Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আগামী সপ্তাহে উঠতে পারে নাগরিকত্ব সংশোধন বিল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির উপদেষ্টা অখিল গগৈআগামী সপ্তাহে ভারতের পার্লামেন্টে উঠতে পারে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বা সিটিজেন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল (সিএবি)। বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে ভারতে আশ্রয় নেয়া ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে এ প্রক্রিয়া জোরগতিতে এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। এমন সংখ্যালঘুর মধ্যে রয়েছেন হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি ও খ্রিস্টানরা। এ বিষয়ে সচেতন ভারত সরকারের এমন সিনিয়র কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন হিন্দুস্তান টাইমস। এতে সংশোধিত ওই বিলকে বিতর্কিত বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছে বিভিন্ন স্থানে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভারতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, এ বিষয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উত্তর-প‚র্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে, সামাজিক ও সাংস্কৃতি সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে, ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছেন। নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের বিষয়ে শুক্রবার থেকে এই বৈঠক শুরু হওয়ার কথা। বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সংখ্যালঘু, যারা ভারতে গিয়েছেন তাদেরকে নাগরিকত্ব দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। ২০১৪ সালে প্রথমে তারা এ বিষয়ে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দেয়। সর্বশেষ এবার ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় আরো একবার এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি। কিন্তু সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল বা সিএবি’র ব্যাপক বিরোধিতা রয়েছে ভারতে। বিশেষ করে ভারতের উত্তর-প‚র্বাঞ্চলে এই বিরোধিতা বেশি। সংশোধিত এই বিল নিয়ে আসামে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। আসামের লোকজন মনে করছে এই বিল ১৯৮৫ সালে সম্পাদিত আসাম চুক্তির লঙ্ঘন। সম্পাদিত আসাম চুক্তি অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চকে সর্বশেষ তারিখ ধরা হয়। এর আগে যেসব বাংলাদেশী ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাদেরকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়। এরপরে যারা সেখানে গিয়েছেন তাদেরকে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে গণ্য করা হয় এবং তাদেরকে ফেরত পাঠানোর কথা। সিএবি বিলের বিরুদ্ধে একই রকম বিরোধিতা হচ্ছে মিজোরামেও। সেখানে এই বিল নিয়ে উদ্বেগের কারণ হলো, সংশোধিত বিলের অধীনে বৌদ্ধ চাকমা শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেয়া হবে। এই বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে ত্রিপুরায়। এমনকি অরুণাচল প্রদেশেও এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। এই বিলের বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস, তৃণম‚ল কংগ্রেস ও সিপিআই (মার্কসিস্ট)। তারা বলছে, ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেয়াকে অনুমোদন করে না ভারতের সংবিধান। পক্ষান্তরে বিজেপি ও মিত্ররা বলছে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের মুখোমুখি হয়েছেন বলে তাদেরকে নাগরিকত্ব দেয়া উচিত। এরই প্রেক্ষিতে সামাজিক-সাংস্কৃতিক, ছাত্র ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বৈঠক হওয়ার কথা। সেখান থেকে তাদের আপত্তি ও আশঙ্কার বিষয়ে তিনি জানার চেষ্টা করবেন। এ তথ্য দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা। হিন্দুস্তান টাইমস লিখেছে, অমিত শাহ আজ শনিবার বৈঠক করছেন। এ ছাড়া আগামী ৩রা ডিসেম্বর তিনি বৈঠক করবেন মেঘালয়, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল প্রদেশে নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন, অল বোড়ো স্টুডেন্টস ইউনিয়ন এবং মেঘালয়ের ছাত্রদের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে। একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এসব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আজই শনিবার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। ভারতের পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের মাধ্যমে এই বিলটি সামনে এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে আস্থাশীল ভারত সরকার। কিন্তু দেশটির উত্তর-প‚র্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে এ বিল নিয়ে সম্ভাব্য জনবিক্ষোভের আশঙ্কা রয়েছে। এ সপ্তাহের প্রথম দিকে, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের নেতৃত্বে ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল সেক্রেটারিয়েট ওই অঞ্চলের পরিস্থিতি সম্পর্কে পর্যালোচনা করেছেন। প্রথম দফায়ই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার সিএবির পক্ষে অনুমোদন পেয়েছিল লোকসভায়। কিন্তু বিলটি রাজ্যসভায় উত্থাপন করা হয় নি। ওই সময়ে লোকসভা বিলুপ্ত হয়ে যায় নতুন নির্বাচনের জন্য। ফলে বিলটি তামাদি হয়ে যায়। এখন নতুন করে বিলটি পার্লামেন্টে তোলা প্রয়োজন। হিন্দুস্তান টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ