Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাবনায় চলছে বাউত উৎসব, বিল-বাদারে মাছ কম পাওয়া যাচ্ছে

পাবনা থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৫:২০ পিএম

পাবনার বিল-বাওড়,হাওড়-জলাশয়ে পানি কমার সাথে শুরু হয়েছে মাছ ধরার উৎসব । আঞ্চলিক ভাষায় এটিকে বলা হয় ‘বাউত উৎসব ।’ এই উৎসব চলবে এক সপ্তাহকাল। জেলার ভাঙ্গুড়ার রুহুল বিল, চলনবিল, চাটমোহরের চলনবিল, ফরিদপুর বিল, সুজানগরে গাজনার বিলে মাছ ধরার এই উৎসব শুরু হয়েছে। প্রতিদিন শতশত লোক জোড় হয়ে নেমে পড়ছেন বিলে। এদের সাথে রয়েছে মাছ ধরার নানা উপকরণ । এর মধ্যে পলো, ঠেলা জাল, বাদাই জাল, ঘেরজাল, বিলের কাঁদায় মুখ গুঁজে থাকা বাইম মাছ ধরতে আনা হয়েছে , লাঠির আগায় বর্শির মতো হুক লাগানো বাইম ধরার যন্ত্র। বিল-বাওড়ে মাছ কমে গেলেও , যা পাওয়া যাচ্ছে তাও কম নয় । ঠেলা জালে পুঁটি, টাকি, তেলাপিয়া, তিন কাঁটা মাছ , পলো দিয়ে ধরা হচ্ছে শৈল মাছ, গজার মাছ। জিয়াল মাছের কাঁটার আঘাত সহ্য করে কেউ কেউ জিয়াল মাছ পলো দিয়ে ধরছেন । মাছ ধরার সময় বিল-বাদারে গর্ত পাওয়া গেলে বর্শির হুক লাগানো যন্ত্র দিয়ে তুলে আনা হচ্ছে বাইম মাছ। এক দলের মাছ ধরা শেষ হলে অন্য দল নামছেন বিল-বাদারে।

এই দৃশ্য দেখতে বিল পাড়ে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা জড়ো হয়ে মাছ ধরা উপভোগ করছেন। গ্রাম বাংলার এই সময়ের এক অপূর্ব চিত্র । এই মাছ ধরার উৎসব গ্রাম-গঞ্জে নতুন নয়। কবে থেকে বাউত উৎসব শুরু হয়েছে তা বলা কঠিন হলেও সৌখিন মাছ শিকারীদের মাছ ধরার দৃষ্টি নন্দন দৃশ্য অনেক পুরনো দিনের বলে জানালেন, জয়নাল আলী (৭৫)। তিনি কিশোর বয়সে তাঁর পিতার সাথে বিল পাড়ে মাছ ধরার এই দৃশ্য দেখতে আসতেন। এবারও এসেছেন, ভাঙ্গুড়ার বিলে। ভাঙ্গুড়া ব্যবসায়ী যুবক ওবাইদুল জানান, তিনিও শিশু কালে পিতা ইঞ্জি: আমিনুল ইসলামের সাথে এই দৃশ্য দেখতেন, এবার নিজেই নেমেছেন মাছ ধরা উৎসবে সবার সাথে। তার মতে, ‘আগে যতো মাছ পাওয়া যেতো ভাঙ্গুড়ার বিলে এখন আর তেমন মাছ পাওয়া যায় না। নদী-বিল থেকে মনে হয় মাছ হারিয়ে যাচ্ছে।’

পাবনা জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের সিনিয়র পরিচালক মো: আয়নাল হকের সাথে আজ বুধবার বিলে মাছ কমে যাওয়ার বিষয়ে মোবাইলে জানতে চাইলে বলেন, সৌখিন মাছ শিকারীগণ মাছ কম পাচ্ছেন। এ থেকে বোঝা যায় মাছ কমেছে। তিনি বলেন, মাছের উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে । দেশী অন্যান্য মাছের ডিম ছাড়ার সময় জেলেরা মাছ ধরেন । মা মাছ কমে যাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ডিম ছাড়ার মওসুমে অন্যান্য মাছ বিল-হাওড় থেকে যদি জেলেরা না ধরেন তাহলে উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাউত উৎসব
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ