পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জানুয়ারির শেষ দিকেই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের কথা বলছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই নির্বাচনে মেয়রের পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডেই কাউন্সিলর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলেও ওয়ার্ডগুলোতে থাকে ভিন্ন ভিন্ন প্রতীক। তবে মুক্ত থাকে না রাজনৈতিক প্রভাব। মেয়রের মতো কাউন্সিলর প্রার্থীরাও চেয়ে থাকেন দলীয় মনোনয়নের দিকে।
ঘোষণা আসার সাথে সাথেই রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চলছে নির্বাচনী আলোচনা। কে হচ্ছেন মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থী? পাড়ায়, মহল্লার চায়ের দোকানে এখন এই আলোচনা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৩ নং ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা ইতোমধ্যে জোর প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী পোস্টারিংয়ের মাধ্যমে প্রার্থীরা যার যার উন্নয়ন পরিকল্পনা এলাকাবাসীর সামনে তুলে ধরছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা প্রকাশ্যে প্রচারণা চালালেও এখনো নিশ্চুপ বিএনপি। আর স্থানীয় ঢাকা-৪ আসনের এমপি আবু হোসেন বাবলা জাতীয় পার্টির হলেও দলটির কোন কাউন্সিলর প্রার্থী দেখা যায়নি। রাজধানীর কদমতলী থানার আওতাধীন এ ওয়ার্ডটি মূলত রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র। পূর্ব জুরাইন এলাকা নিয়ে এ ওয়ার্ডের অবস্থান। এ ওয়ার্ডে থানা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বেশিরভাগ হেভিওয়েট নেতার বাড়ি। এছাড়া ঢাকার অনেক নেতার বসবাস এই ওয়ার্ডে। তাই এ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর কে হবেন তা নিয়ে সবারই আগ্রহ বেশি।
ওয়ার্ডের ভোটার সংখ্যা ৪৩ হাজার। এখানে ভোটারদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়ের অবস্থান শক্ত। ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, এখানে সিএনজি, অটো রিকশা ও রিকশার ভাড়া তুলনামূলক অনেক বেশি। স্থানীয় চাঁদাবাজি এর মূল কারণ বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এছাড়া ওয়ার্ডের রাস্তাঘাট সরু, নিচু এলাকা হওয়ায় রাস্তায় পানি জমে, ড্রেনেজেরও সমস্যাও রয়েছে। তবে মূল সড়কসহ বেশিরভাগ শাখা সড়ক পাকা, সড়কে বাতি রয়েছে, তিতাস গ্যাসের লিকেজের সমস্যাও এখন নেই। কাউন্সিলর প্রার্থীরা সরু সড়ক বড় করা, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পরিবহনের চাঁদাবাজি বন্ধ করা, ভাড়া কমানোর ওয়াদা করছেন।
৫৩ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরা হলেন, বর্তমান কাউন্সিলর ও কমদতলী থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নূর হোসেন, ৫৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী সোহরাব হোসেন, ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহব্বত হোসেন, ওয়ার্ডের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাহিতুল ইসলাম সাগর। অন্যদিকে এ ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থীরা হলেন, ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলমগীর খান, আবু নাসের, তরিকুল ইসলাম পলাশ।
আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জানান, যিনি দলের মনোনয়ন পাবেন সবাই তার পক্ষে কাজ করবেন। বিদ্রোহী হতে চান না কেউ। এছাড়া এই এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এপিএস ড. আওলাদ হোসেন ও সাবেক এমপি সানজিদা খানমের রাজনৈতিক বিভাজন রয়েছে যা প্রার্থী মনোনয়নে ভূমিকা রাখবে।
বর্তমান কাউন্সিলর মুক্তিযোদ্ধা হাজী নূর হোসেন ৫৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং গত নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তিনি ইনকিলাবকে বলেন, এলাকার বেশিরভাগ রাস্তা এখন পাকা, ড্রেনেজ ব্যবস্থারও অনেক উন্নয়ন হয়েছে। অনেক গুলো রাস্তার ড্রেনেজসহ উন্নয়ন কাজ চলছে। তিতাস গ্যাসের পাইপ লিক ছিল তা উদ্যোগ নিয়ে মেরামত করেছেন। রিকশা, অটো রিকশা ও সিএনজি ভাড়া এখন প্রায় অর্ধেক কমেছে। নূর হোসেন বলেন, ওয়ার্ডটি পাঁচ বছর আগের চেয়ে এখন অনেক সুন্দর। প্রায় ৭০ শতাংশ সমস্যার সমাধান হয়েছে। বিভিন্ন সার্টিফিকেট যেমন চারিত্রিক, ওয়ারিশান, মৃত্যুসনদ সহজ করে দিয়েছি। তবে একটা সমস্যা আছে তা হল রাস্তা সরু। আগামীতে দল মনোনয়ন দিলে এবং জনগণ ভোট দিলে এলাকার সবার সাথে পরামর্শ করে রাস্তা বড় করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
৫৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহরাব হোসেন নব্বইয়ের গণআন্দোলনে ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ইনকিলাবকে বলেন, আমরা রাজনীতি করি। দলের মনোনয়ন পেলে নির্বাচন করবো। তিনি বলেন, দলের নেতাকর্মীদের থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি মহল্লার জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে আমার। নির্বাচনে জয়ী হলে এলাকার ড্রেনেজ উন্নয়ন, কমিউনিটি সেন্টার, মাতৃসদন, ভালো মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করার উদ্যোগ নিব।
আরেক প্রার্থী ৫৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহব্বত হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, দীর্ঘদিন এ এলাকায় ব্যবসা করি। এখানে বেশিরভাগ মানুষ বাইরে থেকে এসে বাড়ি করেছেন। তাদের বেশিরভাগের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে ব্যবসায়িক সূত্রে। দল যদি মনোনয়ন দেয় তাহলে জনগণের ভোটে জয়ী হব বলে আশা করি। তিনি বলেন, ড্রেনেজ, পরিবহনের ভাড়া কমানো, চাঁদাবাজি বন্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করবো।
৫৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাহিতুল ইসলাম সাগর শিক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে বেশ পরিচিত। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাগর ইনকিলাবকে বলেন, এলাকার শিক্ষিত জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন তিনি। এলাকার প্রবীনদের পাশাপাশি তরুণ সমাজকে সঙ্গে নিয়ে এলাকার সমস্যাগুলো সমাধান করবেন এবং রাজধানীর ভালো মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবেন। দলের মনোনয়নের ব্যাপারে আশাবাদি তিনি।
বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আলমগীর খান। তিনি কদমতলী-শ্যামপুর থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বলেন, গতবারও আমি কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলাম। দল মীর হোসেন মিরুকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দিয়েছিলো এবং আমরা সকলে তার সাথে কাজ করেছি। এবার এখনো দল নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি, দল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে আমি প্রার্থী হতে চাই। আলমগীর বলেন, আমার বিশ্বাস দল আমাকে মনোনয়ন দিলে এই ওয়ার্ডে বিজয়ী হতে পারবো।
নির্বাচনী এলাকার মানুষের মনোভাব তুলে ধরে তিনি বলেন, এখানে বিএনপির এবং আমার ব্যক্তিগত ইমেজের কারণে ভালো অবস্থান রয়েছে। এছাড়া সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজীর কারণে সাধারণ মানুষ অতিষ্ট। তারা সুযোগ পেলে ভোট বিপ্লব ঘটিয়ে তাদের বিরুদ্ধে রায় দেবে। এছাড়া বর্তমানে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সমস্যার কারণেও এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।