বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
একাধিক জন্মসনদ ঘিরে ধুম্রজাল সৃষ্টির সেই মোজাম্মেল হোসেন তৌফিক অবশেষে ভূমি অফিসের তহশীলদার থেকে পদোন্নতি পেয়ে সেটেলমেন্ট অফিসার (কানুনগো)। কুমিল্লা নগরীর ছোটরা মধ্যপাড়ার ওই বাসিন্দার একাধিক সনদের বিষয়ে একই এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট মো. ইমাম হোসেনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক তদন্তের জন্য রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টরকে নির্দেশ দেন। তদন্ত প্রতিবেদনে জন্ম সনদের অপব্যবহারের বিষয়টি ওঠে এসেছে। জানা যায়, সরকারি সার্ভিস বুকে মোজাম্মেল হোসেনের জন্ম তারিখ ১৯৬৪ সালের ১৯ এপ্রিল উল্লেখ রয়েছে। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন থেকে ওই তারিখের জন্মসনদ ইস্যু হয়েছে ২০১৩ সালের ১২ মার্চ। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ২নং ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় ভোটার হিসেবে মোজাম্মেল হোসেনের নাম রয়েছে। ভোটার নং-১৯১৬৮৩০০৫০৫০। ওই ভোটার তালিকায় তার জন্ম তারিখ উল্লেখ রয়েছে ১৯৬৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন থেকে ওই জন্ম তারিখ উল্লেখ করা জন্মসনদ ইস্যু করা হয় ২০১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর। একই বছরে তহশীলদার মোজাম্মেল ১৯৫৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর উল্লেখ করে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন থেকে আরেকটি জন্মসনদ গ্রহণ করেন। তার একাধিক সনদ গ্রহণের ঘটনায় ছোটরা মধ্যপাড়া এলাকার ইমাম হোসেনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর বিষয়টির সতত্য যাচাই ও তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কুমিল্লার রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর জাকিয়া আফরিনকে নির্দেশ দেন।
রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর এল.এ শাখার ৯৩নং স্মারকমূলে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক বরাবরে পাঠানো তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন মোজাম্মেল হোসেনের আবেদনের ভিত্তিতে তিনটি জন্মসনদ ইস্যু করা হয়েছে। যদি প্রথম সনদে অনিচ্ছাকৃতভাবে ভুল হয়ে থাকে তাহলে বিষয়ে উল্লেখ করে এসএসসি সার্টিফিকেট ও চাকরি বইয়ের সাথে মিল রেখে দ্বিতীয়টি নেয়া প্রয়োজন ছিল। তৃতীয় সনদ নেয়ার বিষয়টি কিছুটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ। ১৯৫৬ সালের ১ সেপ্টেম্বরের জন্মসনদটি তিনি সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বরাবর ফেরত প্রদান করেন এবং অঙ্গীকার দেন পূর্বে প্রদত্ত সনদগুলো তিনি কোথাও ব্যবহার করবেন না। অথচ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাতিল করা সনদ ব্যবহার করার অভিযোগ প্রমানিত হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয় সদর উপজেলা ভূমি অফিসের রেকর্ড বইয়ে কিছু কাটাছেড়া রয়েছে, ইউনিয়ন ভূমি অফিসে রক্ষিত বালাম বইয়ের ৪৭নং খতিয়ানের পাতাটি স্পষ্ট তবে উক্ত পাতার হাতের লেখার সাথে অন্য পাতার হাতের লেখার মিল পাওয়া যায়নি। এক্ষেত্রে ঘষামাজা হয়ে থাকতে পারে বলে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে প্রতিয়মান হয়েছে।
রেভিনিউ কালেক্টরের তদন্ত প্রতিবেদন এবছরের ৫ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক বরাবর পৌঁছানোর পরও উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে জানা যায়নি। বরং সম্প্রতি কুমিল্লার নাঙ্গলকোট ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা থেকে সেটেলমেন্ট অফিসার (কানুনগো) হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে খুলনা বিভাগে বদলি হয়েছেন।
এ ব্যাপারে মোজাম্মেল হোসেন তৌফিকের বক্তব্য নেয়ার জন্য তার মোবাইলে বার বার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অভিযোগকারী ইমাম হোসেন জানান, ওই ব্যক্তি তার জন্মের একাধিক সনদ গ্রহণের পিছনে অসৎ উদ্দেশ্য ছিল। এ ধরণের ব্যক্তিরা ভূমি অফিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সাধারণ মানুষের জন্য কোনভাবেই নিরাপদ নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।