পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আগামী বছরের জানুয়ারির শেষ দিকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চলতি মাসেই তফসিল ঘোষণা করার কথা জানিয়েছেন ইসি সচিব মোঃ আলমগীর। নির্বাচনের মাঠে প্রধান দুই প্রতিদ্ব›দ্বী আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরাও নিচ্ছেন সেই নির্বাচনের প্রস্তুতি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পুরনো প্রার্থীদের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকলেও দক্ষিণে আসতে পারে পরিবর্তন।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট ডাকাতির অভিযোগ এনে পরবর্তী স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো বর্জন করেছিল বিএনপি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বগুড়া, রংপুর ও চট্টগ্রামের উপনির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভোটের মাঠে ফের মুখোমুখী হয়েছে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি। তাই জাতীয় নির্বাচনের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে নৌকা ও ধানের শীষের লড়াই দেখার অপেক্ষায় দেশবাসী।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ইসি দুই সিটির নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘোষণার পর থেকেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। যারা প্রার্থী হতে আগ্রহী তারাও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে। কারা হবেন দলের মেয়র প্রার্থী? এ নিয়ে বৃহৎ দুই দলের প্রার্থীদের মধ্যে তাই চলছে উত্তেজনা। উত্তর সিটিতে বিএনপির প্রার্থী প্রায় চূড়ান্ত হলেও দক্ষিণে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিন হেভিওয়েট নেতা। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কে পাবেন তা নিয়ে দল ও প্রার্থীদের মধ্যে দুশ্চিন্তা-সংশয় রয়েছে। কারণ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া এ বিষয়ে তেমন কেউই কিছু জানেন না। প্রধানমন্ত্রী নিজে যাচাই-বাছাই করে যাদের মনোনয়ন দেবেন তারাই চূড়ান্ত।
আওয়ামী লীগ: আওয়ামী লীগে বিগত সময়ে মেয়র প্রার্থীরা অগ্রিম প্রচারণা চালালেও এবার তেমন একটা প্রচারণা নেই কারোই। বিগত সময়ে কয়েকটি সিটি নির্বাচনে দলের মনোনয়ন দেয়ার আগে প্রার্থীদের গ্রিন সিগনাল দেয়ার পর তারা মাঠে নেমেছিলেন। এবার এই প্রভাব পড়েছে মাঠে। প্রধানমন্ত্রীর গ্রিন সিগনাল ছাড়া কেউ মাঠ পর্যায়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন না। তবে মাঠ পর্যায়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র সাঈদ খোকন এবার মনোনয়ন পাবেন না বলে গুঞ্জন রয়েছে। তাকে নিয়ে সর্ব মহলে বেশ সমালোচনাও রয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, সাঈদ খোকনকে প্রধানমন্ত্রী খুবই স্নেহ করেন, তাই সাঈদ খোকনই দলের মনোনয়ন পাবেন। এই দুই ধরণের তথ্যের মধ্যেই এই সিটিতে কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়নের জন্য চেষ্টা করছেন কিন্তু প্রকাশ্যে কেউ তেমন কিছু বলছেন না। আর উত্তর সিটিতে বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলামের পরিবর্তন হবার সম্ভাবনা কম, তবে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা দলীয় মনোনয়ন কিনবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে চলমান দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের কারণে বর্তমান মেয়র প্রার্থীরা মনোনয়ন না পাওয়ার ভয়ে রয়েছেন। মেয়রদের অনেক গোপন তথ্যই প্রধানমন্ত্রী জানেন, কোন কারণে কার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তা শুধু প্রধানমন্ত্রী নিজেই জানেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন, ঢাকা-১০ আসনের এমপি ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-৯ আসনের এমপি সাবের হোসেন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। ব্যারিস্টার তাপস মেয়র পদে আগ্রহী নন বলে জানা গেছে তবে প্রধানমন্ত্রী যদি তাকে মনোনয়ন দেন তাহলে তিনি নির্দেশ পালন করবেন। এছাড়া সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনও প্রকাশ্যে মেয়র প্রার্থীতার বিষয়ে জানান দেননি।
এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটিতে এ বছরের মার্চে পুন:নির্বাচনে আতিকুল ইসলাম মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন। দায়িত্ব পালনের এক বছরও পার হয়নি এখনও। সল্প সময়ে তাকে নিয়ে কোন ধরণের সমালোচনারও তৈরী হয়নি। তাই আওয়ামী লীগ আবারও তাকে মনোনয়ন দেবার সম্ভাবনা বেশি। এ সিটিতে আরো আলোচনায় রয়েছেন-সাবেক এমপি এইচবিএম ইকবাল, প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হক, ব্যবসায়ী আদম তমিজি হক।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলী ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, এখনো ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন নিয়ে দলে কোনো আলোচনা হয়নি। তফশিল ঘোষণার পর আমরা মেয়র পদে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে আওয়ামী লীগের ফরম বিতরণ করব। যারা নির্বাচন করতে ইচ্ছুক তারা আবেদন করবেন। সেখান থেকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ড দুই মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করবে।
বিএনপি: ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো সুস্পষ্টভাবে কিছু না জানালেও সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে দলটিতে। আগ্রহী প্রার্থীদের নির্বাচনের মাঠে কাজ করার জন্য নির্দেশনাও রয়েছে দলের পক্ষ থেকে। দুই সিটির মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী নির্বাচনে অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বিএনপি। প্রার্থীও প্রায় চ‚ড়ান্ত। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে ও দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালকেই এখন পর্যন্ত একক প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তাকে নিয়ে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সকল পর্যায়ের নেতারা একাট্টা। দলও তাকে মনোনয়ন দেবে বলে মনে করেন তারা। এজন্য দলের মনোনীত প্রার্থীর সাথে কাজ করার বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা। ২০১৫ সালে ২৮ এপ্রিল ডিএনসিসি নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাকে দলের মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেন। সেই থেকে তিনিই এখনো পর্যন্ত ডিএনসিসির বিএনপির একক প্রার্থী। ওই নির্বাচনে দুপুর ১২টার দিকে দলের সিদ্ধান্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও অল্প সময়ের মধ্যেই তিন লাখেরও বেশি ভোট পান তাবিথ। সে সময় তার বিপরীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন আনিসুল হক।
ঢাকা উত্তরে প্রার্থী মনোনয়নে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে জটিলতায় পড়তে হবে বিএনপিকে। এই সিটিতে বিএনপির তিনজন হেভিওয়েট প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা হলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের স্ত্রী ও মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস এবং অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ মেয়র মরহুম সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
তবে এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন ইশরাক হোসেন। ইতোমধ্যে তরুণ এই নেতা ঢাকা সিটি করপোরেশন দক্ষিণের প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়িয়েছেন। এই এলাকার বিভিন্ন সঙ্কট, সমস্যা এবং উৎসবে স্থানীয় মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। সভা, সেমিনার কিংবা উঠোন আলোচনায় আধুনিক নগর পরিকল্পনাও তুলে ধরছেন স্থানীয়দের মাঝে। এছাড়াও সাবেক মেয়র মরহুম সাদেক হোসেন খোকার আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তাও এগিয়ে রাখছে ইশরাককে। তাই বিএনপির প্রার্থী হিসেবে তাকেই এগিয়ে রাখছেন দলটির দক্ষিণের নেতাকর্মীরা। দলের পক্ষ থেকে দক্ষিণে মেয়র নির্বাচনের জন্য তিনি সবুজ সংকেতও পেয়েছেন বলে আলোচনা রয়েছে।
অন্যদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলও রয়েছেন আলোচনায়। দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব এবং বর্তমানে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করার কারণে এই এলাকার নেতাকর্মীদের মাঝে নিজেকে জনপ্রিয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন সোহেল। এছাড়াও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন (শাহবাগ-রমনা-মতিঝিল) থেকে নির্বাচন করার কারণে আগে থেকেই এই এলাকার ভোটারদের সাথে তার যোগাযোগও রয়েছে। তাই মেয়র পদে তার প্রার্থীতা পাওয়ার সম্ভাবনাও কম নয়। আফরোজা আব্বাস সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনে ঢাকার একটি আসন থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। একারণে সম্ভাবনা থাকা সত্তে¡ তাকে দলের হাইকমান্ড প্রার্থী নাও করতে পারেন। তাদের ঘনিষ্ঠসূত্র জানায়, দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন। দল যাকে মনোনয়ন দেবে তাদের পক্ষে কাজ করবেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা কোনো নির্বাচন আর বর্জন করতে চাই না। আপনারা ইতোমধ্যে দেখেছেন আমরা বেশ কয়েকটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। ভবিষ্যতেও আমরা সিটি করপোরেশনসহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে চাই। কিন্তু সরকার যদি তার অবস্থান থেকে সরে না আসে তখন পরিস্থিতি বুঝে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।এই মুর্হূতে আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। সময় আসলে আপনাদেরকে জানানো হবে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।