পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পরিবেশ ও বায়ুদূষণে বিশ্বের সব শহরকে পেছনে ফেলে দূষণে শীর্ষে চলে এসেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। গতকাল রোববার দুপুরে এই প্রতিবেদন লেখার সময়েও দূষণে সবার চেয়ে এগিয়ে ছিল শহরটি। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এয়ার ভিজ্যুয়ালের তথ্যানুসারে, ১৫ ডিসেম্বর সকাল পৌনে ৯টায় ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল ২৩৭ পিএম। একই সময় ২৩৬ পিএম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল মঙ্গোলিয়ার উলানবাটোর।
বায়ুদূষণের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এয়ার ভিজ্যুয়ালের তথ্য অনুযায়ী ১৯৭ পিএম নিয়ে আফগানিস্তানের কাবুল তৃতীয়, ১৯১ পিএম নিয়ে পাকিস্তানের লাহোর চতুর্থ, ১৮৩ পিএম নিয়ে চীনের চেংদু পঞ্চম এবং ১৮২ পিএম নিয়ে ষষ্ঠ ছিল ভারতের রাজধানী দিল্লি শহর।
তবে কয়েক ঘণ্টা পর গতকাল দুপুরে রাজধানী ঢাকা শহরে বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল ১৯০ পিএম। এরপরে চলে আসে চীনের চেংদু ও উহান। চার নম্বরে ছিল ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। আর উলানবাটোর ১১ নম্বরে।
গবেষণা অনুযায়ী বায়ুদূষণের প্রথম ১০টি শহরের মধ্যে চীনের চারটি ও ভারতে তিনটি শহর রয়েছে। দূষণের শহরের মধ্যে ঢাকার পার্শ্ববর্তী পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা রয়েছে পাঁচ নম্বরে।
পরিবেশবিদদের মতে ২৩৭ পিএম বায়ুদূষণ খুবই অস্বাস্থ্যকর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বায়ুদূষণ এতো বেশি মাত্রায় হলে নাগরিকদের জন্য নানা ধরণের সতর্কতা জারি করে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদফতরের ওয়েবসাইটে এ ধরনের কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।
এরআগেও ঢাকার দূষণের বিপজ্জনক পর্যায়ের ভয়াবহতা তুলে ধরেছিল বৈশ্বিকভাবে বায়ুদূষণ পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়াল। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা ভয়াবহ। ঢাকার বায়ুদূষণ পরিস্থিতি সম্পর্কে গবেষকেরা বলছেন, চলতি মাসে এ পর্যন্ত আট দিন (দিনের বেশির ভাগ সময়) ঢাকা ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহর। এয়ার ভিজ্যুয়াল রাজধানী ঢাকার ৭টি এলাকার বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ করে। এতে দেখা যায় এক সপ্তাহ ধরে ঢাকা শহরের বায়ুর মান সবচেয়ে খারাপ ছিল কারওয়ান বাজার এলাকায়। এরপরই মোহাম্মদপুর ও গুলশান এলাকা। এর বাইরে উত্তরা, মিরপুর ও নর্দ্দা এলাকার বায়ুর মানও বেশ খারাপ। এলাকাভিত্তিক বায়ুর মানের রকমফের থাকলেও সামগ্রিকভাবে রাজধানী ঢাকার বেশির ভাগ এলাকার বায়ু অস্বাস্থ্যকর বলে জানান গবেষকেরা।
বাংলাদেশও বায়ুদূষণ পর্যবেক্ষণ করেছে। কয়েকদিন আগে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে দেশের ১১টি শহরের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, সাভার, ময়মনসিংহ, রংপুরের বায়ুর মান খুবই অস্বাস্থ্যকর। তুলনামূলকভাবে চট্টগ্রামের বায়ুর মান কিছুটা ভালো ছিল। খুলনা ও কুমিল্লার বায়ুর মান চট্টগ্রামের চেয়ে খারাপ ছিল। বায়ুর মান অপেক্ষাকৃত ভালো ছিল সিলেট শহরে।
বায়ুদূষণের কারণে ঢাকা শহরে নাগরিকদের মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করেছে। বিশেষ করে শিশুদের স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাস বিঘিœত হওয়ার পাশাপাশি নানা শারীরিক জটিলতা দেখা দিচ্ছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, বাতাসে ভারি ধাতু ও স‚² বস্তুকণা বেড়ে গেলে ক্যানসার, শ্বাসকষ্ট, স্নায়ুজনিত সমস্যা বেড়ে যায়, বুদ্ধিমত্তা কমে যায়। দেশের বায়ুদূষণের অবস্থা একদিকে দিন দিন খারাপ হচ্ছে অথচ বায়ুদূষণের উৎস দিন দিন বাড়ছে। বায়ুদূষণ রোধে মূল দায়িত্ব পরিবেশ অধিদপ্তরের। দূষণ ঠেকাতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করেছে অধিদপ্তর; কিন্তু তা দ‚ষণ কমাতে খুব বেশি কার্যকর হচ্ছে না। যানবাহনের দূষণ নিয়ন্ত্রণেও কার্যকর উদ্যোগ নেই বলে জানান পরিবেশকর্মীরা। আর দূষণের অন্যতম উৎস নির্মাণকাজের ধুলা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগও তেমন নেই।
এর আগে বাংলাদেশে বায়ুদূষণের উৎস নিয়ে ২০১৯ সালের মার্চে একটি গবেষণা প্রকাশ করে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংক। তাতে দেখা গেছে দেশে বায়ুদূষণের প্রধান তিনটি উৎস হচ্ছে ইটভাটা, যানবাহনের কালো ধোঁয়া ও নির্মাণকাজ। ৮ বছর ধরে এই তিন উৎস ক্রমেই বাড়ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।