Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কক্সবাজার সৈকতের সেই কটেজে সীলগালা

শত কোটি টাকার সরকারী ভূমি উদ্ধার

কক্সবাজার থেকে বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১১:৩২ এএম

কক্সবাজার সাগর পাড়ের পেঁচারদ্বীপ নামক নির্জন এলাকায় অবৈধভাবে খাস জমিতে গড়ে তোলা একটি কটেজে অস্ট্রেলিয়ার তরুণীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় কটেজটি সীলগালা করে দেয়া হয়েছে। অবৈধভাবে দখলে এক একর সরকারি জমিও উদ্ধার করা হয়েছে এসময়। তবে মুল হোতা এখনো ধরা ছুঁয়ার বাইরে গেছে।

বুধবার ১৮ ডিসেম্বর বিকালে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব উপসচিব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসারের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে এক একর সরকারি জমি উদ্ধার করা হয়।

আলোচিত সমালোচিত মারমেইড রিসোর্টের মালিক আনিসুল হক সোহাগ কক্সবাজার রামু উপজেলার পেঁচার দ্বীপ এলাকায় খাতিয়ান ভুক্ত জমির পাশাপাশি বেশ কিছু সরকারি খাস জমি দখলে রাখার অভিযোগসহ অবৈধ ব্যবসার করার অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিনের। এর প্রেক্ষিতে প্রশাসন অভিযানে নেমেছে বলে জানা গেছে।

সেখানে 'গুড ভিবে’ নামক কটেজটিতে অষ্ট্রেলিয়ার তরুণীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ২ আসামি ১৮ ডিসেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট জেরিন সুলতানা ২ আসামির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন।

রামু থানায় দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামি এবং ‘গুড ভিবে’ কটেজটির নৈশ প্রহরী আনসার উল্লাহ (২৪) ও আবদুল গফুর (২০) জবানবন্দিতে বলেন, তারা দুইজনই স্থানীয় বাসিন্দা। সরকারি খাস জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত কটেজটির মালিক কাইমুল হক শামীমের তারা পুর্ব পরিচিত। তারা চারজনে মিলে ওই বিদেশি তরুণীকে ধর্ষণ করার চেষ্টা চালায়। ওই ঘটনায় বেলাল উদ্দিন নামের এক আসামি এখনও পলাতক রয়েছে।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আতিক উল্লাহ আদালতে ২ আসামির জবানবন্দি প্রদানের তথ্য নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে জানান, নারী ও শিশু নির্যাতনের ধারায় করা মামলাটিতে কটেজ মালিক কাইমুল হক শামীমকে আসামি করা না হলেও এমন জঘন্য অপরাধজনক ঘটনাটি তার কারণেই ঘটেছে বলে অভিয়োগ আনা হয়েছে। আদালত জবানবন্দি গ্রহণের পর আটক কটেজ মালিক শামীমসহ তিনজনকেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বুধবার ১৮ ডিসেম্বর বিকালে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসারের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযান চালান সেখান। সাগর পাড়ের রেজু খালের চরভরাট সরকারি খাস জমি অবৈধভাবে দখল করেই এলাকাটিতে কমপক্ষে ১০টি কটেজ নির্মাণ করে রমরমা পর্যটন ব্যবসা চালানো হচ্ছিল অনুমোদন ছাড়া। সরকারি জমিতে এসব কটেজ নির্মাণ করার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গতকাল বিকালে সেখানে উচ্ছেদ কার্যক্রমও চালানো হয়। এতে এক একর সরকারি জমি উদ্ধার করে সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।

মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এলাকা পরিদর্শন করে আমরা দেখতে পেয়েছি-রেজু খালের তীরে সরকারি খাস জমি দখলে নিয়ে তিন ভাই মিলে এসব কটেজ নির্মাণ করে অবৈধভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।’ তিনি জানান, কটেজগুলো একেতো সরকারি খাস জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে, তদুপরি কটেজ ব্যবসার কোন লাইসেন্স এবং সরকারি কোনো অনুমতিও নেওয়া হয়নি। যে কটেজটিতে গত রবিবার রাতে ওই ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে, সেটি পুলিশ আগেই সিলগালা করে দিয়েছে।

এলাকাবাসী গণমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন, চট্টগ্রামের একটি শিল্প গ্রুপের সাবেক কর্মচারী নবিউল হক চৌধুরীর ৫ পুত্র কক্সবাজারে পর্যটন ব্যবসা করেন। এরা তিন ভাই আনিসুল হক সোহাগ, শাহিনুল হক শামীম, কাইমুল হক শ্যাম পেঁচারদ্বীপ এলাকায় কমপক্ষে ২/৩ একর সরকারি খাস জমি দখল করে এই কটেজ নির্মাণ করেছেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সীলগালা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ