মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
তিনি কি সার্সেই ল্যানিস্টার: একই রকম শীতল, রূঢ় আর ভয়ঙ্কর? না কি সানসা স্টার্ক: মহান, দীর্ঘ দুর্ভোগপীড়িত আর সত্যনির্ভর?
মিয়ানমারের অং সান সু চি - জেনারেলের কন্যা যিনি নড়বড়ে একটা রাষ্ট্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন - যিনি সামরিক বাহিনীর শত্রæ থেকে তাদের তল্পিবাহক বা তার চেয়েও নিম্নপর্যায়ের - মদদদাতা হয়ে উঠেছেন।
ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) বিচার প্রক্রিয়া যখন এগুচ্ছে এবং মিয়ানমার যখন আবারও বিশ্বের নজরদারিতে এসেছে, অনেকেই তখন প্রশ্ন তুলেছেন কিভাবে তিনি এতটা নিচে নামতে পারলেন?
নিজের দেশের একটা অশুভ শক্তিকে তিনি মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালাতে দিয়েছেন, এবং সেটা তিনি স্বীকার করতে অস্বীকার করছেন।
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর ৭৩০,০০০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে। সু চি-কে এই কারণেই হেগে আসতে হয়েছে, এবং গণহত্যার অভিযোগ থেকে সরকারকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে হচ্ছে।
একই সময়ে ১০ রোহিঙ্গাকে বর্বরভাবে হত্যা এবং তাদেরকে গণকবর দেয়ার বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের কারণে রয়টার্সের দুজন সাংবাদিককে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের মে পর্যন্ত কারারুদ্ধ করে রাখে সরকার। যদিও এই দুই সাংবাদিক তাদের রিপোর্টিংয়ের জন্য পুলিৎজার পুরস্কার পান।
কিন্তু সার্সেই আর সু চির মধ্যে প্রতিতুলনাকে অস্বীকার করাটা কঠিন। দুজনেই নির্বিকার, দুর্ভেদ্য প্রকৃতির এবং পুরুষ প্রধান একটা ক্ষেত্রে উভয়েই তারা সফল হয়েছেন। একবার ক্ষমতায় যাওয়ার পর উভয়েই তারা সেটা ধরে রাখার জন্য যে কোন কিছু করতে প্রস্তুত।
সার্সেইয়ের যেটা নেই, সু চির সেটা আছে – নিজের জনগণের মধ্যে এখনও জনপ্রিয় তিনি। আইসিজেতে বিচার প্রক্রিয়ার আগে মিয়ানমারে তার সমর্থনে যে সমাবেশ হয়েছে, সেটাকে ইঙ্গিত হিসেবে ধরলে অর্থটা তেমনই দাঁড়ায়।
বোতাহতুং টাউনশিপের এক চা বিক্রেতা বললেন: “আমি অং সান সু চি’র সাথে আছি। তিনি একজন ভালো নেতা এবং দেশের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন। আইসিজে আদালতে হাজির হয়ে তিনি দেশের নেতা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন”।
আইসিজে যদি মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রায় দেয়ও - তারপরও এটার কারণে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ হবে না। প্রথমত, এই আদালতের আদেশ কার্যকরের কোন শক্তি নেই। আর তাছাড়া মিয়ানমারে বৌদ্ধ-মুসলিম বিভাজনটা অনেক গভীর।
সু চির ব্যর্থতাটা এখানেই সবচেয়ে গভীর। তার আর তার দেশের যে গভীর সমস্যা সেটা কেউই অস্বীকার করে না। কিন্তু মিয়ানমারের জাতিগত বিভাজনটা দ‚র করার জন্য তার নৈতিক শক্তিটাকে ব্যবহার করা উচিত ছিল, সেখানে তার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত পরিণতি যা-ই হোক না কেন। তার বদলে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, সুবিধাবাদী অন্যান্য রাজনীতিবিদদের সাথে তার কোন পার্থক্য নেই। তার পায়ের নিচের মাটিও নরম।
সব জাতিরও অশুভ দিক থাকে। নেতাদের চ্যালেঞ্জ হলো এই অশুভ শক্তিকে বিনষ্ট করা। প্রবল সমর্থকরা হলো তারা যাদেরকে এই ধরণের প্রচারণায় কাজে লাগানো যায়। সু চি এখানটাতে পুরোপুরি ব্যার্থ হয়েছেন।
তাহলে মিয়ানমারের গেম অব থ্রৌনসে সু চি কি সের্সেই না কি সানসা? সম্ভবত তিনি ডায়েনারিস টারগারিয়েন, যে খালিসিকে সবাই ভালোবেসেছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত যিনি তার ভ‚মিকে জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। সূত্র : এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।