পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত এবং দূষণ রোধে সারাদেশে ৪৪ হাজার নদী, খাল ও অন্যান্য অবৈধ স্থাপনার তালিকা প্রস্তুত সম্পন্ন হয়েছে। আগামী সোমবার থেকে এসব নদী ও খাল দখল মুক্ত ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে মাঠে নামছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি পর্যায়ক্রমে ১১ হাজার নদী ও খাল খননের কাজও শুরু হয়েছে। এর আগে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন সারাদেশে নদী দখলদারদের একটি তালিকা প্রকাশ করে। তালিকা অনুযায়ী দেশের ৬১ জেলায় দখলদারের সংখ্যা ৪৬ হাজার ৭৪২ জন। ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় নদী দখলদার ৯৫৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরাসরি উপস্থিত থেকে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন এবং প্রত্যেক জেলার জেলা প্রশাসন সহযোগিতা করবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ এবং নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং সারাদেশের জেলা প্রশাসকরা উচ্ছেদ অভিযানে থাকবেন বলে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ইনকিলাবকে বলেন, সারাদেশে নদীসহ ৪৪ হাজার অবৈধ স্থাপনার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কাজ আগামী ২৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু করা হবে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের তালিকাও কাজে লাগানো হবে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার ইনকিলাবকে বলেন, দেশের নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত এবং দূষণ রোধে কাজ শুরু হচ্ছে। এর মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ, নদ-নদী-খাল দখলকারীদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, পাশাপাশি পর্যায়ক্রমে ১১ হাজার নদী ও খাল খনন করা হচ্ছে। আর বিভিন্ন জেলায় অবৈধ দখলে থাকা বাঁধগুলো উদ্ধারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৯ হাজার ২২৮ দশমিক ৪৫৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে অবৈধ দখলে রয়েছে তা উদ্ধার কাজ শরু হচ্ছে।
জানা গেছে, বর্তমান সরকার পানি আইন-২০১৩ প্রণয়ন করেছে। আইন মন্ত্রণালয়ে আইনের বিধি তৈরির কাজ শেষের পথে। দ্রুত এই আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন শুরু করবে।
সরকারের ১০০ বছর মেয়াদি ডেল্টা প্ল্যান অনুসারে নদ-নদী, খাল ও জলাশয় দখল ও দূষণমুক্তকরণ, সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য মাস্টারপ্ল্যান তৈরির জন্য যে বিভাগীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পর্যটন মন্ত্রণালয়, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ, স্পারসো, বন বিভাগ, সিটি করপোরেশন পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। কমিটিকে নদ-নদী, খাল ও জলাশয় অবৈধভাবে দখল ও দূষণমুক্ত করা ও উন্নয়নের জন্য ক্রাশ, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করতে বলা হয়েছে।
এ জন্য দেশের ১১ হাজার নদী ও খালের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৪৪৮টি খনন, দ্বিতীয় পর্যায়ে দুই হাজার ১০০ এবং পর্যায়ক্রমে সবকটি খনন। পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনাকে সক্রিয় করতে পারলে দেশের জিডিপি ১০ শতাংশে পৌঁছে যাবে। এছাড়া পানি সম্পদের উন্নয়ন পরিকল্পনায় বিদ্যমান সকল সুইস গেট অপসারণ করা, পানির চলাচল ব্যবস্থাপনার জন্যে রেগুলেটর থাকবে এবং নতুন রেগুলেটর নির্মাণ করবে। এছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় সারাদেশে ২২টি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৭ হাজার কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে এবং ১০ লাখ হেক্টর জমির সেচ কাজ সম্পন্ন হচ্ছে। নদ-নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি শহরের মধ্যে এই নদীর উভয় পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শুরু করা হবে। শত বছরের ডেল্টা প্লানে দেশের ছয়টি ভৌগলিক এলাকার মধ্যে একটি হচ্ছে জলাশয় এলাকা যাকে কেন্দ্র করে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক কর্মযজ্ঞ সমাধা হবে।
জানা গেছে, হাইকোর্টের ১৩৯৮৯/২০১৬ নম্বর রিট পিটিশনের আদেশ সুষ্ঠু বাস্তবায়নে জন্য জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের এক সভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নদ-নদীর অবৈধ দখলদারদের এ তালিকা জনস্বার্থে প্রকাশ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক ও আহ্বায়ক এবং জেলা নদী রক্ষা কমিটির কাছ থেকে সংশ্নিষ্ট জেলার এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ তালিকা একটি চলমান প্রক্রিয়া। কারও কাছে তালিকায় অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হলে কমিশনকে অবহিত করা হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তালিকায় নোয়াখালী জেলায় সর্বোচ্চ তিন হাজার ৫৮৩ জন দখলদারের নাম রয়েছে। সর্বনিম্ন দখলদারের জেলা লালমনিরহাটে ১৪ জনের নাম তালিকায় রয়েছে।
এ ব্যাপারে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য আলাউদ্দিন ইনকিলাবকে বলেন, চিহ্নিত অবৈধ নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে সব জেলার জেলা প্রশাসকে বলা হয়েছে।
জেলাগুলো হচ্ছে, ঢাকা বিভাগের গাজীপুর জেলা, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ, রাজবাড়ী, নরসিংদী, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ এবং শরীয়তপুর, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলা নদী দখলদার তালিকা রয়েছেন। রংপুর বিভাগের নীলফামারী জেলা, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, রংপুর, লালমনিরহাট এবং দিনাজপুর জেলা নাম তালিকায় আছে। চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী জেলা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, ল²ীপুর, খাগড়াছড়ি, ফেনী, কক্সবাজার, চাঁদপুর, বান্দরবান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাম তালিকায় রয়েছে। রাজশাহী বিভাগের পাবনা জেলা, বগুড়া, রাজশাহী, নওগাঁ, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর এবং সিরাজগঞ্জ জেলা নাম তালিকায়। খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলা, নড়াইল, মেহেরপুর, মাগুরায় কুষ্টিয়া, খুলনা, ঝিনাইদহ ও যশোর জেলার নদী দখলদারের নাম তালিকায় রয়েছে। বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, বরিশাল এবং বরগুনার দখলদারের নাম তালিকায় রয়েছে। ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনা, শেরপুর ও জামালপুর জেলা নাম তালিকায় রয়েছে। সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট এবং হবিগঞ্জে নাম তালিকায় আছে। এসব জেলায় পর্যায়েক্রমে অভিযান পরিচালনা করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।