পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হাতে লাল সবুজের পতাকা আর রং-বেরংএর ফুল, হৃদয়ে গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা নিয়ে লাখো মানুষের ঢল সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে। যাদের রক্তের বিনিময়ে দুই যুগের পাকিস্তানি শাসনের অবসান ঘটেছিল, বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটেছিল বাংলাদেশের, মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয়ের ৪৮তম বার্ষিকীতে সেই বীর সন্তানদের স্মরণ করছে জাতি। গতকাল সোমবার সকাল ৬টা ৩৬মিনিটে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে সেই মুক্তিসেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল এ সময় সামরিক কায়দায় সালাম জানায়। শহীদদের স্মরণে বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। কিছুটা সময় নীরবে দাঁড়িয়ে জাতির বীর সন্তানদের স্মরণ করেন প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসাবে পরে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে আবারও স্মৃতিসৌধে ফুল দেন শেখ হাসিনা। জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীও শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, বিচারপতি, তিন বাহিনীর প্রধান, কূটনীতিকরা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের শীর্ষ নেতারা শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর সকাল ৬টা ৫০মিনিটে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধ এলাকা ত্যাগ করার পর সর্বসাধারনের জন্য খুলেদেয়া হয় মূল ফটক।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির কারণে স্বাধীনতাকে এখনো সুসংহত করা যায়নি। রাজাকারদের উত্তরসূরিদের সঙ্গেও কোনো আপস নেই। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি ও তাদের প্রেতাত্মারা সক্রিয় আছে ষড়যন্ত্র করছে। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ও সা¤প্রদায়িক অপশক্তিকে নির্মূল করব।
সকাল ১০টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তার সাথে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. মঈন খান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনসহ দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে গণতন্ত্রকে মুক্ত করা হবে। যে চেতনার ভিত্তিতে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, যে চেতনায় দেশ স্বাধীন করেছিলাম, সেই চেতনার ভিত্তিতে দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্রকে মুক্ত করবো ইনশাল্লাহ। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। তিনি আজকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি, দেশের গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হলে তাকে মুক্ত করতে হবে।
ভিআইপিদের শ্রদ্ধা জানানোর পর জাতীয় স্মৃতিসৌধ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। পরে লাল সবুজের পতাকা আর ফুল হাতে জনতার ঢল নামে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে। ফুলে ফুলে ভরে উঠতে থাকে শহীদ বেদী। তবে সকালে দিকে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে দর্শনার্থীর সংখ্যা।
পযায়ক্রমে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পু®পস্তবক অর্পন করেছেন ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গণফোরাম, জিএম কাদেরের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি, আসম রবের নেতৃত্বে জেএসডি, হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে জাসদ, মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বে নাগরিক ঐক্য, এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরীর নেতৃত্বে গণদলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ফুল দিয়ে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলানগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি কর্ম কমিশন, পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কর্মকর্তাগণ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দল, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা জেলা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেডিসি), বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, সোনালী ব্যাংক, সচেতন নাগরিক কমিটি, বিআইডবিøউটিসি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন, আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তর, বাংলাদেশ জাতীয় যাদুঘর, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, গণ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ ঢাকা জেলা কমিটি, বাংলাদেশ পশু সম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিএলআরআই), বাংলাদেশ লোক-প্রশাসন প্রশিক্ষন কেন্দ্র (বিপিএটিসি), বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা চিকিৎসক পরিষদ, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট, শেখ হাসিনা জাতীয় যুব কেন্দ্র, সাভার প্রেসক্লাব, আশুলিয়া প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা একাডেমী, নজরুল ইন্সটিটিউট, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ গামের্ন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন, জাতীয় সমাজ তান্ত্রিক দল (জাসদ আম্বিয়া), শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ), কর্মজীবী নারী, বাংলাদেশ তৃণমূল গামের্ন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এছাড়াও ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিট, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টাস এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর), ঢাবি কর্মচারী সমিতি, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, টেকনিক্যাল এমপ্লয়ীজ এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, গণফোরাম, বিমান শ্রমিক লীগ, ইঞ্জিনিয়াস ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন, বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, বঙ্গবন্ধু ফিসারিজ পরিষদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), বঙ্গবন্ধু পরিষদ, জাতীয় বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ খৃষ্টান এসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এদিকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় বাংলাদেশ দূতাবাসে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে এবং পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।
জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন হাইকমিশনার মুহাম্মদ শহীদুল ইসলাম। পতাকা উত্তোলন শেষে বীর শহীদদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। কুয়ালালামপুর থেকে হাইকমিশনের নির্ভরযোগ্য সূত্র এতথ্য জানিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।