Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলোয়াড়দের মাসল ইনজুরি ও করণীয়

প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সঁংপষব-ভরনৎব ঞুঢ়বং : প্রতিটি মানব দেহে দুই প্রকার মাসল ফাইবার বৃদ্ধমান রয়েছে। প্রথমটি হলো : ঋধংঃ ঞরিঃপয ঋরনৎবং , দ্বিতীয়টি হলো : ঝষড়ি ঞরিঃপয ঋরনৎবং

খেলোয়াড়দের ঋধংঃ ঞরিঃপয ঋরনৎবং টি হলো তার দেহের রেসিং কার এর মতো। যা তাকে গতি বৃদ্ধি করে তাকে সর্বোশেষ প্রান্তে নিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। আর ঝষড়ি ঞরিঃপয ঋরনৎবং মাসলটি হলো নির্জীব। যার মধ্যে নেই কোন ক্ষীপ্ততা, নমনীয়তা ও গতি থাকে না। এই মাসলের অধিকারীরা কখনও ভালো স্পোর্টস ম্যান হতে পারে না। তবে ইদানিং স্পোর্টস ক্রীড়া বিজ্ঞানী/ কিংসোলোজিস্টদের মতে অপ্রাপ্ত বয়সী (১৪ বছরের নিচে) বালক-বালিকাদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক উপারে পরীক্ষান্তে প্রমাণীত হয়েছে যে, পরিপূর্ণ বিজ্ঞান সম্মত ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে ংষড়ি ঞরিঃপয ঋরনৎবং মাসলকে ঋধংঃ ঞরিঃপয ঋরনৎবং মাসলে এ পরিণত করা সম্ভব।

খেলোয়াড়দের যে সব কারণে মাসল পুল করে
মাসল হলো মানব দেহে গাড়ির ইঞ্জিনের মত। ওভার লোড, স্ট্রেচিং, লেস ওয়ার্মিং আপ, অমনোযোগী, প্রোপার রেস্ট ও হঁঃৎরঃরড়হ, গ্লাইকোজিন এর অভাবে খেলোয়াড়রা মাসল পুলের স্বীকার হয়ে থাকেন।
এছাড়া, ংসড়ঃয ংঁৎভধপবং মাসল ইনজুরির অন্যতম কারণ।
তাছাড়া, নার্ভাস সিস্টেম সমস্ত শরীরের সাথে সম্বনয় সাধন করে থাকে। মাসলের ভুমিকা মানব দেহে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্রেন থেকে সংকেত মাসলে আসে এবং পরবর্তীকালে তা তাৎক্ষণিক ব্রেনে ফিরে যায়।
আমরা প্রতিদিন যে সমস্ত খাবার খাই তা ক্যামিকেলের মত শরীরের অঙ্গ-প্রতঙ্গ ও মাসলে ছড়িয়ে পরে। খেলা বা অনুশীলনের সময় খেলোয়াড়রা যে মাসল ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তা খাবারের মাধ্যমে আবারও আঘাত প্রাপ্ত মাসল গুলিকে সতেজ করে তোলে। তখন খেলোয়াড়দের প্রয়োজন হয় অতিরিক্ত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার।
প্রতিটি খেলোয়াড়ই শরীরের অতিব গুরুত্বপূর্ণ মাসল হলো হ্যামস্ট্রিং, কাপ ও থাই মাসল। আমাদের দেশে প্রায় খেলোয়াড়রা এই তিনটি মাসল ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।

মাসল পুল হলে করণীয়
১. খেলা বা অনুশীলনের সময় মাসল পুল করলে প্রাথমিক অবস্থায় আক্রান্ত স্থানে রবফ দিতে হবে।
২. কোচ/ ফিজিও এর পরামর্শ অনুযায়ী খেলা বা অনুশীলন থেকে বিরত থাকতে।

এরপর কোচ বা ফিজিও এর পরামর্শ অনুযায়ী পর্যায় ক্রমে যা করা প্রয়োজন
১. ১০-১৫মিনিট ধীরে ধীরে ঘাসের উপর ওয়ার্মিং আপ করতে হবে (ফ্লাট ফুটে)।
২. এছাড়া, সাইক্লিং, সাঁতার, ওয়াল বার, জিমে লেগ প্রেস (লাইট/উই দ্য উট ওয়েট), স্ট্রেচিং এবং হাল্কা পার্টনার এক্সারসাইস করা যেতে পারে।
৩. তাছাড়া, ঠান্ডা ও গরম পানি টাওয়াল ভিজিতে/বদনার নল দিয়ে ব্যাথা স্থানে ২-৩ মিনিট পর্যন্ত পানি দেয়া যেতে পারে।
৪. ব্যাথা স্থানে কোন ক্রীম দিয়ে ম্যাসাস না করাই ভালো।
৫. পরবর্তী সময়ে স্পোর্টস মেডিসিন ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করা যেতে পারে।

স্পোর্টস ইনজুরি হওয়ার কারণ ও করণীয়
খেলাধুুলার সাথে ইনজুরি একে বারে অতপোত ভাবে জড়িত। খেলতে গেলে ইনজুরির স্বীকার হতেই হয় খেলোয়াড়দের। কিন্তু কেন বার বার খেলোয়াড়রা ইনজুরির স্বীকার হয়ে থাকেন? ইনজুরির আক্রান্ত হওয়ার কারণ গুলো এক কথায় বলা যাবে না। তবে মুলত দুটি কারণের জন্য খেলোয়াড়রা ইনজুরির স্বীকার হয়ে থাকেন।
অতিরিক্ত পরিশ্রম : অনেক সময় কোচরা অনুশীলনের সময় জেনে বা না জেনে দূত ফলাফলের প্রত্যাশায় খেলোয়াড়দের উপর পরিশ্রমের মাত্রা বাড়িয়ে দেন। যার ফলে খেলোয়াড়দের মাংস পেশী, টিস্যু ফাইবার বন এগুলো স্বাভাবিক কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। যার ফলে খেলোয়াড়রা বিভিন্ন ধরনের ইনজুরির স্বাীকার হয়ে থাকে।

আঘাতজনিত কারণ : আমরা প্রায় লক্ষ্য করি যে, বিভিন্ন ইভেন্টের খেলোয়াড়দের মধ্যে যেমন- ফুটবল, হকি, জুডো, কুস্তি, কাবাডি, কারাতে অর্থ্যাৎ যে খেলাগুলোতে একে অপরের সাথে সরাসরি বডি কন্ট্রাক হয়ে থাকে যে সমস্ত খেলা গুলোতে খেলোয়াড়রা আঘাতজনিত কারণে ইনজুরির স্বীকার হয়ে থাকে।
এছাড়া, শতভাগ শারীরিক ফিটনেস, শরীরের টোটাল সম্বনয় সাধন ও বায়ো মটর এবিলিটির জন্য খেলোয়াড়রা অনেক সময় ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় যে, অসমতল মাঠ, ইনডোরে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা না থাকা এবং উডেন ফ্লোর স্মুথনেস না থাকার কারণে বিশেষ করে ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস ও ভলিবল ইভেন্ট সমুহের খেলোয়াড়রা বেশির ভাগ সময়ে হাটুর ইনজুরি, অ্যাঙ্কেল ইনজুরি, স্পাইনাল কট ইনজুরি ও কাপ মাসল ইনজুরিতে আক্রান্ত হন।
মনে রাখতে হবে একক ইভেন্টের ক্ষেত্রে খেলোয়াড়রা ঐধসংঃৎরহম, ঞরনরধষরং-ধহঃবৎরড়ৎ (সিনবন), চবৎড়হবঁং ষড়হমঁং (কাপ মাসল), কহবব (হাঁটু), অহশষব, গবঃধঃধৎংধষং ইত্যাদি ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।

উপরোক্ত ইনজুরিতে আক্রান্ত হলে যা করণীয়
১. খেলার মাঠে গরষফ রহলঁৎু যেমন- ফুলে গেলে, ভিতরে ও বাইরে আঘাত পেলে সেই খেলোয়াড়কে তাৎক্ষণিক ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে বরফ দিতে হতে ইনজুরি স্থানে। ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত বরফ চিকিৎসা দেয়া যেতে পারে।
২. মনে রাখতে হবে অনুশীলন ও খেলা চলাকালীন সময়ে খেলোয়াড়দের তাৎক্ষণিক চিকিৎসার
জন্য মাঠে ডাক্তার, অ্যাম্বুলেন্স, স্ট্রেচার, বরফ ও ফাস্ট এইড বক্স ইত্যাদি থাকা বাঞ্চণীয়।
৩. ইনজুরির ধরণ ও মাত্রা অনুযায়ী চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তাৎক্ষণিক ভাবে অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সরনাপন্ন হতে হবে।
৪. এছাড়া, খেলার মাঠ হতে হবে সমতল ও খেলার উপযোগী, খেলার আগে দরকার ঠিকমত ওয়ার্ম আপ করা, অনুশীলন ও খেলার সময় পুরোপুরি মনেযোগী থাকতে হবে।
৫. রাত জাগার কারণেও খেলোয়াড়রা ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে খেলোয়াড়রা অনুশীলন বা খেলার পর কোচের নির্দেশনা না মেনে মোবাইল, ট্যাব ও ল্যাপ্টপে অধিক সময় পার করে থাকেন। ঠিকমত রেস্ট না করার শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো ইনএ্যাকটিভ থাকে। ফলে খেলোয়াড়রা ইনজুরিতে পরছেন বেশি। তাই ইনজরি মুক্ত থাকার জন্য রেস্ট অবশ্যই প্রয়োজন।
৬. অনেক খেলোয়াড় ধুমপান ও মদ্য পান করেন। এটিও ইনজুরির একটি কারণ। তাই খেলোয়াড়দের ইনজুরি মুক্ত থাকতে হলে ধুমপান, মদ্যপান ও মাদক সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে।

লেখক
মোহাম্মদ ইয়াহিয়া
প্রশাসক বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম ও
সাবেক জাতীয় অ্যাটলেটিক্স কোচ



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খেলোয়াড়দের মাসল ইনজুরি ও করণীয়
আরও পড়ুন