Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সরকারের অনেক বড় বড় সিদ্ধান্ত নেয় অন্য ধর্মের লোক

সচিবালয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয় না জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, আমাদের সরকারের অনেক বড় বড় সিদ্ধান্ত নেয় অন্য ধর্মের (হিন্দু ধর্মাবলম্বী) লোক। আমরা তাদের বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে একই দৃষ্টিতে দেখি। কে কোন ধর্মের সেটা আমরা বিচার করি না।

গতকাল সচিবালয়ে ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ধর্মনিরপেক্ষার পদস্খলন হলে ভারত দুর্বল হয়ে যাবে। ভারত ঐতিহাসিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। সেখান থেকে পদস্খলন হলে দেশটিকে ঐতিহাসিক অবস্থান দুর্বল করবে। এ সময় তিনি বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার আহŸান জানান।

মার্কিন দূতকে উদ্বৃত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেছেন যে, তারা মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। ভারতে ধর্মভিত্তিক যে নাগরিকত্ব বিল স¤প্রতি পাস হয়েছে এ সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত বলেন, ভারত এই বিল অনুমোদন করে নিজের অবস্থানকে দুর্বল করছে।

ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বক্তব্যে ‘প্রতিবেশী বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন না থামার কারণে ভারত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি এনেছেন’- মর্মে যে কথাটি এসেছে সেই প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি এই কথাটি সত্য নয়। আমাদের দেশে সংখ্যালঘু ও ধর্মীয় নির্যাতন হয় না। আমাদের দেশে ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। এখানে অন্য ধর্মের কেউ নির্যাতিত হয় না। এখানে সব ধর্মের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে।

বর্তমান সরকারের অনেক বড় বড় সিদ্ধান্ত নেয় অন্য ধর্মের লোক জানিয়ে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা সব ধর্মের মানুষকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে একই দৃষ্টিতে দেখি। কে কোন ধর্মের সেটা আমরা বিচার করি না। বিচার করি যে, সে বাংলাদেশের নাগরিক কিনা বা তার যোগ্যতার মাপকাঠি। আমাদের সবধরনের চাকরি-বাকরিতে সব ধর্মের লোক রয়েছে। তাদের আমরা অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে দেখি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হচ্ছে বলে যারা ভারতকে বুঝিয়েছে বা তথ্য দিয়েছে তারাও সত্য বলেননি। আমি আশা করবো, বাংলাদেশে যারা সংখ্যালঘু নেতৃত্বে রয়েছে তারাই এ বিষয়ে কথা বলবেন। স্টেটম্যান্ট দিবেন। তিনি আরো বলেন, ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। দুই দেশের মধ্যে এখন অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক চলছে; যা সোনালী অধ্যায় নামে পরিচিত। বাংলাদেশের মানুষ আশা করে, ভারত এমন কিছু করবে না যা আমাদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার আহŸান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রক্রিয়া অনেক জটিল, যা খুবই দুঃখজনক। আমাদের দেশের যারা যুক্তরাষ্ট্রে বেড়াতে চান, তারা ওখানে গিয়ে থাকতে চান না। আমরা তো কোন ঝামেলা করি না। সুতরাং আমাদের জন্য ভিসা সহজ করা হোক। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত একজন খুনি পালিয়ে আছেন। আমি আজও রাষ্ট্রদূতের কাছে তাকে ফিরিয়ে দেয়ার কথা তুলেছি। তিনি বলেছেন মার্কিন বিচার ব্যবস্থা প্রশাসন এই বিষয়টি দেখছে।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার গণমাধ্যমকর্মীদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রিজারি বিভাগ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বিশ্বজুড়ে ১৮ জন বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। যার মধ্যে রাখাইনের গণহত্যার দায়ে মিয়ানমারের চার সেনা কর্মকর্তাকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশটির রাখাইন, সান, কাচিনসহ একাধিক রাজ্যের জাতিগত সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের ওপর চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, যা অপরাধ। এজন্য যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের চার সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। এই কর্মকর্তারা এখন থেকে আর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্রে এদের নামে কোনো সম্পদ থাকলে তা বাজেয়াপ্ত হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নাগরিক এদের সঙ্গে কোনো আর্থিক লেনদেন বা বাণিজ্য করতে পারবে না। ##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ