Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সদরঘাটে নৌ-যান শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি

কেরানীগঞ্জ(ঢাকা)উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩০ নভেম্বর, ২০১৯, ৬:০১ পিএম

বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশনরে ১১দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য দেশব্যাপী নৌ-যান শ্রমিকদের কর্মবিরতি কর্মসূচী চলাকালীন সময়ে রাজধানীর সদরঘাট টার্মিনালে যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। এসব ভোগান্তিতে পড়া যাত্রীদের বেশিভাগই এই কর্মসূচী সম্বন্ধে কিছুই জানেন না। বৃহস্পতিবার মধ্য রাত থেকে এই কর্মসূচী শুরু হয়েছে। কর্মসূচী চলাকালীন সময়ে আজ শনিবার(৩০নভেম্বর) সকালে কম দুরুত্বের যাতায়াতকারী কয়েকটি লঞ্চ ছেড়ে গেলেও দূরপাল্লার কোন লঞ্চ টার্মিনাল থেকে ছেড়েও যায়নি এবং অন্যত্র থেকে টার্মিনালে এসে পৌঁছায়নি। সরেজমিন প্রতিবেদনে গিয়ে দেখা যায় সকাল থেকেই সদরঘাট টার্মিনালে দূরপাল্লার ও স্বপাল্লার লঞ্চগুলি সারিবদ্ধভাবে ভিড়ানো রয়েছে। বেশিরভাগ লঞ্চের প্রধান ফটকটি বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। কিছু লঞ্চের প্রধান ফটক খোলা অবস্থায় রয়েছে। টার্মিনালে ভিড়ানো লঞ্চগুলিতে মালিক পক্ষের কিছু লোকজন দেখা গেলেও লঞ্চের মাষ্টার, সুকানী, লস্কর, বাবুর্চি,ড্রাইভার ও ওয়েলম্যানদের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়নি। নিত্যদিনের মতো সদরঘাটের সেই চিরচেনা চেহারাটি চোখে পড়েনি। যাত্রীদের দেখলেই লঞ্চের কর্মচারীরা তাদের নিজনিজ লঞ্চে যাত্রীদের উঠানোর জন্য পাল্লাদিয়ে ডাকাডাকি করতেন। অনেককে জোড়করে লঞ্চে উঠাতেন। কিন্তু আজ সেখানে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। উল্টো যাত্রীরা তাদের গন্তব্যে যাওয়ার জন্য লঞ্চ খুঁজতে থাকেন। অনেক যাত্রীরা তাদের সাথে থাকা বিভিন্ন মালপত্র নিজেরাই বহন করে টার্মিনালের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ঘোরাঘুরি করতে থাকেন। অনেকেই শিশু সন্তানসহ তাদের পরিবারের লোকজন নিয়ে টার্মিনালে এসেছেন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য ।

কিন্তু লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় তারা পড়েছেন চরম বিপাকে। এরকম অনেকইে টার্মিনালে সকাল থেকেই অপেক্ষা করছেন। দুপুর ৩টায় টার্মিনালে লঞ্চের জন্য অপেক্ষারত হুইল চেয়ারে বসা সুমন ফরাজী নামে এক পঙ্গু যাত্রীর সাথে আলাপ হয়। তিনি জানান রাজধানীর আদাবরে তিনি চা বিক্রি করেতেন। ব্যবসাগুটিয়ে স্ত্রী সুমি বেগমকে সাথে নিয়ে ঝালকাঠির উজিরপুরের রতনকান্দী তার নিজ বাড়িতে যাবেন। কিন্তু লঞ্চ বন্ধ থাকায় তিনি চরম বিপদে পড়েছেন। এখন তিনি কোথায় থাকবেন সেই কথাই বারবার তুলে ধরছেন।সাভার থেকে আসা মোঃ সাদ্দাম হোসেন জানান, তিনি পটুয়াখালীর বাউফল থানার কালাইয়া যাবেন। টার্মিনালে এসে লঞ্চ বন্ধ দেখে তিনিও বিপদে পড়েছেন। সাভার থেকে আসা রুহুল আমিন ও কেরানীগঞ্জ থেকে আসা মোঃ সোবাহান জানান, তারা পিরোজপুর জেলার তুষখালী যাবেন। হন্য হয়ে দুজনেই তাদের লঞ্চ খুঁজছেন। একসময় লঞ্চ পেলেও সেটি আর গন্তব্যে যাবেনা বলে তাদের জানিয়ে দেয়া হয়। বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ শাহ আলম জানান, তাদের ১১দফা দাবি মালিকপক্ষ মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তাদের এই কর্মবিরতি কমৃসচী চলবেই। বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার এ্যাসোসিয়েশনের সভাপিত মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, লঞ্চের মালিকপক্ষ তাদের কিছু লোকজন দিয়ে কিছুকিছু লঞ্চ চালানোর চেষ্টা করছে। কিন্ত সফল হচ্ছে না। তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে লঞ্চের শ্রমিকরা কর্মবিরতি দিয়ে অনেকেই লঞ্চ থেকে নেমে গিয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ সদরঘাট নদীবন্দরের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ন পরিচালক মোঃ আলমগীর কবীর জানান, সদরঘাট টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন ৮০/৮৫টি লঞ্চ বিভিন্ন নদীপথে চলাচলা করে। নৌ-যান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারনে লঞ্চ চলাচল কমে গেছে। সকালেও চাঁদপুর, নড়িয়াসহ কয়েকটি এলাকায় ১৩টি লঞ্চ টার্মিনাল থেকে ছেড়ে গেছে। তবে শীঘ্রই মালিকদের সাথে নৌ-যান শ্রমকিদের আলোচনার মাধমে এই সমস্যাটি মিটে যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ