বিজয় দিবসের কবিতা
তুমি বাংলা ছাড়ো আবদুল হাই শিকদাররক্তচোখের আগুন মেখে ঝলসে যাওয়া আমার বছরগুলোআজকে যখন হাতের মুঠোয়কণ্ঠনালীর খুনপিয়াসী
আরাফাত বিন আবু তাহের
বাংলাদেশ আজ স্বাধীন
বাংলাদেশের সবুজ মাঠে, বিশাল নদীর প্রবল ঢেউয়ে
ব্যালকনিতে, ছাদের উপর, উঠোন-বাড়ি-সারা দুপুর
পুরো দিনই, পরের সকাল,- নয়টা মাসেই যুদ্ধ হলো।
যুদ্ধ ছিলো বুকের ভেতর- ক্ষুব্ধ ছিলো একটি সাগর
উল্কা বেগে বেরিয়ে আসার খুঁজতেছিলো সময় সুযোগ একাত্তরে কাঁপছিলো দেশ, জ্বললো শহর-
আগুন গেলো সেতারাদের গাঁয়ের ভেতর
বুকের ভেতর বুলেট গেলো, মাথার খুলি কুড়িয়ে পেলো
বাগের ভেতর- বোনের দেহে রক্ত ছিলো।
মায়ের বুকে দুঃখের আগুন ছেলের দেহ ঝরার সময়
রক্ত ছিলো লাল সুরুজে রক্ত ছিলো চোখের ভেতর
নয়টা মাসই ঢেলে দিলো দামাল ছেলে দলে দলে
মুক্তিসেনার মুখে ছিলো আগুন আগুন আগুন স্লোগান
মুহুর্মুহু গুলি গেলো তাজা দেহের শ্রেষ্ঠ প্রাণে।
যুদ্ধ ছিলো পুরো দেশে, মাঠের ওপার ঝোপের পাশে রাস্তা ধরে এগিয়ে গেলে তারামনের ঘরের ভেতর হানাদারের বুটের আওয়াজ ঠুকে গেলো-
কানের ভেতর থমকে দিলো সুরের মিছিল।
মায়ের চোখে মেয়ের মরা লাশের দেহ খুবলে খেলো হারাম দলের পাক হায়েনা হাসতেছিলো।
বাংলাদেশের প্রাণের উপর এমন করে শুরু হলো- অন্ধকারকে তাড়িয়ে দিয়ে আলোর দিকে এগিয়ে চলার।
বাংলা মায়ের স্বাধীনতার শুরু হলো যুদ্ধ দিয়ে-
যুদ্ধ দিলো স্বাধীনতা, দেশকে দিলো মুক্তি এনে-
পঁচিশ ছিলো কালো রাতের ছাব্বিশে তার ঝলকে আলো-
স্বাধীনতার সেই ঘোষণা ‘বাংলাদেশ আজ স্বাধীন হলো’।
বাংলাদেশ আজ স্বাধীন হলো, স্বাধীন হলো।
আলী এরশাদ
ষোলই ডিসেম্বর
রেসকোর্স ময়দানে অবনত মস্তকে সেদিন
লেজ গুটিয়ে দাঁড়িয়েছিল নরপশুদের দল।
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলজুড়ে উলাস;
বিজয় বিজয় ধ্বনি-প্রতিধ্বনি
আকাশ বাতাস প্রকম্পিত।
পৌষের প্রচণ্ড শীতে চারিদিকে অগ্নিগিরির উত্তাপ
বহু সাধনার ধন অবশেষে হাতের মুঠোয়।
প্রিয়জন হারানোর দুঃখ ভুলে
ষোলই ডিসেম্বর;
একসাথে হেসে উঠেছিল
সাতকোটি বাঙালির ক্ষত-বিক্ষত অন্তর।
বায়ান্নর পর
গোটাদেশ একই সুখে একবারই
ভেসেছিল আনন্দ বন্যায়।
আহা! কী আনন্দ, আহা! কী আনন্দ
হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর
চারিদিকে খুশির খবর।
হেসেছে সেদিন প্রজাপতি, ফুল, সবুজ কোমল ঘাস
পাখির নরম কণ্ঠে ছিলো বিজয়ের গান।
সেইদিন ঘুরে আসে বছর বছর
মাথা উঁচু করে সমস্বরে বলি-
আমাদের গর্ব তুমি ষোলই ডিসেম্বর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।