্রতীকী মূল্যে খাসজমি বরাদ্দ দেয়া হবে না। প্রকল্পের স্বার্থে খাসজমির দরকার হলে আইনানুযায়ী মূল্য পরিশোধ করেই তা নিতে হবে। প্রতীকী মূল্যে খাসজমি পেতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে প্রতিনিয়ত চিঠি দেয়া হয়েছে। সেই চিঠি আমলে নিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দও দেয়া হচ্ছে। এতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের হাতে থাকা খাসজমির পরিমাণ অনেক কমে গেছে। অন্যদিকে খাসজমি থেকে মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব আয়ও কমে আসছে। এসব বিবেচনা করে প্রতীকী মূল্যে খাসজমি বরাদ্দ দেওয়া।
রুলস অব বিজনেস-১৯৯৬ অনুযায়ী, খাসজমি রক্ষণাবেক্ষণ, উন্নয়ন ও অবৈধ দখল উচ্ছেদসহ ব্যবস্থাপনার পুরো দায়িত্ব ভূমি মন্ত্রণালয়ের। এসব জমি উন্নয়ন, সংরক্ষণ এবং এ-সংক্রান্ত মামলা আদালতে লড়তে বিপুল অর্থের প্রয়োজন হয়। বাজেট থেকে সেই পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ পায় না ভ‚মি মন্ত্রণালয়। অধিগ্রহণের নিয়ম অনুযায়ী ন্যায্যমূল্যে খাসজমি বরাদ্দ দিয়ে পাওয়া রাজস্বের মাধ্যমে সেই প্রয়োজন মেটানো হয়। প্রথম প্রথম গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রকল্পে প্রতীকী মূল্যে খাসজমি বরাদ্দ দেওয়ার পর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, দপ্তর থেকে প্রতীকী মূল্যে খাসজমি বরাদ্দের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে আবেদনের প্রবণতা অনেক বেড়েছে। এসব ক্ষেত্রে প্রকল্পের অনুকুলে জমি কেনা ও অধিগ্রহণ করার প্রয়োজনীয় অর্থের বরাদ্দও রাখা হয় না।
ভূমিহীন পরিবার বলতে কৃষির ওপর নির্ভরশীল কৃষি জমিহীন পরিবারকে বোঝাবে। এ ছাড়া বসতভিটাহীন, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও নদী ভাঙনকবলিত পরিবারও ভূমিহীন পরিবার হিসেবে এসব জমি পাওয়ার অধিকারী হবে। তবে বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তি ভূমিহীন নয় প্রমাণিত হলে বন্দোবস্ত বাতিল করা হবে। অথচ বাস্তবে তা প্রতিপালন হচ্ছে না। প্রভাবশালীরা জেলা প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় ভূমিহীন সেজে নিজেদের নামে এসব খাসজমি বন্দোবস্ত নিচ্ছে। জেলা প্রশাসন অফিস ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে প্রভাবশালীরা জমি বন্দোবস্ত নিয়ে বছরের পর বছর দখল করে রেখেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।